একের পর এক যখন উইকেট হরিয়ে দিশেহারা বাংলাদেশ ঠিক সেই সময়ে দারুণ এক সেঞ্চুরি করলেন বাংলাদেশ দলের ব্যাটিংস্তম্ভ ও উইকেট কিপার মুশফিকুর রহিম। শেষ পর্যন্ত ক্যারিয়ার সেরা ১৫০ বলে ১৪৪ রানের উপর ভর করেই বাংলাদেশ দলের সংগ্রহ দাঁড়ায় ১৬১ রান।
টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে দ্বিতীয় ওভারের শেষ বলে তামিম ইকবাল রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে মাঠ ছাড়েন। এর পরই মাঠে নামেন মুশফিকুর রহীম। স্কোরবোর্ডে ২ রান যোগ না হতেই ৩ জন ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে খাদের কিরাণার পরে যায় বাংলাদেশ। এমন সময়ে প্রয়োজন ছিল বাংলাদেশের একটি ধৈর্যশীল জুটির।
শ্রীলঙ্কার লাসিথ মালিঙ্গা যেভাবে আগুন ঝরাচ্ছিলেন, সঙ্গে সুরাঙ্গা লাকমাল কিংবা থিসারা পেরেরারা যেভাবে নিখুঁত লাইন-লেন্থে বোলিং করছিলেন তাতে ধৈর্যশীল জুটি স্বপ্নছাড়া আর কিছুই নয়। এমন সময়ই মোহাম্মদ মিঠুনকে সঙ্গে নিয়ে দলের হাল ধরেন মুশফিক।
মিঠুনের সঙ্গে ১৩১ রানের অনবদ্য এবং অসাধারণ এক জুটি গড়লে মুশফিক। তবে সেই মালিঙ্গার তোপেই তাদের জুটিতে ভাঙন ধরে। মালিঙ্গার তোপে টিকতে পারেননি মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। তার আগে আমিলা আলফোনসোর ঘূর্ণিতে বিভ্রান্ত হয়ে মাঠে নামার সঙ্গে সঙ্গেই উইকেট হারান অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান মাহমুদউল্লাহ রিয়াদও।
এরপর মেহেদী হাসান মিরাজ আর মাশরাফি বিন মর্তুজার সঙ্গে ছোট ছোট দুটি জুটি গড়েন। লঙ্কান বোলারদের তোপের মুখে ১৫ রান করে মিরাজ এবং ১১ রান করে বিদায় নেন মাশরাফিও। রুবেল হোসেনের ২ রানের ইনিংস মুশফিককে একটু শঙ্কায় ঠেলে দেয়। ইনিংসটাকে তিন অংকে নিতে পারবেন কি না সে চিন্তায় ব্যস্ত তখন সমর্থকরাও।
শেষ ব্যাটসম্যান মোস্তাফিজকে সঙ্গে নিয়ে অবশেষে তিন অঙ্কে পৌঁছান মুশফিক। ৪৪তম ওভারের তৃতীয় বলে সুরঙ্গা লাকমালকে বাউন্ডারি মেরেই ক্যারিয়ারে ৬ষ্ঠ সেঞ্চুরির মাইলফলকে পৌঁছে যান মুশফিক।
১২৩ বলে ৭টি বাউন্ডারি এবং ১টি ছক্কার সাহায্যে দুর্দান্ত এ সেঞ্চুরিটি করেন মুশফিক। এশিয়া কাপে এ নিয়ে দ্বিতীয় সেঞ্চুরি এলো মুশফিকের ব্যাট থেকে। আর এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্বের এ আসরে সব মিলিয়ে বাংলাদেশের সেঞ্চুরি হলো ৫টি।
মুস্তাফিজ আউট হয়ে গেলে হাতের ইনজুরি নিয়েই ব্যাট হাতে মাঠে নামেন তামিম। তবে তিনি ব্যাট করতে পারেননি। বাঁ হাতের তখনও ছিল তার ব্যান্ডেজ। তবে তামিম ব্যাট করতে না পারলেও জ্বলে ওঠেন মুশফিক। তার ব্যাটে চার আর ছক্কার মার দেখে উল্লাসে ফেটে পরে টাইগার সমর্থকরা। তামিমকে এক প্রান্তে রেখে স্ট্রাইক প্রান্তে ব্যাট হাতে একের পর এক চার মারতে থাকেন মুশফিক। শেষ পর্যন্ত ১৫০ বলে ১৪৪ রানের ক্যাচ বন্দি হয়ে যায় তার ব্যাটে লাগা বল। থেমে যায় বাংলাদেশ। ১৬১ রানের সংগ্রহে মুশফিকের ১৪৪ রান তার ক্যারিয়ার সেরা।