ওপেনার শিখর ধাওয়ানের ৮৫ বলে অপরাজিত ১০০ রানে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডে ৮ উইকেটে জিতলো স্বাগতিক ভারত। এ জয়ে তিন ম্যাচের সিরিজ ২-১ ব্যবধানে জিতে নেয় টিম ইন্ডিয়া। ২০১৬ সালের জুন থেকে এ নিয়ে টানা ৮টি ওয়ানডে দ্বিপক্ষীয় সিরিজ জিতলো ভারত।
বিশাখাপত্তমে টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিং বেছে নেন ভারতের অধিনায়ক রোহিত শর্মা। দলীয় ১৫ রানেই প্রথম উইকেট হারায় শ্রীলঙ্কা। ওপেনার দানুষ্কা গুনাথিলাকাকে ১৩ রানের বেশি করতে দেননি ভারতের পেসার জসপ্রিত বুমরাহ।
সর্তীথকে হারিয়ে ভড়কে যাননি আরেক ওপেনার ও সাবেক অধিনায়ক উপুল থারাঙ্গা। তিন নম্বরে নামা সাদিরা সামারাবিক্রমাকে নিয়ে দলের রানের চাকা সচল রাখেন থারাঙ্গা। এ সময় ভারতীয় বোলারদের উপর চড়াও হন তিনি। তাই ৩৬ বলেই হাফ-সেঞ্চুরি তুলে নেন তিনি। হাফ-সেঞ্চুরির পরও নিজেকে গুটিয়ে নেননি থারাঙ্গা।
ভারতের বোলারদের বিপক্ষে চার-ছক্কার ফুলঝুড়ি ফুটিয়েছেন তিনি। এর মাঝে সামারাবিক্রমা ৪২ রান করে ফিরলে দলীয় ১৩৬ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারায় শ্রীলঙ্কা। দ্বিতীয় উইকেটে থারাঙ্গার সাথে ১২১ রান যোগ করেন সামারাবিক্রমা।
দ্বিতীয় উইকেট হারানোর কিছুক্ষনের মধ্যে ক্যারিয়ারের ১৬তম সেঞ্চুরির দোড়গোড়ায় পৌঁছে যান থারাঙ্গা। কিন্তু সেঞ্চুরি থেকে ৫ রান দূরে থাকতে ভারতের বাঁ-হাতি স্পিনার কুলদীপ যাদবের বলে সাবেক অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনির বুদ্ধিদীপ্ত স্টাম্পিং-এ আউট হয়ে যান থারাঙ্গা। ১২টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৮২ বলে ৯২ রান করেন তিনি।
থারাঙ্গা যখন ফিরেন তখন শ্রীলঙ্কার রান ৩ উইকেটে ১৬০। এরপরই ভারতীয় বোলারদের সামনে খেই হারিয়ে ফেলেন শ্রীলঙ্কান ব্যাটসম্যানরা। পরের ৭ উইকেট মাত্র ৫৫ রানে হারায় সফরকারীরা। অর্থাৎ ১৬০ থেকে ২১৫ রানেই গুটিয়ে যায় শ্রীলঙ্কা। সফরকারীদের পতন হওয়া শেষ ৭ উইকেট ভাগাভাগি করে নিয়েছেন কুলদীপ-চাহাল-পান্ডিয়া ও ভুবেনশ্বর। তাই ইনিংস শেষে কুলদীপ ও চাহালের শিকার সংখ্যা গিয়ে দাড়ায় ৩টি করে। পান্ডিয়ার শিকার ছিল ২টি।
জয়ের জন্য ২১৬ রানের টার্গেটে শুরুটা ভালো হয়নি ভারতের। দলীয় ১৪ ও ব্যক্তিগত ৭ রানে আউট হন অধিনায়ক রোহিত শর্মা । আগের ম্যাচেই অপরাজিত ২০৮ রান করেছিলেন তিনি। এরপর শ্রেয়াস আইয়ারকে নিয়ে বড় জুটি গড়েন আরেক ওপেনার শিখর ধাওয়ান। ১১৪ বল মোকাবেলা করে ১৩৫ রান যোগ করেন তারা। এ জুটিতেই জয়ের পথ পেয়ে যায় ভারত।
দলীয় ১৪৯ রানে আইয়ার ফিরলেও, দিনেশ কার্তিককে নিয়ে ভারতকে জয়ের বন্দরে নিয়ে যান ধাওয়ান। নিজের ৯৬তম ম্যাচে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ১২তম সেঞ্চুরির স্বাদ নেন ধাওয়ান। শেষ পর্যন্ত ১৩টি চার ও ২টি ছক্কায় ৮৫ বলে অপরাজিত ১০০ রান করেন তিনি।
আইয়ার ৮টি চার ও ১টি ছক্কায় ৬৩ বলে ৬৫ রান করে আউট হন। চার নম্বরে নেমে ৩১ বলে অপরাজিত ২৬ রান করেন কার্তিক। ম্যাচ সেরা হয়েছেন ভারতের কুলদীপ। সিরিজ সেরা হন ভারতের ধাওয়ান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
শ্রীলঙ্কা : ২১৫/১০, ৪৪.৫ ওভার (থারাঙ্গা ৯৫, সামাবিক্রমা ৪২, কুলদীপ ৩/৪২)।
ভারত : ২১৯/২, ৩২.১ ওভার (ধাওয়ান ১০০*, আইয়ার ৬৫, পেরেরা ১/২৫)।
ফল : ভারত ৮ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচ সেরা : কুলদীপ যাদব (ভারত)।
সিরিজ সেরা : শিখর ধাওয়ান (ভারত)।
সিরিজ : তিন ম্যাচের সিরিজ ২-১ ব্যবধানে জিতল ভারত।
তিন ম্যাচের টেস্ট ও ওয়ানডে সিরিজ শেষে আগামী ২০ ডিসেম্বর থেকে তিন ম্যাচের টি-টুয়েন্টি সিরিজ খেলবে ভারত ও শ্রীলঙ্কা।