ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানতেডে হেটমায়ারের সেঞ্চুরির ও কটরেলের ৫ উইকেটের সুবাদে ২৬ রানে জয় তুলে নিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এ জয়ে সিরিজে ১-১ সমতায় এলো ক্যারিবিয়রা।
প্রথম ম্যাচে ৩৬১ রানের বড় লক্ষ্য তাড়া করে জেতা ইংল্যান্ড এবার হারল খুব ভালো অবস্থানে থেকে। জয়ের জন্য শেষ ৬১ বলে প্রয়োজন ছিল ৬২ রান। ক্রিজে ছিলেন পঞ্চাশ ছোঁয়া জুটি উপহার দেওয়া দুই থিতু ব্যাটসম্যান। দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে তাদের মুঠো থেকে জয় ছিনিয়ে নিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। টানা দশ হারের পর জিতল ইংল্যান্ডের বিপক্ষে।
ব্রিজটাউনের কেনসিংটন ওভালে শুক্রবার টস হেরে ব্যাট করতে নেমে জন ক্যাম্পবেলের সঙ্গে ৬১ রানের জুটিতে ভালো শুরু এনে দেন গেইল। লিয়াম প্লানকেটকে উড়ানোর চেষ্টায় মইন আলিকে ক্যাচ দিয়ে ক্যাম্পবেলের বিদায়ে ভাঙে শুরুর জুটি।
আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান এবার শুরুতে অতটা সময় নেননি। তবে ঝড় তোলার আগেই দারুণ এক ডেলিভারিতে তাকে বোল্ড করে বিদায় করেন লেগ স্পিনার আদিল রশিদ। ৬৩ বলে চার ছক্কা ও এক চারে ৫০ রান করেন গেইল।
ভালো শুরুটা বড় করতে পারেননি শেই হোপ ও ড্যারেন ব্রাভো। বেন স্টোকসের শর্ট বলে স্কয়ার লেগে ধরা পড়েন হোপ। রশিদের সরাসরি থ্রোয়ে রান আউট হয়ে যান ব্রাভো। জেসন রয়ের সরাসরি থ্রোয়ে রান আউট হয়ে ফিরেন অধিনায়ক হোল্ডার।
এক সময়ে তিনশ রানে চোখ রাখা ওয়েস্ট ইন্ডিজ পড়ে যায় চাপে। দাপুটে ব্যাটিংয়ে দলকে কক্ষপথে ফেরান ক্যারিয়ারে চতুর্থ সেঞ্চুরি তুলে নেওয়া হেটমায়ার। বাঁহাতি বিস্ফোরক এই ব্যাটসম্যান ৮৩ বলে সাত চার ও চার ছক্কায় অপরাজিত থাকেন ১০৪ রানে।
আগের ম্যাচে সাড়ে তিনশ ছাড়ানো পুঁজি নিয়েও হেরে যাওয়া ওয়েস্ট ইন্ডিজ খেলতে নামে বোলিংয়ে শক্তি বাড়িয়ে। ব্যাটসম্যান নিকোলাস পুরানের জায়গায় একাদশে ফেরা কটরেল দেন আস্থার প্রতিদান। বাঁহাতি এই পেসার দ্রুত ফিরিয়ে দেন ইংল্যান্ডের দুই ওপেনারকে।
গোল্ডেন ডাকের স্বাদ পান জনি বেয়ারস্টো। আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান রয় বোল্ড হয়ে যান ২ রান করে। ওই ম্যাচের আরেক সেঞ্চুরিয়ান জো রুট ৩৬ রান করে থামেন ওশেন টমাসের অফ স্টাম্পের অনেক বাইরের বল তাড়া করতে গিয়ে।
স্টোকসের সঙ্গ ৯৯ রানের জুটিতে দলকে লড়াইয়ে ফেরান অধিনায়ক মর্গ্যান। আক্রমণে ফিরে বাঁহাতি এই ব্যাটস্যানকে ফিরিয়ে ইংলিশদের প্রতিরোধ ভাঙেন কটরেল। ৪১ ও ৫১ রানে জীবন পেয়ে ৮৩ বলে তিন ছক্কা ও পাঁচ চারে করেন ৭০ রান।
জস বাটলারের সঙ্গে ৭৯ রানের জুটিতে দলকে ৪ উইকেটে ২২৮ রানের দৃঢ় ভিতের ওপর দাঁড় করান স্টোকস। জয়ের জন্য শেষ ৬১ বলে ৬২ রান দরকার ছিল ইংল্যান্ডের। হাতে ৬ উইকেট নিয়েও সেই সমীকরণ মেলাতে পারেনি তারা, গুটিয়ে যায় ১৪ বল বাকি থাকতে।
স্টোকসকে কট বিহাইন্ড করে বিপজ্জনক হয়ে উঠা জুটি ভাঙেন হোল্ডার। ৮৩ বলে সাত চার ও দুই ছক্কায় ৭৯ রান করা ইংলিশ অলরাউন্ডার নষ্ট করে যান রিভিউ। সফরকারীদের পরে দিতে হয় তার মাশুল।
পরের ওভারে ফিরে পরপর দুই বলে বাটলার ও টম কারানকে ফেরান হোল্ডার। রিভিউ থাকলেই বেঁচে যেতেন এলবিডব্লিউ হওয়া কারান। বল ট্র্যাকিংয়ে দেখা যায় বল লেগ স্টাম্প মিস করতো, অনেক উপর দিয়েও যেতো।
মইনের সঙ্গে দলকে এগিয়ে নিচ্ছিলেন শূন্য রানে জীবন পাওয়া রশিদ। দুই অলরাউন্ডারকেই থামান কটরেল। ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো পাঁচ উইকেট নিয়ে দলকে নিয়ে যান জয়ের পথে। বাকিটা সহজেই সারেন কার্লোস ব্র্যাথওয়েট।
৪৬ রানে ৫ উইকেট নেন কটরেল। অধিনায়ক হোল্ডার ৩ উইকেট নেন ৫৩ রানে।
দারুণ সেঞ্চুরির জন্য ম্যাচ সেরার পুরস্কার জেতেন হেটমায়ার।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ৫০ ওভারে ২৮৯/৬ (গেইল ৫০, ক্যাম্পবেল ২৩, হোপ ৩৩, ব্রাভো ২৫, হেটমায়ার ১০৪*, হোল্ডার ৩, ব্র্যাথওয়েট ১৩, নার্স ১৩*; উড ১/৩৮, কারান ০/৬২, মইন ০/৫১, প্লানকেট ১/৩৯, স্টোকস ১/৬২, রশিদ ১/২৮)
ইংল্যান্ড: ৪৭.৪ ওভারে ২৬৩ (রয় ২, বেয়ারস্টো ০, রুট ৩৬, মর্গ্যান ৭০, স্টোকস ৭৯, বাটলার ৩৪, মইন ১২, কারান ০, রশিদ ১৫, প্লানকেট ২, উড ১*; কটরেল ৫/৪৬, হোল্ডার ৩/৫৩, টমাস ১/৩২, নার্স ০/২৮, বিশু ০/৪৯, গেইল ০/১৫, ব্র্যাথওয়েট ১/৩৭)
ফল: ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২৬ রানে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: শিমরন হেটমায়ার