কি এক দুর্দান্ত ম্যাচ। ১২ রানের নেই তিন উইকেট, এরপর সবগুলো উইকেট হারিয়ে ২৩৯ রানের পুঁজি। তবুও দুর্দান্ত বোলিং-ফিল্ডিংয়ে পাকিস্তানকে ৩৭ রানের হারিয়ে দিল বাংলাদেশ। শুধু পাকিস্তানকে হারানো নয়, বাংলাদেশের এ জয়ে টাইগারদের এশিয়া কাপের ফাইনাল খেলাও নিশ্চি হলো। ফাইনালে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ বর্তমান চ্যম্পিয়ন ভারত।
পাকিস্তানকে হারিয়ে টানা দ্বিতীয়বার এবং মোট তৃতীয়বার এশিয়া কাপের ফাইনালে উঠলো বাংলাদেশ। ২০১২ সালে প্রথম এবং ২০১৬ ও ২০১৮ সালে টানা দ্বিতীয়বার ফাইনালে বাংলাদেশ। এর মধ্যে ২০১৬ ছিল টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের। তবে একবারও সেই কাঙ্ক্ষিত ট্রাফিটি নিজেদের করে নিতে পাারেনি বাংলাদেশ।
আবুধাবিতে বুধবার টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করে বাংলাদেশ ২৩৯ রানের পুঁজি পায়। ২৪০ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশের বোলিংয়ের কাছে ২০২ রানেই গুটিয়ে যায় পাকিস্তান। পুরো ৫০ ওভার খেলে ৯ উইকেট হারিয়ে এ রান সংগ্রহ করে তারা। বাংলাদেশের কাটার মাস্টার দুর্দান্ত বোলিং করেছেন। ৪৩ রান নিয়ে তুলে নিয়েছেন ৪ উইকেট। তবে তার বলে আরও দৃটি ক্যাচ মিস হয়েছে।
২৮ রান দিয়ে ২ উইকেট নিয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। এছাড়া রুবেল হোসেন, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ এবং সৌম্য সরকার একটি করে উইকেট নিয়েছেন। দলের অধিনায়ক মাশরাফি বল হাতে উইকেট শূন্য থাকলেও দুর্দান্ত দুটি ক্যাচ ধরে দলকে খেলায় ফিরিয়েছেন। তার দুর্দান্ত নেতৃত্বেই পাকিস্তান ২০২ রানে আটকে যায়।
পাকিস্তানের পক্ষে ওপেনার ইমাম-উল হক একাই লড়াই করলেন। ৮৩ রানের এক দুর্দান্ত ইনিংস খেলেছেন। ৯৪ রানে ৫ উইকেট পড়ার পর ইমাম-উল হক এবং আসিফ আলি মিলে দারুণ একটি জুটি গড়েন। তাদের দু’জনের ব্যাট থেকে আসে ৬৯ রানের জুটি। এরই মধ্যে মোস্তাফিজের বলে সহজ একটি ক্যাচ মিস করেন লিটন কুমার দাস।
তবে শুরু থেকেই মিরাজ-মোস্তাফিজদের বোলিং আক্রমণে দিশেহারা অবস্থায় ছিল পাকিস্তান। ইমাম-উল হক আউট হওয়ার পর শুধু আনুষ্ঠানিকতার পালা। পরের টানা দুটি উইকেট তুলে নেন মোস্তাফিজুর রহমান। মোহাম্মদ নওয়াজ ৮ রান করার পর তার বলে ছক্কা মারতে গিয়ে ডিপ মিডউইকেটে নাজমুল হোসেন শান্তর হাতে ক্যাচ দেন। তার আগে হাসান আলিও উুঁচু করে মারতে গিয়ে আউট হলেন মাশরাফির হাতে ক্যাচ দিয়ে। তিনিও করেন ৮ রান।
তবে শেষ পর্যন্ত পাকিস্তান খেলা শেষ ওভারে নিয়ে যায়। শেষ মুহূর্তে শাহিন আফ্রিদি মাঠে নেমে ১৪ রান করে অপরাজিত থাকেন। তার সঙ্গে ৩ রানে অপরাজিত ছিলেন জুনায়েদ খান।
এর আগে টসে জিতে ব্যাট করতে নেমে ৪৮.৫ ওভারে ২৩৯ রানে অলআউট হয়েছে বাংলাদেশ। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৯৯ রান করেন মুশফিক। মিঠুনের ব্যাট থেকে এসেছে ৬০ রানের ইনিংস।
ম্যাচ সেরা হয়েছেন বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ : ২৩৯/১০, ৪৮.৫ ওভার (মুশফিকুর রহীম ৯৯, মোহাম্মদ মিঠুন ৬০, মাহমুদউল্লাহ ২৫, মাশরাফি ১৩, মেহেদী হাসান মিরাজ ১২; জুনায়েদ খান ৪/১৯, শাহিন আফ্রিদি ২/৪৭, হাসান আলি ২/৬০, শাদাব খান ১/৫২)।
পাকিস্তান : ২০২/৯, ৫০ ওভার (ইমাম-উল হক ৮৩, আসিফ আলি ৩১, শোয়েব মালিক ৩০, শাহিন আফ্রিদি ১৪; মোস্তাফিজুর রহমান ৪/৪৩, মেহেদী হাসান মিরাজ ২/২৮, রুবেল হোসেন ১/৩৮, মাহমুদউল্লাহ ১/৩৮, সৌম্য সরকার ১/১৯)।
ফল : বাংলাদেশ ৩৭ রানে জয়ী।