সুপার ফোর পর্বে পরপর দুই হারে এশিয়া কাপ থেকে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের বিদায় এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। দলের এমন হতাশজনক পারফমেন্সর মূল কারণ ব্যাটিং ব্যর্থতা। মূলত বিশ্বকাপের আগে দলের এমন বাজে পারফরমেন্সে দলের বাস্তব চিত্রই ফুটে উঠেছে।
গ্রুপ পর্বে একমাত্র আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচটি ছাড়া এখন পর্যন্ত বাজে টুর্নামেন্টে ধারাবাহিকভাবে বাজে পারফরমেন্স করেছে দলের ব্যটাররা। যে কারণে এ গ্রুপ পর্বে ১টি এবং সুপার ফোর পর্বে দু’টি ম্যাচে হার মানতে হয়েছে টাইগারদের।
গত দুই বছর ধরে ব্যাটিংয়ে ধারাবাহিকতার অভাব অব্যাহত থাকায় শেষ চার সিরিজের মধ্যে তিনটিতেই হেরেছে বাংলাদেশ। ২০১৫ সাল থেকে ঘরের মাঠে অপরাজেয় থাকলেও সম্প্রতি ইংল্যান্ড ও আফগানিস্তানের কাছে সিরিজ হেরেছে তারা। এমনকি র্যাংকিংয়ের নিচের সারির দল জিম্বাবুয়ের কাছেও ওয়ানডে সিরিজ হারের লজ্জা পায় টাইগাররা।
এ দু’টি সিরিজের হারের পর প্রশ্ন উঠেছে ওয়ানডেতে কি তাহলে বাংলাদেশের শক্তি লোপ পেয়েছে? ব্যাটিং ব্যর্থতায় শ্রীলঙ্কার কাছে ২১ রানের হার, ওই প্রশ্নটি আবারও ডালপালা মেলেছে। লঙ্কান বিপক্ষে ম্যাচের উইকেট মন্থর হলেও ব্যাটিং করার জন্য খুব বেশি কঠিন ছিল না।
এর আগে লাহোরে ব্যাটিং স্বর্গে পাকিস্তানের বিপক্ষে ২শর নীচে অলআউট হয়েছিল বাংলাদেশ। এমনকি পুরো ৫০ ওভারও খেলতে পারেনি তারা।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচের পর সাকিব বলেছেন, “ইংল্যান্ড এবং আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ থেকে গত ছয় মাস ধরে (ওয়ানডেতে) আমাদের ব্যাটিংয়ের মান নিচের দিকে যাচ্ছে। এবার এ টুর্নামেন্টেও সেটাই দেখা গেল এবং এটি নিয়ে আমাদের কাজ করতে হবে।”
এশিয়া কাপের এ হারে দলের বাস্তব চিত্রই ফুটে উঠেছে উল্লেখ করে সাকিব বলেন, “সত্যি বলতে, আমরা আমাদের ব্যাটিং নিয়ে উদ্বিগ্ন। আমাদের ভুলগুলো সংশোধন করতে হবে। বিশ্বকাপের আগে আমাদের ভুলগুলো কীভাবে সংশোধন করা যায় সেটি নিয়ে কাজ করতে হবে। এ টুর্নামেন্ট আমাদের জন্য বাস্তবতার পরীক্ষাই ছিল।”
১৫ সেপ্টেম্বর সুপার ফোরে নিজেদের শেষ ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে খেলতে নামবে বাংলাদেশ। টাইগারদের ফাইনাল খেলার সুযোগ আছে কিনা সেটি নিশ্চিত হওয়া যাবে, সেটা ওই মাচের আগেই জানা যাবে। অন্যান্য দলের ফলাফল ও রান রেট নিজেদের পক্ষে থাকার উপর নির্ভর করছে ফাইনালের মঞ্চে বাংলাদেশের জায়গা করে নেওয়ার সম্ভাবনা।
সাকিব বলেন, “আমরা সব সময় দ্বিপাক্ষিক সিরিজে ভালো খেলি এবং আপনি বলতে পারবেন না আমরা খারাপ দল। কিন্তু এ ধরনের টুর্নামেন্টে আমাদের বড় পরীক্ষা হয়ে থাকে। এমন টুর্নামেন্টে আমরা ভালো করতে পারছি না।”
তিনি আরও বলেন, “২০০৭, ২০১১, ২০১৫ এবং ২০১৯ সালে বিশ্বকাপে তিনটি করে ম্যাচ জিতেছি আমরা। এটি নিয়ে মানুষ কিছু বলতে পারবে। কিন্তু আমরা বাস্তবতার পরীক্ষাতেই ব্যর্থ হই। এটি ভালো দিক যে, বিশ্বকাপের আগে এই টুর্নামেন্টটি হয়েছে এবং এসব সমস্যার সমাধান নিয়ে সবাই ভাববে। আমরা যাতে ভালো করতে পারি তা নিয়ে সবাই চিন্তা করতে পারবে।”
এদিকে, ভারতের বিপক্ষে সুপার ফোরের শেষ ম্যাচের আগে তিন দিনের ছুটি পেয়েছে বাংলাদেশ। মাত্র ১০ দিনের মধ্যে তিনটি ভিন্ন শহরে চারটি ম্যাচ খেলার কারণে দলে কিছু সমস্যা এবং ছোট ধরনের কিছু ইনজুরির সমাধান করা উচিত বলে মনে করছে টিম ম্যানেজমেন্ট।