১৯৮৩ সালে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে এক ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ জিতেছিল নিউজিল্যান্ড। এরপর প্রায় ৩৯ বছরে আর কখনও দ্বিপাক্ষীক বা অন্য কোন টুর্নামেন্ট জিততে পারেনি কিউইরা। এবার দীর্ঘ অপেক্ষার পালা ঘোচাতে চায় তারা। মঙ্গলবার (৬ সেপ্টেম্বর) অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে তিন ম্যাচের সিরিজের প্রথম ওয়ানডে খেলতে নামবে নিউজিল্যান্ড।
ঘরের মাঠে তিন ম্যাচের এ সিরিজটি বিশ্বকাপ সুপার লিগের অংশ হওয়ায় আগের রেকর্ড ধরে রেখে সব ম্যাচ জিততে মরিয়া অস্ট্রেলিয়া। ফলে নিউজিল্যান্ডকে যে খুব সহজে ছেড়ে দিবে তেমনটাও নয়। দীর্ঘদিনের হারের রেকর্ড ভাঙতে হলে কিউইদের সব দিকেই ভালো খেলতে হবে।
কেয়ানর্সে মঙ্গলবার (৬ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ সময় সকাল ১০টা ২০ মিনিটে শুরু হবে নিউজিল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়ার মধ্যকার প্রথম ওয়ানডে ম্যাচ।
১৯৮০ সালে প্রথম অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ওয়ানডে খেলেছিল নিউজিল্যান্ড। সেটি ছিল ত্রিদেশীয় সিরিজের ম্যাচ। এরপর ১৯৮৩ সালে আবারও ত্রিদেশীয় সিরিজে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ওয়ানডে খেলতে নেমেছিল তারা। ওই বছরই ত্রিদেশীয় সিরিজের বাইরে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে এক ম্যাচের একটি সিরিজ খেলেছিল কিউইরা, যেটি জিতেছিল।
দীর্ঘ বিরতির পর ২০০৪ সালে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে প্রথম চ্যাপেল-হ্যাডলি নামে দুই ম্যাচের দ্বিপাক্ষীক ওয়ানডে সিরিজ খেলে নিউজিল্যান্ড। সিরিজটি ড্র হয়েছিল। এরপর দু’দলের মধ্যে তিনটি দ্বিপাক্ষীক সিরিজ হয় সবগুলোতেই জিতেছে অস্ট্রেলিয়া।
২০২০ সালের ১৩ মার্চ সিডনিতে তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডে খেলেছিল অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড। করোনার কারণে ফাঁকা গ্যালারিতে অনুষ্ঠিত প্রথম ম্যাচটি ৭১ রানে জিতে নেয় অস্ট্রেলিয়া। ওই ম্যাচের পর আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বন্ধ হওয়ার উপক্রম হওয়ায় সিরিজটি স্থগিত করা হয়।
স্থগিত হওয়া সিরিজটি ২০২১ সালে কয়েকবারই আয়োজনের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয় দু’দেশের ক্রিকেট বোর্ড। ফলে ওই ম্যাচের পর আর কোনো ওয়ানডে খেলেনি অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড। করোনা পরিস্তিতির উন্নতি হওয়ায় অবশেষে তিন ম্যাচের সিরিজ খেলতে নামছে দেশ দুটি।
বিশ্বকাপ সুপার লিগের অংশ হওয়ায় সিরিজটি দু’দলের কাছেই সমান গুরুত্বপূর্ণ। সুপার লিগে এখন পর্যন্ত ১২ ম্যাচ খেলে ১১০ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের চতুর্থস্থানে নিউজিল্যান্ড। আর ১৫ ম্যাচে ৯০ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের সপ্তমস্থানে অস্ট্রেলিয়া।
সিরিজকে সামনে রেখে অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ বলেছেন, “সুপার লিগের অংশ হওয়ায় এ সিরিজের গুরুত্ব অনেক বেশি। নিজেদের সেরাটা দিয়ে সিরিজ জয়ের সাথে-সাথে সবগুলো ম্যাচই জিততে চাই। সিরিজে ১০ পয়েন্ট অনেক গুরুত্ব বহন করবে। এছাড়া নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ঘরের মাঠে আমাদের রেকর্ড খুবই ভালো। সেই রেকর্ড অক্ষুণ্ন রাখতে চাই।”
অন্যদিকে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে দীর্ঘদিন সিরিজ জিততে না পারার আক্ষেপ আছে নিউজিল্যান্ডের। তবে ২০১৭ সালে ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দুই ম্যাচের সিরিজ জিতেছিল নিউজিল্যান্ড। এবার সুপার লিগ গুরুত্ব বিবেচনায় এবং অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে সিরিজ জয়ের বন্ধ্যাত্ব ঘোচাতে মরিয়া নিউজিল্যান্ড।
অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন বলেছেন, “আমরা সুপার লিগের টেবিলে ভালো অবস্থায় আছি। তবে আমাদের অবস্থানকে আরও শক্ত করার সুযোগ থাকছে। এছাড়া, অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে দীর্ঘদিন সিরিজ জিততে না পারাটা দুঃখজনক। এবার আমরা সিরিজ জয়ের সুখস্মৃতি নিয়ে দেশে ফিরতে চাই।”
এখন পর্যন্ত ওয়ানডে ক্রিকেটে ১৩৮বার মুখোমুখি হয়েছে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড। এর মধ্যে জয়ের পাল্লা ভারী অসিদের। ৯২টি ম্যাচ জিতেছে তারা। আর ৩৯টি ম্যাচে জয় পেয়েছে নিউজিল্যান্ড। বাকি ৭টি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়েছে।
স্পোর্টসমেইল২৪/আরএস