দুই দলের বিশ্বকাপ আগেই নিশ্চিত হয়ে গেছে। ছিল না ছিটকে যাওয়ার ভয়। তবুও যা হলো তা অবিশ্বাস্য। গেইলদের (ওয়েস্ট ইন্ডিজ) হারিয়ে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের চ্যাম্পিয়ন হলো আফগানরা।
রোববার দল দুটির লড়াই ছিল বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে এক নম্বর হওয়ার। সেখানে গেইল-মারলন স্যামুয়েলস-জেসন হোল্ডারদের পাত্তাই দিল না আফগান বাহিনী। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৭ উইকেটের জয তুলে নিয়ে বিশ্ব ক্রিকেটে নিজেদের আবার জানান দিল আফগানিস্তান।
হারারে স্পোর্টস ক্লাব মাঠে এদিন ব্যর্থই ছিলেন গেইল-স্যামুয়েলসরা। আগে ব্যাট করতে নেমে রশিদ খানের ওয়ানডেতে দ্রুততম ১০০ উইকেট পাওয়ার বিশ্ব রেকর্ডের দিনে ২০৪ রানেই অলআউট হয়ে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ১৯ বল বাকি থাকতে গুটিয়ে যায় দুবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। জবাবে ৯.২ ওভার হাতে রেখে মাত্র ৩ উইকেট হারিয়ে জয় তুলে নেয় আফগানিস্তান।
জিম্বাবুয়েতে পুরো বিশ্বকাপ বাছাই পর্বটাই ছিল রোমাঞ্চকর। শুরুতে ফেভারিটের তকমা পেলেও আফগানদের পথ চলাটা সুখকর ছিল না। বলতে গেলে ভাগ্যের সহায়তাই তাদের বিশ্বকাপের মূলপর্বের টিকেট এনে দিয়েছে। তবে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে এত দূর আসা আফগানরা শেষ ম্যাচে আরও একবার চমক দেখালো।
২০৪ রানে ওয়েস্ট ইন্ডিজের অলআউট হওয়ার ম্যাচে মুজিব উর রহমান তার শেষ ওভারে তিন উইকেট নিয়ে উইন্ডিজের রানের লাগাম টেনে ধরেন। তিনি নেন সর্বোচ্চ ৪ উইকেট। দুটি গুলবাদিন নাইব এবং একটি করে উইকেট নেন দৌলত জাদরান, সরাফউদ্দিন আশরাফ ও রশিদ খান।
বল হাতে এক উইকেট নিলেও এ দিন ইতিহাসে নাম লিখিয়েছেন রশিদ খান। সব চেয়ে কম ম্যাচ ও কম বয়সে আন্তর্জাতিক ওয়ানডেতে শততম উইকেট নেয়ার রেকর্ড করেছেন তিনি। ৪৪ ম্যাচেই নিলেন ১০০ উইকেট।
সহজ লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে আফগানিস্তানের শুরুটাও হয় দারুণ। ৯.৪ ওভারে ৫৮ রান তুলে বিচ্ছিন্ন হয় ওপেনিং জুটি। তাতে অবদানটা মোহাম্মদ শাহজাদেরই বেশি। এ সময় ১৭ রান করে আউট হন গুলবদিন নায়েব। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে রহমত শাহকে নিয়ে ৯০ রান তোলেন শাহজাদ। যদিও ১৪ রানের জন্য সেঞ্চুরি হাতছাড়া হয় তার। ৮৪ রান করে গেইলের শিকার হন।
পরে ৫১ রান করা রহমতকেও ফেরান গেইল। তবে দুই সেট ব্যাটসম্যান ফিরে গেলেও জয় পেতে কোনো বেগ পেতে হয়নি আফগানদের। ৩৬ রানের জুটি গড়ে ম্যাচ শেষ করেন মোহাম্মদ নবী ও সামিউল্লাহ শেনওয়ারি। নবী মাত্র ১২ বলে ২৭ রান আর শেনওয়ারি ২০ রানে অপরাজিত থাকেন। ম্যাচ সেরার পুরস্কার পেয়েছেন ৮৪ রান করা মোহাম্মদ শাহজাদ।
বাছাইপর্ব শুরুর আগে প্রস্তুতি ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়েছিল আফগানিস্তান। সুপার সিক্স ম্যাচেও দুই দলের দেখায় জিতেছিল আফগানরা। আর ফাইনাল শেষে পুরো টুর্নামেন্টটাই রাঙিয়ে রাখলো আফগানিস্তান। এ দেখার অপেক্ষায় বিশ্বকাপের মূল পর্বে আর কী অঘটন জন্ম দেয় ক্রিকেটর এ নতুন শক্তি হয়ে ওঠে আসা আফগান বাহিনী।