নিজেদের সেরা ফরম্যাট ওয়ানডে ক্রিকেটে যেকোনো দলকে হারানোর সক্ষমতা রাখে বাংলাদেশ। তবে এবার যেন ভিন্ন এক জায়গায় দাঁড়িয়ে রয়েছে তামিম ইকবালের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ। ইতিমধ্যে সিরিজে হেরে স্বাগতিক জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশ এখন হোয়াইটওয়াশের সামনে। সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচটিতে হারলেই তৃতীয়বারের মতো হোয়াইওয়াশ হওয়ার লজ্জা পাবে বাংলাদেশ।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম দুই ম্যাচ হেরে সিরিজ হারানো বাংলাদেশ বুধবার (১০ আগস্ট) তৃতীয় ও শেষ ম্যাচ খেলতে নামবে। এ ম্যাচে বাংলাদেশের একটাই লক্ষ্য। ২১ বছর পর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে আবারও যেন লজ্জাজনক হোয়াইটওয়াশের স্মৃতি ফিরে না আসে। শেষ ম্যাচটি জয় দয়ে হলেও যেন হোয়াইটওয়াশ এড়ানো যায়।
সিরিজের প্রথম দুই ওয়ানডে ম্যাচেই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৫ উইকেটের ব্যবধানে হারের স্বাদ পেয়েছে বাংলাদেশ। ফলে ২০০১ সালের পর আবারও জিম্বাবুয়ে কাছে হোয়াইটওয়াশের মুখে পড়েছে টাইহাররা। তবে নিশ্চিতভাবেই হোয়াইটওয়াশের এমন তিক্ত স্বাদ আর নিতে চাইবে না বাংলাদেশ। তবে টানা হারের মধ্যে থেকে মানসিকভাবে ভেঙে পড়া বাংলাদেশের জন্য কাজটি যে খুব সহজ হবে না তা ভালো করেই জানেন অধিনায়ক তামিম ইকবাল।
ওয়ানডে ফরম্যাটের ইতিহাসে এর আগে দু’বার জিম্বাবুয়ের কাছে হোয়াইটওয়াশ হয়েছিল বাংলাদেশ। ২০০১ সালে প্রথম দুটি দ্বিপাক্ষীক সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হয়েছিল টাইগাররা। এরপর পূর্ণ শক্তির জিম্বাবুয়ে আর কখনও বাংলাদেশকে হোয়াইটওয়াশ করতে পারেনি। তবে জিম্বাবুয়ের উপর আধিপত্য বিস্তার করে খেলেছে বাংলাদেশ। যা কোন দলই কোন প্রতিপক্ষের সাথে পারেনি।
চলমান সিরিজের আগে ১৮টি দ্বিপাক্ষিক ওয়ানডে সিরিজ খেলেছে বাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়ে। এর মধ্যে ১২টিতে জয় এবং ৬টি হার টাইগারদের। আর চলমান সিরিজ জিতে জয়ের সংখ্যাটা ৭-এ উন্নীত করেছে জিম্বাবুয়ে।
এদিকে, এ সিরিজ হারের আগে আফ্রিকান প্রতিপক্ষের বিপক্ষে টানা পাঁচটি সিরিজ জিতেছে বাংলাদেশ। পাঁচটি সিরিজের সবকটিতেই জিম্বাবুয়েকে হোয়াইটওয়াশ করেছিল টাইগাররা। ফলে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টানা ১৯ ম্যাচে জয়ের নজির গড়ে বাংলাদেশ।
২০১৩ সালে সর্বশেষ জিম্বাবুয়ের কাছে ম্যাচ ও সিরিজ হেরেছিল বাংলাদেশ। ৯ বছর পর এসে চলমান সিরিজে জয়ের স্বাদ নিল জিম্বাবুয়ে। সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচে জিম্বাবুয়ের তিন ব্যাটার চারটি সেঞ্চুরি করেন। এর মধ্যে দু’টি ছিল সিকান্দার রাজার।
ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদের মতে, বাংলাদেশ দলের সিনিয়রা বড় ইনিংস খেলতে না পারায় ভুগতে হচ্ছে। হারারেতে ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে ৩৩০ রানও নিরাপদ নয়। প্রথম ম্যাচে ৩০৩ রান করেও ম্যাচ হারে বাংলাদেশ। ৮৮ বলে ৬২ রান করেন তামিম। ৪৯ বলে ৫২ রান করেন মুশফিক। অন্য দু’টি হাফ সেঞ্চুরি ছিল লিটন দাস ও আনামুল হকের।
দ্বিতীয় ম্যাচে তামিম করেন ৪৫ বলে ৫০ রান। তবে এর মধ্যে ৩৪ বলই ডট দেন তামিম। এছাড়া ৮৪ বলে ৮০ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তবে দুটি ম্যাচে বাজে বোলিং এবং ফিল্ডিংয়ে হেরে যায় বাংলাদেশ।
এদিকে, ইনজুরিতে পড়া ছাড়াও হোয়াইটওয়াশ এড়াতে একাদশে কিছু পরিবর্তন আনতে পারে টাইগাররা। পেসার শরিফুল ইসলামের জায়গায় একাদশে সুযোগ হতে পারে আরেক পেসার ইবাদত হোসেনের। দ্বিতীয় ম্যাচের আগে তাকে ঢাকা থেকে উড়িয়ে নেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ দল
তামিম ইকবাল (অধিনায়ক), এনামুল হক বিজয়, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, আফিফ হোসেন, মেহেদি হাসান মিরাজ, নাসুম আহমেদ, তাসকিন আহমেদ, মোহাম্মদ নাঈম, ইবাদত হোসেন, শরিফুল ইসলাম, মোস্তাফিজুর রহমান, হাসান মাহমুদ, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ও তাইজুল ইসলাম।
জিম্বাবুয়ের দল
রেগিস চাকাভা (অধিনায়ক), তানাকা চিভাঙ্গা, লুক জংওয়ে, ইনোসেন্ট কাইয়া, ওয়েসলে মাধভের, তাদিওয়ানশে মারুমানি, ওয়েলিংটন মাসাকাদজা, টনি মুনিয়োঙ্গা, রিচার্ড এনগারাভা, ভিক্টর নিয়ুচি, সিকান্দার রাজা, মিল্টন শুম্বা ও সিন উইলিয়ামস।
স্পোর্টসমেইল২৪/আরএস