দলীয় ৪৫ রানে ৬ উইকেটের পতন। সাকিব আল হাসান (১০) ছাড়া টপ অর্ডারের বাকি পাঁচ ব্যাটার ছিলেন সিঙ্গেল ডিজিটে। শুরুতেই দলের এমন বিপর্যয়ে ব্যাট হাতে বিশ্ব রেকর্ড গড়ে দলকে দুর্দান্ত এক জয় উপহার দিলেন আফিফ হোসেন ধ্রুব এবং মেহেদী হাসান মিরাজ। এ জয়ে আফগানিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচ সিরিজে ১-০তে এগিয়ে গেল বাংলাদেশ।
প্রথমে ব্যাট করে আফগানিস্তানের ছুঁড়ে দেওয়া ২১৬ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ৪৫ রানেরই ছয় উইকেটে হারায় বাংলাদেশ। এরপর আফিফ-মিরাজের অপরাজিত ১৭৪ রানের জুটিতে ৭ বল বাকি থাকতেই ৪ উইকেটে জয় তুলে নেয় বাংলাদেশ। যা ক্রিকেট ইতিহাসে ৫০ রানের নিচে ছয় উইকেট হারানোর পর সপ্তম উইকেট জুটিতে এটি সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড।
জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে তুলনামূলক স্বল্প রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ইনিংসের তৃতীয় ওভারে প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ৮ বল খেলে ১ রান করা ওপেনার লিটন দাস সাজঘরে ফিরলে দলীয় ১৩ রানে উদ্বোধনী জুটি ভাঙে। লিটন ফেরার পর ওই ওভারেই (২.৫) অপর ওপেনার ও অধিনায়ক তামিম ইকবালকে ফেরান ফজল হক ফারুকি। ফলে দলীয় ১৪ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
পর পর দুই উইকেট হারানোর পর পঞ্চম ওভারের প্রথব বলে মুশফিকুর রহীম (৩), একই ওভারের শেষ বলে অভিষেখ হওয়া খালি হাতে ইয়াসির আলি রাব্বি (০), অষ্টম ওভারের চতুর্থ বলে সাকিব আল হাসান (১০) এবং ১২তম ওভারের দ্বিতীয় বলে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ (৮) সাজঘরে ফিরলে দলীয় ৪৫ রানে ষষ্ঠ উইকেট হারিয়ে বসে বাংলাদেশ।
ফজল হক ফারুকির চার উইকেট এবং মুজির উর রহমান ও রশিদ খানের একটি উইকেট শিকারে দলের এমন বিপর্যয়ের পর ব্যাট হতে হাল ধরেন আফিফ হোসেন ধ্রুব এবং মেহেদী হাসান মিরাজ। সপ্তম উইকেট জুটিতে অপরাজিত ১৭৪ রানের ইনিংস খেলে দলকে দুর্দান্ত এক জয় উপহার দেন তারা দু’জন।
আফিফ ১১৫ বল খেলে ১১টি চার ও এক ছক্কায় অপরাজিত ৯৩ এবং ১২০ বল খেলে ৯টি চারের মারে অপরাজিত ৮১ রান করেন মেহেদী হাসান মিরাজ। তাদের দুজনের ১৭৪ রানের জুটিটি ক্রিকেট ইতিহাসে একটি রেকর্ড গড়েছে।
৫০ রানের নিচে ছয় উইকেট হারানোর পর সপ্তম উইকেট জুটিতে এটিই সবচেয়ে বেশি রানের জুটি। এ জুটিতে আর মাত্র ৪টি রান যুক্ত হলেই সপ্তম উইকেট জুটিতে সবদিকে দিয়ে সর্বোচ্চ রানের বিশ্ব রেকর্ড গড়তো আফিফ-মিরাজের ব্যাট। তবে তার আগেই জয় নিশ্চিত হওয়ায় অপরাজিত থেকেও সেটি আর সম্ভব হয়নি।
দলের এমন দুর্দান্ত জয়ে ম্যাচ সেরা হয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। আফিসের চেয়ে রান কম হলেও ১০ ওভার বল করে তিন মেডেনে দিয়েছিলেন মাত্র ২৮ রান। ব্যাট-বলে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের কারণে তা হাতেই উঠেচে ম্যাচ সেরা পুরস্কার। আর আফিফকে দেওয়া হয়েছেন ‘মোস্ট ভ্যালুয়েবল প্লেয়ার’র পুরস্কার।
এর আগে ৪৯ দশমিক ১ ওভারে অলআউট হওয়ার আগে ২১৫ রান সংগ্রহ করে আফগানিস্তান। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৬৭ রান করেন নাজিবুল্লাহ জাদরান। ৮৪ বল খেলে ৪টি চার ও ২টি ছক্কা মারেন তিনি। বাংলাদেশের পক্ষে মোস্তাফিজ ৩৫ রানে ৩টি এবং তাসকিন-সাকিব-শরিফুল ২টি করে উইকেট শিকার রেন। ১ ওভার বল করে ১ উইকেট নিয়েছিলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।
এদিকে, এ জয়ে বিশ্বকাপ সুপার লিগে ১৩ খেলায় ৯ জয় ও ৪ হারে ৯০ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে উঠলো বাংলাদেশ।১৫ ম্যাচে ৯৫ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলে সবার রয়েছে ইংল্যান্ড। আর ৭ ম্যাচে ৬ জয় ও ১ হারে ৬০ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের ষষ্ঠস্থানে আফগানিস্তান। সুপার লিগে এটাই আফগানদের প্রথম হারের স্বাদ।
স্পোর্টসমেইল২৪/আরএস
[আমরা এখন sportsmail.com.bd ঠিকানাতেও। খেলাধুলার সর্বশেষ সংবাদ পড়তে ইনস্টল করুন আমাদের অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল অ্যাপস ]