বিশ্বকাপে নিজেদের চতুর্থ ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে রেকর্ড ২২৯ রানের ব্যবধানে পরাজিত হয়েছে ইংল্যান্ড। এ পরাজয়ে পয়েন্ট টেবিলে ৯ নম্বরে নেমে গেছে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। এ অবস্থায় অধিনায়ক জস বাটলার স্বীকার করেছেন যে, বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের সামনে এগিয়ে যেতে হলে আর ভুলের কোন সুযোগ নেই।
মুম্বাইয়ের ওয়ংখেড়ে স্টেডিয়ামে প্রথমে ব্যাটিং করে প্রচন্ড গরমের মধ্যেই দীর্ঘক্ষণ ব্যাটিং করা ক্লাসেনের দুর্দান্ত সেঞ্চুরিতে ভর করে প্রোটিয়ারা ৭ উইকেটে ৩৯৯ রানের বিশাল সংগ্রহ দাঁড় করায়। ওয়ানডেতে ইংল্যান্ডের সামনে সর্বোচ্চ রানের লক্ষ্য মাত্রা ছুড়ে দিয়ে দিয়ে বল হাতেও দক্ষিণ আফ্রিকা নিজেদের যোগ্যতার প্রমাণ দিয়েছে।
১৭০ রানেই ইংলিশদের গুটিয়ে দিয়ে বিশাল জয়ে দারুণ আত্মবিশ্বাসী দক্ষিণ আফ্রিকা এখন সেমিফাইনালের পথে রয়েছে। ওয়ানডেতে ইংল্যান্ডের এটি সবচেয়ে বড় ব্যবধানে পরাজয়ের রেকর্ড। এছাড়া এ নিয়ে প্রথম চার ম্যাচের তিনটিতেই পরাজিত হয়েছে ইংল্যান্ড।
নিউজিল্যান্ডের কাছে প্রথম ম্যাচে ৯ উইকেটের হার দিয়ে শুরু ইংলিশদের । এরপর আফগানিস্তানের কাছে হারের লজ্জা পেয়েছে ইংলিশরা। বাকি থাকা ম্যাচগুলোর একটিতে পরাজিত হলেই সেমিফাইনালে যাওয়ার আশা অনেকটাই শেষ হয়ে যাবে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের। বৃহস্পতিবার পরবর্তী ম্যাচে শ্রীলঙ্কার মুখোমুখি হবে ইংল্যান্ড।
বিশ্বকাপে দলের এ অবস্থায় বাটলার বলেছেন, “নিশ্চিতভাবেই আমরা এখন কঠিন পরিস্থিতিতে পড়েছি। এখন আর ভুলের কোন সুযোগ নেই। আমাদের জন্য বিশ্বকাপ এ মুহূর্তে অনেক বেশি কঠিন হয়ে গেছে। জয় ভিন্ন এখন আমাদের সামনে এখন আর কোন বিকল্প নেই। কিন্তু আমাদের নিজেদের ওপর আস্থা রাখতে হবে। আবারও নতুন করে সবকিছু শুরু করতে হবে।”
ষষ্ঠ উইকেটে ক্লাসেন (১০৯) ও মার্কো জানসেন (৭৫*) মিলে ১৫১ রানের জুটিই দক্ষিণ আফ্রিকার বড় ইনিংসের ভিত গড়ে দেয়। ইংলিশ বোলররা এ দুই ব্যাটারের কাছে ছিল একেবারেই অসহায়। বড় টার্গেট তাড়া করতে নেমে ইংলিশ ব্যাটাররা দক্ষিণ আফ্রিকার পরীক্ষীত পেস আক্রমণের সামনে বড় শট খেলতে গিয়ে উইকেট বিলিয়ে দিয়েছে।
মাত্র ২২ ওভারে ইনিংস গুটিয়ে যাওয়া ইংলিশদের জন্য বড় একটি সতর্কবার্তাই দিয়েছে। বাটলারও তাই মনে করেন। বলেন, “আমরা অবশ্যই নিজেদের সেরাটা খেলতে পারিনি। অধিনায়ক হিসেবে আমারও দায়িত্ব আছে। তবে দলের বাকি খেলোয়াড়দেরর নিজেদের দায়িত্ব বুঝতে হবে। কিভাবে নিজেদের ফিরিয়ে এনে ভাল ক্রিকেট খেলা যায় সেটাই এখন আমাদের মূল চ্যালেঞ্জ।”
তিনি আরও বলেন, “নিজেদের সাধ্যমত খেলে আবারও ফিরে আসতে হবে। কোনভাবেই মনে আনা যাবে না সবকিছু শেষ হয়ে গেছে, কিংবা আমাদের আর কিছু করার নেই। নিজেদের মানসিকভাবে চাঙ্গা করে তুলতে হবে।”
টসে জয়ী হয়ে বাটলার প্রথমে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিলে ম্যাচের ফলাফল হয়তো ভিন্ন হতে পারতো বলে অনেকেই মত দিয়েছেন। বাটলার নিজেও ম্যাচ শেষে সেটাই স্বীকার করেছেন। ৩৬ ডিগ্রি তাপমাত্রার প্রচন্ড গরমে আগে ফিল্ডিং করে পুরো দলের শক্তি অনেকটাই শেষ হয়ে গিয়েছিল।
বাটলার বলেন, “কন্ডিশন বিবেচনায় আগে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত হয়তোবা ভালো হতে পারতো। ওই মুহূর্তে আমি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমি মনে করেছি এটাই আমাদের জন্য সঠিক হবে। আমি এখনো বিশ্বাস করি আমাদের সামনে যদিও ৩৪০, ৩৫০ রানের টার্গেট থাকতো তবে আমরা আরও ভালোভাবে সেটা মাথায় নিয়ে ব্যাটিং করতে পারতাম।”