নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে মসজিদে হামলা থেকে অল্পের জন্য বেঁচে গেছেন বাংলাদেশের ক্রিকটাররা। হামলার ঘটনায় সিরিজের শেষ টেস্ট বাতিল করতে হয়েছে। এমনি বিশেষ ব্যবস্থায় টাইগারদের দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। সামনে আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজ থাকলেও টাইগারদের এখন মূল ভাবনায় বিশ্বকাপ।
এদিকে ইংল্যান্ডে কতটা নিরাপদ বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা? দুনিয়ার অন্যতম নিরাপদ দেশ ইংল্যান্ডেও গত দুই বছরে বড় দুটি জঙ্গি হামলা হয়েছে। আর তাতে মুসলিমদের প্রতি ঘৃণা বেড়েছে, বেড়েছে হেইট ক্রাইমও।
নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে মসজিদে শ্বেতাঙ্গ জঙ্গি হামলায় ৫০ জন নিহত হওয়ার সাথে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের নামটাও জড়িয়ে গেছে। জুমার নামাজ পড়তে গিয়ে অল্পের জন্য বেঁচে গেছেন তামিম-মিরাজরা! যদিও বলা হচ্ছে, ক্রিকেটাররা হামলার লক্ষ্যবস্তু ছিল না! তবে এ ঘটনার পর বিদেশে ক্রিকেটারদের নিরাপত্তা নিয়ে নিশ্চয়ই ভাবছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড।
মে থেকে ব্রিটেনে শুরু হচ্ছে বিশ্বকাপ ক্রিকেট। দেড় মাসের এই দীর্ঘ সময়ে ঈদ ও পবিত্র রমজান। জাতীয় দলের কয়েকজন ক্রিকেটার রোজা রেখেই ম্যাচ খেলেন। আবার দলের প্রায় অধিকাংশ ক্রিকেটারই নামাজ পড়েন নিয়মিত।
ক্রাইস্টচার্চ হামলার চারদিনের মাথায় ব্রিটেনের বার্মিহামের ৫টি মসজিদে একরাতে হামলা চালানো হয়েছে! যেটিকে সন্ত্রাসী হামলা বলে আখ্যা দিয়ে তদন্ত করছে পুলিশ।
তামিম তো দেশে ফিরে জানিয়েও ছিলেন, সারা জীবনেও এটা ভুলবেন না তারা.... @BCBtigers https://t.co/scaGsIy6aZ
— Sportsmail24.com (@sportsmail24) March 18, 2019
লন্ডনে মসজিদ থেকে ফেরার পথে এক মুসল্লিকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়েছে বর্ণবাদীরা! গতবছর ইংল্যান্ডে কাউন্টি ক্রিকেট খেলতে গিয়ে হেইট ক্রাইম ও হামলার শিকার হয়েছিলেন ওপেনার তামিম ইকবাল ও তার পরিবার। কিছু শেতাঙ্গ যুবক তামিম ও তার পরিবারকে দেখে অ্যাসিড অ্যাসিড বলে তেড়ে এসেছিল! কারণ তামিমের স্ত্রী হিজাব পরিহিত ছিলেন। ভয়ে কাউন্টি মিশন শেষ না করেই দেশে ফিরেছিলেন তামিম।
ক্রাইস্টচার্চে হামলার পর ইংল্যান্ডে বিশ্বকাপের এবারের আসরে ক্রিকেটারদের, বিশেষ করে বাংলাদেশ পাকিস্তানসহ মুসলিম ক্রিকেটারদের নিরাপত্তা ইস্যুটি তাই নতুন করে ভাবনায় এসেছে। যদিও বর্ণবাদী আচরণ রুখতে জিরো টলারেন্স নীতি মেনে চলে ব্রিটেন! তবে মুদ্রার অপর পিঠের বাস্তবতাটাও বেশ ভয়ঙ্কর।
গার্ডিয়ানের অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিউজিল্যান্ডে হামলার পর মুসলিম বিরোধী হেইট ক্রাইমের অভিযোগ বেড়েছে প্রায় ৬০ শতংশ।
ম্যানচেস্টার ও লন্ডন ব্রিজে ‘ইসলামিক জঙ্গি’দের হামলার পর ব্রিটিশদের মাঝে মুসলিমদের প্রতি ঘৃণা বেড়েছে অনেক! বিশ্বকাপের আগে এসব ঘটনা কিছুটা হলেও অস্বস্তিতে রাখছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডকে। ব্রিটেনে ক্রিকেটারদের নিরাপত্তার বিষয়টি অবশ্য নিশ্চিত করেবে এখনকার পুলিশ।
নিউজিল্যান্ড হামলার পরপরই প্রশ্ন উঠেছে আইসিসির অনাগত ইভেন্টগুলোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে। বিশেষ করে সামনেই ইংল্যান্ড বিশ্বকাপ। বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতির কথা.... @ICC https://t.co/mgLAc4hFRM
— Sportsmail24.com (@sportsmail24) March 18, 2019
এটা সত্যি যে অন্য যেকোন আসরের চেয়ে এবার বিশ্বকাপে মুসলিম ক্রিকেটারদের আলাদা নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করা খুবই প্রয়োজন। নিরাপত্তার কমতির কারণে যদি কোন অপ্রীতিকর ঘটে তাহলে কলঙ্কের দাগ লাগবে ভদ্রলোকের ক্রিকেট খেলায়।
লেখক : লন্ডন প্রবাসী সাংবাদিক