ম্যাচের ২৪ ঘণ্টা আগে করোনা ও ইনজুরিতে হতাশায় পড়েছিল ক্রিকেট অস্টেলিয়া। তবে চার বছর পর ওয়ানডে দলে সুযোগ পেয়েই দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে দলের বড় সংগ্রহের ভিত গড়ে দেন বাঁ-হাতি ব্যাটার ট্রাভিস হেড। জবাবে ইমাম-উল-হকও সেঞ্চুরি হাঁকালেও বাকি ব্যাটারদের ব্যর্থতায় পাকিস্তানকে নিতে হয়েছে হারের স্বাদ। ফলে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেছে অজিরা।
মঙ্গলবার (২৯ মার্চ) টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেয় পাকিস্তানের অধিনায়ক বাবর আজম। ফলে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ৫০ ওভারে ৭ উইকেটে ৩১৩ রানের বড় সংগ্রহ গড়ে অস্ট্রেলিয়া। ব্যাট হতে ৭২ বলে ১০১ রান করেন হেড।
৩১৪ রানের বিশাল লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ইমাম উল হকের সেঞ্চুরি স্বত্ত্বেও ২২৫ রানের বেশি করতে পারিনি পাকিস্তান। ৪৫.২ ওভারে অলআউট হয়ে যায় স্বাগতিকরা।
ইনজুরি ও করোনা হানার মধ্যেই একাদশ সাজায় অস্ট্রেলিয়া। ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে করোনার কারণে দল থেকে ছিটকে গেছেন জশ ইংলিশ ও অ্যাস্টন আগার। ফলে ১৩ জনের স্কোয়াড থেকেই একাদশ সাজাতে হয়েছে অস্ট্রেলিয়ার।
প্রথমে ব্যাট করতে নেমে দলের মধ্যে চলা কঠিন পরিস্থিতি বুঝতে দেননি অস্ট্রেলিয়ার দুই ওপেনার ট্রাভিস হেড ও অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ। ইনিংসের শুরু থেকেই পাকিস্তানের বোলারদের উপর চড়াও হন হেড। মাত্র ৩২ বলে হাফ-সেঞ্চুরি করেন তিনি। হেডের ব্যাটিং দৃঢ়তায় ১৪তম ওভারে শতরানে পৌঁছায় অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস।
১৫তম ওভারে অস্ট্রেলিয়ার উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন পাকিস্তানের অভিষিক্ত ক্রিকেটার জাহিদ মাহমুদ। ৩৬ রান করা ফিঞ্চকে থামান লেগ-স্পিনার জাহিদ। ১১০ রানের প্রথম উইকেট পতনের পর অস্ট্রেলিয়ার রানের চাকা ঘুড়িয়েছেন হেড ও বেন ম্যাকডারমট। এ জুটি ৬২ বলে ৬১ রান যোগ করেন।
৭০ বলে সেঞ্চুরি করেন নেন হেড। ৪৩ ম্যাচের ওয়ানডে ক্যারিয়ারে দ্বিতীয়বারের মত সেঞ্চুরি করেন হেড। সেঞ্চুরি পূর্ণ হওয়ার পরপরই আউট হন হেড। পেসার ইফতেখার আহমেদের বলে আউট হওয়া হেড ৭২ বলে ১২টি চার ও ৩টি ছক্কায় ১০১ রান করেন। তবে হেডের দেখানো পথে হেঁটে অস্ট্রেলিয়াকে বড় সংগ্রহের ভিত গড়ে দেন দলের পরের দিকের ব্যাটাররা। ম্যাকডারমট ৭০ বলে ৫০, মার্নাস লাবুশেন ২৫ ও মার্কাস স্টয়নিস ২৬ রান করেন।
শেষ দিকে ক্যামেরুন গ্রিনের ৩০ বলে অপরাজিত ৪০ রান অস্ট্রেলিয়াকে বড় স্কোর পেতে সহায়তা করে। ইনিংসে ৩টি চার ও ১টি ছক্কা মারেন গ্রিন। ৫০ ওভারে ৭ উইকেটে ৩১৩ রান পায় অসিরা। পাকিস্তানের হারিস রউফ-জাহিদ ২টি করে এবং ইফতেখার-খুশদিল শাহ ১টি করে উইকেট নেন।
৩১৪ রানের জবাবে ভালো শুরু করতে না পারলেও ওপেনার ইমাম ও অধিনায়ক বাবর আজম দলকে লড়াইয়ে রাখেন। দ্বিতীয় উইকেটে ১১৮ বলে ৯৬ রান যোগ করেন তারা। ৭২ বলে ৫৭ রান করে ফিরেন বাবর। দলের সতীর্থরা সঙ্গ দিতে না পারলেও এক প্রান্ত আগলে রেখে সেঞ্চুরি তুলে নেন ইমাম।
৯২ বলে সেঞ্চুরির স্বাদ পান তিনি। ৩৯তম ওভারে ইমামকে আউট করেন অস্ট্রেলিয়ার পেসার নাথান এলিস। ৯৬ বলে ৬টি চার ও ৩টি ছক্কায় ১০৩ রান করেন ইমাম। ইমামের আউটের পর পাকিস্তানকে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে নিতে পারেননি দলের কোন ব্যাটারই।
ইনিংসের ২৮ বল বাকি থাকতে ২২৫ রানে গুটিয়ে যায় পাকিস্তান। অস্ট্রেলিয়া স্পিনার এডাম জাম্পা ৩৮ রানে ৪ উইকেট নেন। ম্যাচ সেরা হয়েছেন সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে দলের বড় সংগ্রহের ভিত গড়ে দেওয়া অস্ট্রেলিয়ার ট্রাভিস হেড।
স্পোর্টসমেইল২৪/আরএস