ব্যাটার-বোলারদের নৈপুন্যে বৃষ্টি বিঘ্নিত দ্বিতীয় ওয়ানডেতে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ১১৮ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়েছে ইংল্যান্ড। ওয়ানডে ক্রিকেটে রান বিবেচনায় দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ব্যবধানের এই জয়ে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে ১-১ ব্যবধানে সমতায় ফিরলো ইংল্যান্ড।
ম্যানচেস্টারে বৃষ্টির কারণে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডের পরিধি কমে ২৯ ওভারে নির্ধারিত হয়। রান তাড়া করার লক্ষ্যে টস জিতে বোলিংয়ে নামে দক্ষিণ আফ্রিকা। ইনিংসের তৃতীয় ওভারেই প্রোটিয়াদের সাফল্য এনে দেন পেসার এনরিখ নরকিয়া। ইংল্যান্ডের ওপেনার জেসন রয়কে ১৪ রানে ফেরান নরকিয়া।
শুরুর ধাক্কা সামলে উঠার চেষ্টা করেন আরেক ওপেনার জনি বেয়ারস্টো ও তিনে নামা ফিল সল্ট। ২২ বলে ৩০ রানের জুটিও গড়েন তারা। ১০ বলে ১৭ রান করা সল্টকে থামিয়ে এই জুটি ভাঙেন পেসার ডোয়াইন প্রিটোরিয়াস।
সল্টকে শিকারের পর দ্রুত আরও ২ উইকেট নেন প্রিটোরিয়াস। তার শিকার হয়ে বেয়ারস্টো ২৮ ও জো রুট ১ রানে থামেন। এরপর উইকেট শিকারে নাম লেখান দুই স্পিনার কেশব মহারাজ ও তাবরাইজ শামসি।
মঈন আলিকে ৬ রানে মহারাজ ও ইংলিশ অধিনায়ক জস বাটলারকে বিদায় দেন শামসি। ফলে ১৮ ওভারে ১০১ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে ইংল্যান্ড।
আরও পড়ুন- ক্রিকেটাররা গাড়ি নয়, যে জ্বালানী দিলেই চলবে: বেন স্টোকস
দলকে চাপমুক্ত করতে সপ্তম উইকেটে মারমুখী হয়ে উঠেন লিয়াম লিভিংস্টোন ও স্যাম কারান। দুই ওভারে কারানের দুই ছক্কার পর, তেতে উঠেন লিভিংস্টোন। নরকিয়ার করা ২১তম ওভারের প্রথম তিন বলেই ছক্কা মারেন লিভিংস্টোন। চতুর্থ বলকে মাটির স্পর্শে সীমানা ছাড়া করেন। তবে পঞ্চম বলে আউট হওয়ার আগে ২৬ বলে ৩৮ রান করেন ডানহাতি লিভিংস্টোন। কারানের সাথে ২১ বলে ৪৩ রানের জুটি গড়েন লিভিংস্টোন।
সতীর্থকে হারালেও, মারমুখী ছিলেন কারান। তাই লড়াই করার পুঁজি পাবার স্বপ্ন দেখে ইংল্যান্ড। তবে ২৪তম ওভারে থামতে হয় কারানকে। ১৮ বলে ২টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৩৫ রান করেন তিনি।
কারানের আউটের পর শেষ তিন ব্যাটারের দৃঢ়তায় ২০১ রানের সংগ্রহ পায় ইংল্যান্ড। ইনিংসের পাঁচ বল বাকি থাকতে অলআউট হয় ইংলিশরা। শেষদিকে ডেভিড উইলি ২১, আদিল রশিদ ১২ রান করেন। দক্ষিণ আফ্রিকার প্রিটোরিয়াস ক্যারিয়ার সেরা ৩৬ রানে ৪ উইকেট নেন।
সিরিজ জয় নিশ্চিত করতে ২০২ রানের টার্গেট পায় দক্ষিণ আফ্রিকা। জবাব দিতে নেমে উইলি ও রিচ টপলির বোলিং তোপে পড়ে প্রোটিয়ারা। চতুর্থ ওভারে ৬ রানেই ৪ উইকেট হারায় দক্ষিণ আফ্রিকা। জানেমান মালান ও আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান রাসি ভ্যান ডার ডুসেনকে খালি হাতে বিদায় করেন টপলি। আর জানেমান মালানকে ৫ রানে শিকার করেন উইলি। রান আউটের ফাঁদে পড়েন কোনো রান না করেই ফিরেন এইডেন মার্করাম।
শুরুর বিপদ কাটিয়ে উঠতে চেষ্টা করেছিলেন হেনরিখ ক্লাসেন। পঞ্চম উইকেটে ডেভিড মিলারের সাথে ২১ ও ষষ্ঠ উইকেটে প্রিটোরিয়াসের সাথে ৩৯ রান তুলেন। কিন্তু আদিল রশিদের স্পিন বিষে দ্রুতই শেষ চার হারায় প্রোটিয়ারা। ফলে ২০ দশমিক ৪ ওভারে মাত্র ৮৩ রানে অলআউট হয় তারা। শেষ চার উইকেটের তিনটিই নিয়েছেন রশিদ।
নিজেদের ওয়ানডে ইতিহাসে যৌথভাবে দ্বিতীয় সর্বনিম্ন রানে গুটিয়ে গেল প্রোটিয়ারা। আর ইংল্যান্ডের বিপক্ষেও এটি যৌথভাবে সর্বনিম্ন রান দক্ষিণ আফ্রিকার। এর আগে ২০০৮ সালে নটিংহ্যামে ৮৩ রানে গুটিয়ে গিয়েছিলো প্রোটিয়ারা।
দক্ষিণ আফ্রিকার ক্লাসেন সর্বোচ্চ ৩৩ রান করেন। ইংল্যান্ডের রশিদ ৩টি, টপলি-মঈন ২টি করে উইকেট নেন।
স্পোর্টসমেইল২৪/পিপিআর