তিন ম্যাচ সিরিজের শেষ ওয়ানডেতে হারলেই ২১ বছর পর স্বাগতিক জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে হোয়াইটওয়াশ হওয়ার লজ্জায় পড়তো বাংলাদেশ। এমন সমীকরণ নিজেদের ওয়ানডে ইতিহাসের ৪০০তম ম্যাচ খেলতে নেমেছিল টাইগাররা। এই ম্যাচে হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর লক্ষ্যে মাঠে নেমে ১০৫ রানের বড় জয় পেয়েছে বাংলাদেশ।
হারারেতে ২৫৬ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে শুরুটা মোটেও ভালো করেনি জিম্বাবুয়ে। আগের দুই ম্যাচে শুরুটা খারাপ হলেও স্বাগতিকরা ঘুরে দাঁড়িয়েছিল। তৃতীয় ম্যাচে সেই সুযোগ পায়নি, বরং বাংলাদেশি বোলারদের বোলিং তোপে মাত্র ১৫১ রানে গুটিয়েছে।
জিম্বাবুয়ের ইনিংসের প্রথম ওভারেই বল হাতে আঘাত হানেন হাসান মাহমুদ। ফিরে যান ওপেনার তাকুওয়ানাশে কাতিয়ানো। পরের ওভারেই ফেরেন আরেক ওপেনার তাদিওয়ানাশে মারুনামি। ৭ রানে দুই উইকেট হারিয়ে ফেলা জিম্বাবুয়ে হয়তো কক্ষপথে ফিরে আসবে এমনটাই ধারণা ছিল সবার।
কিন্তু বাংলাদেশি বোলারদের বোলিং তোপে ওয়েসলি মাধেব্রে ও সিকান্দার রাজা রানের খাতা খোলার আগেই ফেরেন। আগের দুই ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান রাজা এদিন শিকার হয়েছেন গোল্ডেন ডাকের।
৩১ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলা জিম্বাবুয়েকে এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চালান অভিষিক্ত ক্লাইভ মাদান্দে। ৪৫ বলে ২৪ রানের ইনিংস শুধু হারের ব্যবধানই কমিয়েছে।
ওই সময়ে তাকে সমর্থন দিয়ে দলের রানের চাকা সচল রাখার চেষ্টা করেছিলেন টনি মুনাওঙ্গা ও লুক জোঙ্গে। তা জিম্বাবুয়ের জয়ের জন্য মোটেও যথেষ্ট ছিল না।
১০ম উইকেট জুটিতে দারুণ এক জুটি গড়েন ভিক্টর নিয়াচি ও রিচার্ড এনগারাভা। এই দুইজন ৫৮ বলে গড়েন ৬৮ রানের জুটি। শেষ পর্যন্ত স্বাগতিকদের ইনিংস থামে ১৫১ রানে। এই দুই ব্যাটারের ব্যাট থেকেই আসে ম্যাচে জিম্বাবুয়ের সর্বোচ্চ রানের ইনিংস।
বাংলাদেশের হয়ে ১৭ রানে চার উইকেট শিকার করেন মোস্তাফিজুর রহমান। এছাড়াও দুইটি করে উইকেট শিকার করেন তাইজুল ইসলাম ও অভিষিক্ত ইবাদত হোসেন। একটি করে উইকেট নিয়েছেন হাসান মাহমুদ ও মেহেদি হাসান মিরাজ।
এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ভালো শুরুর আভাস দেন বাংলাদেশের দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও এনামুল হক বিজয়। তবে এনামুলের ভুলে তামিম প্যাভিলিয়নে ফিরলে দ্রুতই ভাঙে বাংলাদেশের টপ অর্ডার।
৪৭ রানে তিন উইকেট হারিয়ে ফেলা বাংলাদেশকে টেনে তোলার দায়িত্ব নেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও এনামুল হক বিজয়। ৭১ বলে ৭৬ রান করে এনামুল হক বিজয় ফিরলেও রিয়াদ ধীর লয়ে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চালান। তার ধীরে লয়ে এগিয়ে নেওয়া সেই ইনিংস বাংলাদেশকে বড় রান করতেই বাঁধা তৈরি করে।
শেষদিকে আফিফ হোসেব ধ্রুবর ৮১ বলে ৮৫ রানের ইনিংস ভর করে শেষ পর্যন্ত আড়াইশো রানের কোটা পার করে বাংলাদেশ। জিম্বাবুয়েকে জয়ের জন্য লক্ষ্য দেয় ২৫৭ রানের।
তবে বাংলাদেশি বোলারদের বোলিং তোপে আড়াই’শ রানের এই সংগ্রহই তাদের জন্য পাহাড়সম হয়ে দাঁড়ায়। এতেই বাংলাদেশকে হোয়াইটওয়াশ করতে ব্যর্থ হয় জিম্বাবুয়ে।
২০০১ সালে সর্বশেষ নিজেদের ঘরের মাঠে জিম্বাবুয়ের কাছে ওয়ানডেতে হোয়াইটওয়াশ হয় বাংলাদেশ। একই বছর দেশটি সফরে প্রথমবারের মতো তাদের কাছে হোয়াইটওয়াশ হয়। ২০১৩ সালের পর প্রথমবারের মতো জিম্বাবুয়ের কাছে ওয়ানডে সিরিজ হারালো বাংলাদেশ।
স্পোর্টসমেইল২৪/পিপিআর