দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে মিরপুরে টেস্ট খেলে লাল বলের ক্রিকেট থেকে বিদায় নিতে চেয়েছিলেন সাকিব আল হাসান। তবে নিরাপত্তা ইস্যুতে সেটি আর সম্ভব হয়নি। এখন দেশের বাইরে আফগান সিরিজেও খেলছেন না সাকিব আল হাসান। টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি থেকে বিদায় নেওয়া সাকিব আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছেন।
আরব আমিরাতের শারজায় ৬, ৯ ও ১১ নভেম্বর আফগানিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ দল। নিরাপত্তা ইস্যুতে দেশে ফিরতে না পারলেও বিদেশের মাটিয়ে সাকিবের খেলার বিষয়ে কোন বাধা ছিল না। তবে আফগান সিরিজে সাকিবে খেলা সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছেন বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ।
বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সাংবাদিকদের বলেন, “আমার মনে হয় অনুশীলনেও খুব একটা নেই ও (সাকিব)। আমার মনে হয় তার কিছু সময় দরকার। এটার ব্যাপারে (আফগান সিরিজে না খেলা) এখনও সিদ্ধান্ত হয়ে যায়নি। তবে মনে হচ্ছে আগামী সিরিজে তার খেলার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।”
তিনি আরও বলেন, “আমি বলছি না সে (সাকিব) খেলবে না। কিন্তু আমার মনে হয় তার খেলা হবে না। এটা পুরোপুরি তার মানসিক অবস্থা..., এর মধ্যে একটা টি-টেন টুর্নামেন্ট আছে, হয়তো আমরা এখনও পারমিশন (এনওসি) দেইনি। আমি এখনও অনুভব করি, সাকিব বাংলাদেশের জন্য খেলতে পারে, অন্তত ৫০ ওভার ম্যাচ। খুব একটা গুরুত্বপূর্ণ টুর্নামেন্ট আছে আমাদের সামনে। ওয়েস্ট ইন্ডিজে তিনটা ওয়ানডের পর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। তবে মনে হচ্ছে এই সিরিজটা (আফগান সিরিজ) সে মিস করবে।”
নিরাপত্তা ইস্যুতে সাকিব আল হাসানের খুব সহসাই দেশে ফেরা হচ্ছে না। এ অবস্থায় দেশের দলের সাথে অনুশীলন না করা কিংবা দেশের মাটিতে না খেলে শুধুমাত্র বিদেশি সফরে খেলাটা ঠিক হবে কি-না -এমন এক প্রশ্নের জবাবে বিসিবি সভাপতি বলেন, “এটার জন্য আমরা কাজ করছি। সে (সাবিক) প্রায় খেলছিলই গত ম্যাচটা ঢাকায়। এটা অলমোস্ট সার্টেন।”
“আমি দুবাই ছিলাম অফিশিয়াল ভিজিটে। তখন সাকিব দুবাই ছিল। এই কলটা ছিল সাকিব আসবে কি-না, এখান থেকে তারা বলবে সিকিউরিটি দিতে পারবে কি-না। আমি কেবল এটার মাঝখানে ছিলাম।” -যোগ করে ফারুক আহমেদ।
পতন হওয়া শেখ হাসিনা সরকারের একজন এমপি ছিলেন সাকিব আল হাসান। ফলে সরকার পতনের পর সাকিবের বিপক্ষে বিক্ষোভ মিছিলসহ নানা স্লোগানে দেয়াল লিখন ছাড়াও হত্যা মামলাও হয়েছে। এসব নানা বিষয় নিয়ে সাকিব মানসিকভাবে কঠিন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে বলেও মনে করেন ফারুক আহমেদ।
তিনি বলেন, “এই যে স্ট্রেসের কাজটা। এ কিন্তু মেন্টালি ডিস্টার্বড হবেই। এটা খুব স্বাভাবিক, সে মানুষ। যত শক্ত মাথাই থাক না কেন। সেক্ষেত্রে যেহেতু শেষ টেস্টটা খেলতে পারেনি, সে আপসেট থাকবে। এমন একটা কারণ তার দিকের, আপনি হয়তো মানবেন না। সে যা করেছে, প্রাপ্য বলবো না, এ রকম হতে পারে। আমার মনে হয় মানসিকভাবে...অনুশীলন হয়তো আপসেট ছিল, অনুশীলন ওরকম করে করতে পারে নাই।”
সাকিব আল হাসানকে নিয়ে বিসিবি সভাপতি আরও বলেন, “সে অনেক পেশাদার, সে ভেবেছে অনুশীলন করে নাই, এ সিরজে তার জন্য বা দেশের জন্য ভালো হবে না। সে রি-গ্রুপ করবে। এর মধ্যে একটা টি-টেন আছে, এটা কোনো টুর্নামেন্টের সঙ্গে ক্ল্যাশ করে না। এটা খেলে সে দেখবে খেলোয়াড় হিসেবে কামব্যাক করতে পারে কি-না।”
আফগানিস্তান সিরিজ মিস করার পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের যদি না খেলা হয় -সেক্ষেত্রে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে সাকিবের খেলা অনিশ্চিত হয়ে পড়বে কি-না, জানতে চাইলে ফারুক আহমেদ বলেন, “আমি সব সময় বর্তমান জিনিস নিয়ে চিন্তা করতে ভালোবাসি। এত দূরে যাবেন না।”