এশিয়া কাপের উদ্বোধনী ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে ১৩৭ রানে বিশাল ব্যবধানে হারিয়ে শুভ সূচনা করলো বাংলাদেশ। মুশফিক-মিঠুনদের গড়ে দেওয়া রানের ভিতকে পরিপূর্ণতা এনে দিয়েছেন বোলাররা। মাশরাফি, মোস্তাফিজ, মিরাজ, রুবেল হোসেন কিংবা সাকিবের দুর্দান্ত বোলিংয়ে মাত্র ১২৪ রানেই গুটিয়ে যায় শ্রীলঙ্কা।
বাংলাদেশের বোলারদের দুর্দান্ত বোলিংয়ে শুরু থেকেই নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে লঙ্কান ব্যাটসম্যানরা। ২২ রানে মোস্তাফিজের বলে কুশল মেন্ডিস আউট হওয়ার পর থেকে বিপর্যয় শুরু লঙ্কানদের। ২৭ রান করা উপুল থারাঙ্গাকে বোল্ড করে মাশরাফি বার্তা দেন জয়ের।
এরপর ২৮ রানে ২, ৩২ রানে ৩, ৩৮ রানে ৪, ৬০ রানে ৫, ৬৩ রানে ৬ এবং ৬৯ রান তুলতেই ৭ উইকেট হারিয়ে বসে শ্রীলঙ্কা। ২৬২ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে একের পর এক লঙ্কানদের উইকেট হারানো জয় ত্বরান্বিত হয় বাংলাদেশের।
লঙ্কানদের কোনো ব্যাটম্যানকেই দাঁড়াতে পারেননি। সর্বোচ্চ ২৭ রান করেছিলেন উপুল থারাঙ্গা। মাশরাফির বলে বোল্ড হয়ে ফিরে যান তিনি। ১৬ রান করেছিলেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউজ। ৬ষ্ঠ ব্যাটসম্যান হিসেবে তার উইকেট তুলে নেন রুবেল হোসেন। ১১ রান করে মিরাজের বলে ফিরে যান কুশল পেরেরা।
থিসারা পেরেরাকে সরাসরি বোল্ড করেন মোস্তাফিজ। ফলে মাত্র ৬ রানে তাকেও বিদায় নিতে হয়। দুই অংকের ঘর স্পর্শও করতে পারেননি। মাশরাফি, মোস্তাফিজ এবং মিরাজ নেন ২টি করে উইকেট। এছাড়া একটি উইকেট নেন রুবেল হোসেন।
এর আগে টন জিতে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশও শুরুতে ভালো করতে পারেনি। তবে মুশফিকুর রহিমের অসাধারণ ব্যাটিংয়ে এশিয়া কাপের প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে ২৬২ রানের টার্গেট দেয় বাংলাদেশ।
ম্যাচের দ্বিতীয় ওভারের শেষ বলে তামিম ইকবাল রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে মাঠ ছাড়েন। এর পরই মাঠে নামেন মুশফিকুর রহীম। স্কোরবোর্ডে ২ রান যোগ না হতেই ৩ জন ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে খাদের কিরাণার পরে যায় বাংলাদেশ।
এরপর মিঠুনের সঙ্গে ১৩১ রানের অনবদ্য এবং অসাধারণ এক জুটি গড়লে মুশফিক। এরপর মেহেদী হাসান মিরাজ আর মাশরাফি বিন মর্তুজার সঙ্গে ছোট ছোট দুটি জুটি গড়েন তিনি। লঙ্কান বোলারদের তোপের মুখে ১৫ রান করে মিরাজ এবং ১১ রান করে বিদায় নেন মাশরাফিও। রুবেল হোসেনের ২ রানের ইনিংস মুশফিককে একটু শঙ্কায় ঠেলে দেয়।
শেষ ব্যাটসম্যান মোস্তাফিজকে সঙ্গে নিয়ে অবশেষে তিন অঙ্কে পৌঁছান মুশফিক। ৪৪তম ওভারের তৃতীয় বলে সুরঙ্গা লাকমালকে বাউন্ডারি মেরেই ক্যারিয়ারে ৬ষ্ঠ সেঞ্চুরির মাইলফলকে পৌঁছে যান মুশফিক। ১২৩ বলে ৭টি বাউন্ডারি এবং ১টি ছক্কার সাহায্যে দুর্দান্ত এ সেঞ্চুরিটি করেন মুশফিক।
মুস্তাফিজ আউট হয়ে গেলে হাতের ইনজুরি নিয়েই ব্যাট হাতে মাঠে নামেন তামিম। তবে তিনি ব্যাট করতে পারেননি। বাঁ হাতের তখনও ছিল তার ব্যান্ডেজ। তামিম ব্যাট করতে না পারলেও জ্বলে ওঠেন মুশফিক। তামিমকে এক প্রান্তে রেখে স্ট্রাইক প্রান্তে ব্যাট হাতে একের পর এক চার মারতে থাকেন তিনি। শেষ পর্যন্ত ১৫০ বলে ১৪৪ রানের ক্যাচ বন্দি হয়ে যায় তার ব্যাটে লাগা বল। থেমে যায় বাংলাদেশ।
ম্যাচ সেরা হয়েছেন বাংলাদেশের মুশফিকুর রহীম। এ ম্যাচে তিনি খেলেছেন ১৫০ বলে ১৪৪ রানের ইনিংস। যা তার ক্যারিয়ার সেরা।