সুপার ফোরের প্রথম ম্যাচেই হতাশ করলো টাইগার ব্যাটাররা। পাকিস্তানের বিপক্ষে ব্যাট করতে নেমে ৩৪.৪ ওভারে ১৯৩ রানে গুটিয়ে গেছে বাংলাদেশের ব্যাটিং ইনিংস। অধিনায়ক সাকিব আল হাসান এবং মুশফিকুর রহিম জোড়া ফিফটি করলেও ব্যাট হাতে দলের বাকিরা ছিলেন ব্যর্থতার কাতারে।
বাংলাদেশকে ১৯৩ রানে গুটিয়ে দেওয়ার পেছনে বল হাতে সবচেয়ে বেশি অবদান রাখেন পাকিস্তানের বোলার হারিস রউফ। ৬ ওভারে মাত্র ১৯ রান ৪ উইকেট শিকার করেছেন তিনি। এছাড়া নাসিম শাহ ৩ উইকেটি নিয়েছেন।
মাত্র দু’দিন আগে আগের ম্যাচেই একই মাঠে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৫ উইকেটে ৩৩৪ রান করেছিল বাংলাদেশ। আজ লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে টানা তৃতীয় ম্যাচে মত টস জিতে প্রথমে ব্যাটিং বেছে নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব। আগের ম্যাচ থেকে ১টি পরিবর্তন নিয়ে একাদশ সাজায় বাংলাদেশ। ইনজুরিতে পড়া নাজমুল হোসেন শান্তর পরিবর্তে একাদশে নেওয়া হয় লিটন দাসকে।
এ ম্যাচেও মোহাম্মদ নাইমের সাথে ইনিংস শুরু করেন আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান মেহেদি হাসান মিরাজ। পাকিস্তানের পেসার শাহিন শাহ আফ্রিদির করা প্রথম ওভারে কোন রান নিতে পারেননি নাইম। পরের ওভারে প্রথম স্ট্রাইক পান মিরাজ। পেসার নাসিম শাহর বলে ফ্লিক করতে গিয়ে মিড উইকেটে ফখর জামানকে ক্যাচ দেন মিরাজ। ওয়ানডেতে প্রথমবারের মত গোল্ডেন ডাক মেরে প্যাভিলিয়নে ফিরেন তিনি।
মিরাজের বিদায়ে তিন নম্বরে নেমে বাউন্ডারি দিয়ে রানের খাতা খুলেন লিটন। এরপর নান্দনিক শটে আরও তিনটি চার মারেন তিনি। দারুন শুরুর পর পঞ্চম ওভারে আফ্রিদির বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে আউট হন ৪টি চারে ১৩ বলে ১৬ রান করা লিটন।
লিটনের মত ভালো শুরু করে পেসার হারিস রউফের বলে বিদায় নেন নাইমও। পুল শটে বল আকাশে তুলে রউফের হাতে ক্যাচ দিলে ৪টি চারে ২৫ বলে নাইমের ২০ রানের ইনিংসের সমাপ্তি ঘটে।
নাইম ফেরার পর পাঁচ নম্বরে নামা উইকেটে সেট হবার চেষ্টা করেন। তবে দশম ওভারে রউফের ঘণ্টায় ১৪৫ কিলোমিটার গতির বল সামলাতে পারেননি ৯ বলে ২ রান করা হৃদয়। ৪৭ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে মহাবিপদে পড়ে বাংলাদেশ। এ অবস্থায় জুটি বাঁধেন দলের দুই সেরা খেলোয়াড় সাকিব ও মুশফিকুর। সাবধানে খেলে জুটি গড়ার চেষ্টা করেন তারা।
নাসিমের বলে ৩২ রানে জীবন পান সাকিব। ২১তম ওভারে বাংলাদেশের রান ১শ স্পর্শ করে। ২৮তম ওভারে ৫৩ বলে ওয়ানডেতে ৫৪তম হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন সাকিব। হাফ-সেঞ্চুরির পর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি সাকিব। ফাহিম আশরাফের বলে পুল শট খেলে ডিপ মিড উইকেটে জামানকে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেওয়ার আগে ৭টি চারে ৫৭ বলে ৫৩ রান করেন সাকিব। মুশফিকের সাথে পঞ্চম উইকেটে ১২০ বলে ১০০ রানের গুরুত্বপূর্ণ জুটি গড়েন সাকিব।
অধিনায়ক ফেরার পর ৭০ বলে ওয়ানডেতে ৪৬তম হাফ-সেঞ্চুি পূর্ন করেন মুশফিক। অর্ধশতকের পর শামীম হোসেনকে নিয়ে ইনিংস বড় করার চেষ্টা করেন মুশফিক। আফ্রিদিকে দারুন এক শটে ছক্কা মেরে ভালো কিছুর ইঙ্গিত দেন শামীম। কিন্তু ৩৫তম ওভারে স্পিনার ইফতিখারকে মারতে গিয়ে ভুল টাইমিংয়ে ক্যাচ দিয়ে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন ১৬ রান করেন আক্রমণাত্মক এ ব্যাটার।
দলীয় ১৭৪ রানে ষষ্ঠ ব্যাটার হিসেবে শামীম আউট হওয়ার বাংলাদেশ ইনিংসে ধ্বস নামে। নাসিম ও রউফের তোপে ৩৮ দশমিক ৪ ওভারে ১৯৩ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। এসময় মুশফিককে ৬৪ ও তাসকিনকে শূণ্য রানে শিকার করেন রউফ।
অন্যপ্রান্তে আফিফ হোসেনকে ১২ ও শরিফুল ইসলামকে ১ রানে বিদায় দেন নাসিম। ১৯ রানে শেষ ৫ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ৮৭ বলের ইনিংসে ৫টি চার মারেন মুশফিক।