দুবাইয়ে ১৫ আগস্ট পর্দা উঠছে এশিয়া কাপ ক্রিকেট টুর্নামেন্টের। মহাদেশীয় এ টুর্নামেন্টে দীর্ঘদিন যাবত একচেটিয়া প্রাধান্য ছিল ক্রিকেট পরাশক্তি ভারতের। এবারও সেই ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখার চেষ্টা করবে দলটি। তবে প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলো যেভাবে উন্নতি করছে, তাতে তাদের আধ্যিপত্য হুমকির মুখে পড়তে পারে। শ্রেষ্ঠত্ব বজায় রাখার জন্য কঠিন পরীক্ষা দিতে হবে দলটিকে। বিশেষ করে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বি পাকিস্তান এ পরীক্ষা নেবে ভারতীয়দের।
১৯৮৪ সালে শারজায় অনুষ্ঠিত হয় প্রথম এশিয়া কাপ। ওই আসরের শিরোপা জয় করে ভারত। এরপর থেকে ভারত ও শ্রীলঙ্কাই মূলত এই টুর্নামেন্টে আধিপত্য বিস্তার করে রেখেছে। টুর্নামেন্টের ছয়বার ট্রফি লাভ করেছে ভারত। তন্মধ্যে ৫টি ওয়ানডে এবং একবার টি-টোয়েন্টি ট্রফি। শ্রীলঙ্কা পাঁচবার জয় করেছে এশিয়া কাপের ট্রফি। আর মাত্র দুইবার এ ট্রফি জয় করেছে পাকিস্তান।
২০১৫ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল ঘোষণা করে এ টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হবে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি ফর্মেটে। অর্থাৎ একবার ওডিআই টুর্নামেন্ট হলে পরের আসরটি হবে টি-টোয়েন্টি ফর্মেটের। এরই ধারবাহিকতায় ২০১৬ সালে টি-টোঢেন্টি ফর্মেটের প্রথম এশিয়া কাপ অনুষ্ঠিত হয় বাংলাদেশে। ঢাকায় অনুষ্ঠিত টুর্নামেন্টের ফাইনালে বাংলাদেশকে হারিয়ে শিরোপা জয় করে ভারত।
আসন্ন ২০১৮ সালের টুর্নামেন্টেও যথারীতি শিরোপার ফেভারিট হিসেবে প্রতিযোগিতায় নামবে ভারত। তবে এবার পাকিস্তানও বেশ শক্তিশালী দল নিয়ে লড়াই করবে। ২০১৭ সালের আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে অঘটনের জন্ম দিয়ে শিরোপা জয় করেছে সরফরাজ আহমেদের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তান জাতীয় ক্রিকেট দল। এরপর থেকে বেশক’টি টুর্নামেন্ট ও সিরিজে নিজেদের যোগ্যতার প্রমাণ দিয়ে চলেছে দলটি।
তবে এবারের টুর্নামেন্টে ভারতীয় দলে থাকছেন না ‘রান মেশিন’ খ্যাত অধিনায়ক বিরাট কোহলি। আর এটি হবে অন্য দলগুলোর জন্য বড় একটি সুযোগ। প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলোর আশাবাদী হবার আরেকটি কারণ হচ্ছে নিকট অতীতে অনুষ্ঠিত এশিয়া কাপে ভারত খুব বেশি ভালো খেলেনি। তারা হয়তো ২০১৬ সালের এশিয়া কাপের শিরোপা জয় করেছে, তবে ২০১০ সালের পর মাহদেশীয় টুর্নামেন্টে এটি ছিল ভারতের প্রথম শিরোপা।
১৯৮৪ সালে এশিয়া কাপের উদ্বোধনী আসরের শিরোপা জয় করার দুই বছর পর নিজ দেশে অনুষ্ঠিত আসর থেকে শিরোপা জয় করেছে শ্রীলঙ্কা। দ্বীপ দেশটির সঙ্গে রাজনৈতিক সঙ্কট তৈরি হওয়ার কারণে ওই টুর্নামেন্টে অংশ নেয়নি ভারত।
এরপর ১৯৮৮ সালে বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত টুর্নামেন্টের শিরোপাটি ফের জিতে নেয় ভারত। পরবর্তী দুটি আসরের শিরোপা জয়ের মাধ্যমে হ্যাট্রিক শিরোপা জয়ের নজির স্থাপন করে ক্রিকেট বিশ্বের এই পরাশক্তি। ফলে তাদের সর্বমোট শিরোপা দাঁড়ায় চারটি। তবে ১৯৯৪-৯৫ আসরের শিরোপা জয়ের পর কিছুটা দাপট হারায় ভারত। পরের চারটি আসর থেকে খালি হাতে ফিরতে হয়েছে দলটিকে। এ সময় শ্রীলঙ্কা তিনটি এবং পাকিস্তান একটি শিরোপা জয় করে।
শেষ পর্যন্ত ২০১০ সালে এসে এম এস ধোনির নেতৃত্বে শিরোপা খরা দূর করে ভারত। শ্রীলঙ্কার ডাম্বুলায় অনুষ্ঠিত ফাইনালে স্বাগতিকদের ৮১ রানে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন শিরোপা ফের ঘরে তোলে দলটি। এরপর শ্রীলঙ্কা ২০১১-১২ মৌসুমের শিরোপা ঘরে তোলার পর ২০১৩-১৪ আসরের শিরোপা জয় করে পাকিস্তান।
২০১৬ সালে টি-টোয়েন্টি ফর্মেটে অনুষ্ঠিত হয় এশিয়া কাপ। বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত ওই টুর্নামেন্টে ভারত অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হলেও দারুণ দক্ষতার পরিচয় দিয়ে ফাইনাল খেলেছে স্বাগতিক বাংলাদেশ।