বিশ্বকাপে নিজেদের শেষ ম্যাচে এসে ৩ শতাধিক রানের স্কোর গড়লো বাংলাদেশ। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথমে ব্যাট করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৮ উইকেটে ৩০৬ রান করেছে বাংলাদেশ। ব্যাট হাতে দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৭৪ রানের ইনিংস খেলেছেন তাওহিদ হৃদয়।
শনিবার (১১ নভেম্বর) পুনেতে টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেয় অস্ট্রেলিয়া। টাইগারদের নিয়মিত অধিনায়ক সাকিব আল হাসান ছিটকে যাওয়ায় এ ম্যাচে নেতৃত্ব দিচ্ছেন নাজমুল হোসাইন শান্ত।
তানজিদ হাসান তামিমকে নিয়ে ওপেনিংয়ে ব্যাট করতে নামে লিটন কুমার দাস। অসি বোলারদের বিপক্ষে সমানতালে ব্যাট করে দুই ওপেনার। ১২তম ওভারে দ্বিতীয় বলে প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ। পেসার সিন অ্যাবটের বাউন্সার সামলাতে না পেরে বোলারকেই ক্যাচ দিয়ে আউট হন ৬টি চারে ৩৪ বলে ৩৬ রান করা তানজিদ।
দলীয় ৭৬ রানে তানজিদ ফেরার পর ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক শান্তকে নিয়ে দলের রান ১৬তম ওভারে ১শ পার করেন লিটন। ১৫তম ওভারে স্পিনার এডাম জাম্পার বলে অস্ট্রেলিয়ার প্যাট কামিন্সের হাতে ব্যক্তিগত ৩৪ রানে জীবন পান লিটন। তবে জীবন পেয়ে বেশি দূর যেতে পারেননি তিনি। ৫টি চারে ৪৫ বলে ৩৬ রান করা লিটন। শান্ত-লিটন যোগ করেন ৩০ রান।
লিটনের বিদায়ে ক্রিজে শান্তর সঙ্গী হন তাওহিদ হৃদয়। বলের সাথে পাল্লা দিয়ে রান তুলেছেন তারা। উইকেটে সেট হয়ে দলের বড় স্কোরের ভিত গড়তে থাকেন শান্ত ও হৃদয়। হাফ-সেঞ্চুরির কাছে পৌঁছেও যান শান্ত। তবে দ্বিতীয় রান নিতে গিয়ে লাবুশেনের দারুণ ফিল্ডিংয়ে রান আউট হন তিনি।
শান্তর ব্যাট থেকে ৬টি বাউন্ডারিতে ৫৭ বলে ৪৫ রান আসে। তৃতীয় উইকেটে দলকে ৬৬ বলে ৬৩ রান উপহার দেন শান্ত-হৃদয়। এরপর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মুশফিকুর রহিম ও মেহেদি হাসান মিরাজকে নিয়ে বড় জুটির চেষ্টা করেন হৃদয়। তবে কোন জুটিই হাফ-সেঞ্চুরির গন্ডি পার করতে পারেনি।
চতুর্থ উইকেটে মাহমুদউল্লাহর সাথে ৪৮ বলে ৪৪ রানের জুটিতে ৩২তম ওভারে ২শ রান পেয়ে যায় বাংলাদেশ। আক্রমণাত্মক মেজাজে থাকা মাহমুদউল্লাহ ৩টি ছক্কাও আদায় করে নেন। তবে আবারও লাবুশেনের দারুণ ফিল্ডিংয়ে শেষ হয় মাহমুদউল্লাহর ২৮ বলে ৩২ রানের জুটিটি। তার ইনিংসে ১টি চার ও ৩টি ছক্কা ছিল।
পঞ্চম উইকেটে মুশফিকের সাথে ৩৯ বলে ৩৭ রানের জুটি গড়ার পথে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ হাফ-সেঞ্চুরির দেখা পান হৃদয়। এই জুটিতে দলের রান আড়াইশ পার করে থামেন মুশি। জাম্পার বলে মিড উইকেটে কামিন্সকে ক্যাচ দেন ১টি ছক্কায় ২৪ বলে ২১ রান করা মুশফিক।
এই শিকারে শ্রীলঙ্কার দিলশান মাদুশঙ্কাকে সরিয়ে চলমান বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ ২২ উইকেটের মালিক হন জাম্পা। সেই সাথে ব্র্যাড হগকে সরিয়ে এক আসরে অস্ট্রেলিয়ার স্পিনার হিসেবে সর্বোচ্চ উইকেটের মালিক হলেন জাম্পা।
৪৩তম ওভারে দলীয় ২৫১ রানে মুশফিক ফেরার পর বাংলাদেশের রানের চাকা সচল রাখেন হৃদয়। নিজের ইনিংসটাও বড় করছিলেন তিনি। কিন্তু ৪৭তম ওভারে পেসার মার্কাস স্টয়নিসের বলে মিড উইকেটে লাবুশেনকে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন ৫টি চার ও ২টি ছক্কায় ৭৯ বলে ৭৪ রান করা হৃদয়।
শেষ দিকে মেহেদি হাসান মিরাজের ২০ বলে ৪টি বাউন্ডারিতে ২৯ রানের সুবাদে ৩শ রানের কোটা পার করে বাংলাদেশ। ৫০ ওভারে ৮ উইকেটে ৩০৬ রানের সংগ্রহ পায় টাইগাররা।
এবারের বিশ্বকাপে প্রথমবারের মত ৩শ রানের কোটা পার করলো বাংলাদেশ। এছাড়া এটা নিয়ে পঞ্চমবার বিশ্বকাপের মঞ্চে ৩শ রানের দেখা পেল টাইগাররা। বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান বাংলাদেশের। অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে অ্যাবট-জাম্পা ২টি করে এবং স্টয়নিস ১টি উইকেট নেন।