ব্যাট হাতে বাবর আজম দিন দিন অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠছেন। টানা ছয় ম্যাচে অর্ধশতক পার করা বাবর অবশেষে ব্যর্থ হলেন। অধিনায়কের ব্যার্থতার দিনে ঢাল হয়ে দাঁড়িয়েছেন শাদাব। ব্যাটে-বলে দুর্দান্ত শাদাবে ভড় করে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৫৩ রানে হারিয়ে ৩-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ করেছে পাকিস্তান।
রোববার (১২ এপ্রিল) সিরিজের ৩য় ম্যাচে পাকিস্তানের মুলতান স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হয়েছিল পাকিস্তান ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ। আগেই সিরিজ নিশ্চিত করা পাকিস্তান এদিন মাঠে নেমেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হোয়াইটওয়াশের লক্ষ্যে। তবে এই ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে মৃদু ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে পাকিস্তান।
শাদাব খান যখন ব্যাটিং করতে আসেন তখন রিতীমতো ব্যাটিং ধ্বস নেমেছে পাকিস্তানের। ৮৫ রানের উদ্বোধনী জুটির পর মাত্র ৩২ রানের ব্যবধানে পাঁচ উইকেট হারায় পাকিস্তান। যাদের মধ্যে ছিলেন ব্যাট হাতে দুর্দান্ত সময় কাটানো পাকিস্তান অধিনায়ক বাবর আজমও।
ওপেনিংয়ে টানা সপ্তম ইনিংসে অর্ধশতক পেরোনো ইনিংস খেলেন ইমাম উল হক। ব্যাট হাতে খুব একটা ছন্দে না থাকা ফখর জামানও এদিন ভালোই খেলছিলেন। দুজনের ৮৫ রানের জুটি ভাঙতেই চিত্রনাট্যে আবিভার্ব ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক নিকোলাস পুরানের।
বাবর-নওয়াজের নৈপুণ্যে ওয়ানডে সিরিজ পাকিস্তানের
ফখর জামানকে বোল্ড করে শুরু, এরপর নিয়েছেন আরও তিনটি উইকেট। আন্তর্জাতিক ম্যাচে এর আগে মাত্র তিন বল করা পুরান এদিন ১০ ওভার বল করে মোহাম্মদ হারিস, মোহাম্মদ রিজওয়ান ও ইমাম উল হককে ফিরিয়ে পাকিস্তানের ব্যাটিং লাইন আপে ধ্বস নামান।
তবে বিপদের দিনে পাকিস্তানের ত্রাতা হয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন অলরাউন্ডার শাদাব খান। ব্যাটিং ধ্বসের মুখে নেমে দ্বিতীয় বলেই ছয় মেরে নিজের আগমনী বার্তা দিয়ে দেন। সঙ্গী খুশদিলকে নিয়ে প্রাথমিক বিপর্যয় সামাল দিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের উপর পাল্টা আক্রমণ চালান এই অলরাউন্ডার।
৮৪ রানের জুটি গড়ার পর খুশদিল ৩৪ রান করে ফিরে গেলেও অন্য প্রান্তে অবিচল ছিলেন শাদাব। ৬২ বলে ৫৬ রান থেকে জেইডেন সিলসের বলে ফেরার আগে ৭৮ বলে বলে ৮৬ রান করেন তিনি। শেষ ১৬ বলে তার ব্যাট থেকে আসে ৩০ রান। শাদাবের ইনিংসেই লড়াই করার মতো পুঁজি পায় পাকিস্তান। ম্যাচের মাঝখানের ধূলি ঝড়ের কারণে ম্যাচ নেমে এসেছিল ৪৮ ওভারে।
হোয়াইটওয়াশ এড়াতে ২৬৯ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নামে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ব্যাট হাতে পুরানের দলকে দুঃস্বপপ্ন উপহার দেওয়া শাদাব বোলিংয়েও ওয়েস্ট ইন্ডিজের সামনে প্রধান বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছেন।
পাকিস্তান এদিন একাদশের নিয়মিত সদস্য শাহিন শাহ আফ্রিদি ও হারিস রউফকে বিশ্রাম দিয়েছিল। তাদের জায়গায় একাদশে সুযোগ পান হাসান আলী ও শাহনওতাজ দাহানি। অভিষেক ম্যাচেই পাকিস্তানকে প্রথম ব্রেক থ্রু এনে দেন দাহানি।
পাকিস্তানের মতো ওয়েস্ট ইন্ডিজও ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়েছিল। তবে ৯৩ রানে পাঁচ উইকেট হারিয়ে ফেলা ওয়েস্ট ইন্ডিজকে বাঁচানোর জন্য ছিল না কোনো ‘শাদাব খান।’ শাদাব খান তখন পাকিস্তানের হয়ে বল হাতে উইকেট নিতে ব্যস্ত। একে একে চার ওয়েস্ট ইন্ডিজ ব্যাটারকে ফিরিয়ে পাকিস্তানের হোয়াইটওয়াশ নিশ্চিত করেন এই অলরাউন্ডার।
শেষ দিকে আকিল হোসাইনের ঝড়ো ব্যাটিং স্বপ্ন দেখাচ্ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। মাত্র ৩৭ বলে ৬০ রান করা আকিল সঙ্গী হিসেবে কাউকে পাননি। চিন্তার কারণ হয়ে ওঠা আকিলকে ফেরান স্বপ্নময় দিন কাটানো শাদাদ খান।
চার উইকেট পাওয়া শাদাবের সামনের ছিল পাঁচ উইকেট পাওয়ার সম্ভবনাও। যদিও হাসান আলী শেষ উইকেট তুলে নিলে পাঁচ উইকেট আর পাওয়া হয়নি শাদাবের। তবে ব্যাটে-বলে যে দিন তিনি কাটিয়েছেন তাতেই তার সন্তষ্ট থাকার কথা।
তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে কোনো ম্যাচেই পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বীতা গড়তে পারেনি ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ধবল্ধোলাই দিয়েই অধিনায়কত্বের যাত্রা শুরু হলো নতুন ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক নিকোলাস পুরানের। অধিনায়ক হিসেবে নিশ্চয়ই এমন শুরু চাননি পুরান।
স্পোর্টসমেইল২৪/এসকেডি