আল্লাহ চাইলে যে কাউকে সাফল্যের চূড়ায় উঠিয়ে দিতে পারেন, চোখের পলকে। আবার তারই ইচ্ছায় ব্যর্থতার সমুদ্রে ডুবে যান যে-কেউ, যেকোনো সময়। সাফল্যের পথে হেঁটে চলতে, কে না চান? তবে ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, সবকিছু দেওয়া-নেওয়ার মালিক একমাত্র আল্লাহ। আর সেই বিশ্বাসের উপর ভর করেই, দিনকে দিন সাফল্যের আকাশে উড়ছেন মুহাম্মদ রিজওয়ান।
সাধারণ ক্রিকেটপ্রেমী হলে আপনার কাছে প্রশ্ন রাখাই যায়, বাইশ গজে সাফল্য পাওয়ার পর দু’হাত তুলে কী বুঝাতে চান রিজওয়ান? অবশ্য এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে, কিছুটা দ্বিধায় পড়ে যেতে পারেন আপনি। সৃষ্টিকর্তার প্রতি সন্তষ্টি নাকি দর্শক অভিবাদনের জবাব! তবে রিজওয়ানের এমন অভিব্যক্তি, কেবল সৃষ্টিকর্তার প্রতিই সন্তষ্টির প্রতিচ্ছবি।
গত ম্যাচটাই দেখুন না, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে কী নিদারুণ সুন্দর ইনিংসটাই না খেলেছেন রিজওয়ান। দলকে জেতালেন। ঐতিহাসিক জয়ে ম্যাচসেরাও হয়েছেন এ আহত সৈনিক। তবু যেন বাঁধভাঙা উল্লাসের আগমন ঘটে না রিজওয়ানের খেলোয়াড়ি মনে। বরং যতটা উপরে ওঠেন, ঠিক ততটাই যেন মাটিতে মিশে যান তিনি। সেজদায় লুটে পড়েন সেই মহানের তরে, যিনি সাফল্য দেওয়ার মূল কারিগর।
ভারতের মাটিতে নিজের প্রথম বিশ্বকাপ খেলতে গেছেন, ২০১৫ সালে ওয়ানডে ক্রিকেটে পা রাখা রিজওয়ান। আর তাতেই নিজের সেরা রূপ দেখিয়ে চলেছেন, ৩২ বয়সী এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান।
প্রথম ম্যাচে ফিফটি, দ্বিতীয় ম্যাচে শতক। যদিও রিজওয়ানের ইনিংসকে কেবল রানের সংখ্যায় মাপার সুযোগ নেই। রীতিমতো অসম্ভবকে সম্ভব করে চলেছেন এইপাকিস্তানি। প্রশংসিত হচ্ছেন বিশ্বজুড়ে।
তবে একটু পেছন ফিরে তাকালে দেখা যাবে, রিজওয়ানের ক্যারিয়ারের যত উত্থান-পতন। সেই দুর্দিন ছাপিয়ে সুদিনে ফেরা, সাফল্যের সিঁড়ি বেয়ে ওপরে ওঠা।
এ গল্প, একটি যুদ্ধ জয়ের চেয়ে কম কি! অমাবস্যার আকাশে জ্বলন্ত তারা হয়ে ওঠার কারণ হিসেবে রিজওয়ান বলেন, “আমি কেবল আল্লাহর কাছে চেয়েছি। বিশ্বাস রেখে ধৈর্য ধরেছি।” আর সেই বিশ্বাসের ফল, আজকের রিজওয়ান। বাইশ গজে যার প্রমাণ।