ওপেনার লিটন কুমার দাসের সামর্থ্য কিংবা ট্যাকনিক কোনোটা নিয়েই কোনো প্রশ্ন ছিল না। তবে নিজের সে সামর্থ্যের প্রমাণ কতদিন দিতে পেরেছেন লিটন? সর্বশেষ কয়েক ম্যাচের ধারাবাহিকতায় আবারও ব্যাট হাতে ব্যর্থতার মিছিলে নাম লেখালনে তিনি! ঘরের মাঠে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে খালি হাতেই ফিরেছেন সাজঘরে। ব্যাট হাতে ৩ বল খেললেও কোন রান করতে পারেননি তিনি।
তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ম্যাচে টসে জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ কাপ্তান তামিম ইকবাল। ব্যাটিংয়ে নেমেই লিটন দাসকে যেন প্যাভিলিয়নে ফেরার এক অদৃশ্য কিছু তাড়া করছিলো। দুশমন্থ চামিরার করা বলে স্লিপে দাঁড়ানো ধনঞ্জয়া ডি সিলভাকে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন লিটন।
শনিবার (২২ মে) কোচ রাসেল ডোমিঙ্গো জানিয়েছিলেন সৌম্য লিটনের থেকে বড় ইনিংস আশা করেন তিনি। তবে প্রথম ওয়ানডেতে কোচের সে আস্থার প্রতিদান দিতে পারেননি লিটন দাস। মাত্র তিন বল খেলেই রানের খাতা খোলার আগেই ফিরেছেন তিনি।
পরিসংখ্যান দেখলে মনে হবে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডের আগে সর্বশেষ ১০ ওয়ানডেতে বেশ ভালো পারফর্ম করেছেন লিটন। তবে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজে সিলেটে দুই সেঞ্চুরি ছাড়া বলার মত কোনো পারফর্ম করতে পারেননি তিনি। জানান দিয়েছিলেন এবার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিয়মিত পারফর্মার হয়ে উঠবেন। কিন্তু তা আর বাস্তবায়ন করে উঠতে পারেননি।
করোনা পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের খেলা ছয় ওয়ানডেতেই তামিমের ওপেনিং পার্টনার ছিলেন লিটন। এ সময়ের মধ্যে সেঞ্চুরি তো দূরে থাক একবারও কোনো হাফ সেঞ্চুরি করতে পারেননি তিনি। ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং নিউজিল্যান্ড সিরিজে ছয় ম্যাচে ৭৬ রান করেছেন লিটন, আর গড় সে তো ১২.৬৭। এর মধ্যে শুন্য রানে প্যাভিলিয়নে ফিরেছেন দুই বার।
রোববার (২৩ মে) শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম ম্যাচসহ করোনা পরবর্তী সময়ে সাত ওয়ানডে খেলে ১০.৮৬ গড়ে করেছেন ৭৬ রান। আর শূন্য রানে প্যাভিলিয়নে ফিরেছেন তিনবার। সেঞ্চুরি তো স্বপ্ন, নেই কোনো হাফ সেঞ্চুরি। এ সময়ে লিটন দাসের ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ সংগ্রহ মাত্র ২২, তাও করেছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে।
২০১৫ সালে ভারতের বিপক্ষে ওয়ানডে ক্রিকেটে অভিষেক লিটন কুমার দাসের। এরপর থেকে ট্যালেন্টেড, সামর্থ্য আছে, জুনিয়র ক্রিকেটার- এসব বিশেষণ শুনতে শুনতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে কাটিয়ে দিলেন পাঁচটি বছর। তবুও নিয়মিত পারফর্মার হয়ে উঠতে পারলেন না।
শ্রীলঙ্কা সিরিজের প্রথম ওয়ানডে পর্যন্ত ক্যারিয়ারে ৪৩ ম্যাচ খেলে ২৮.৮৭ গড়ে করেছেন ১১৫৫ রান। সেঞ্চুরি আর হাফ সেঞ্চুরি করেছেন তিনটি করে। প্রতি ম্যাচেই মাঠে নেমেছিলেন অনেক আশা নিয়ে, দর্শকদের নিজের সলিড ব্যাটিং দিয়ে মন্ত্রমুগ্ধ করে রাখবেন। কিন্তু উইকেটে সেট হয়ে আউট হয়ে যাওয়া যে তার নিজের নামের সাথে সমর্থক করে তুলেছেন।
নিজের ব্যাটিং নিয়ে কনফিডেন্সের অভাব নাকি প্রতিপক্ষের বিপক্ষে ভয়ডরহীন ক্রিকেট খেলতে না পারার ব্যর্থতা কোনটি আচ্ছন্ন করে রেখেছে লিটন দাসকে। ঘরোয়া ক্রিকেটে রানের ফুলঝুড়ি ফোটানো লিটনকে আরও পরিণত ক্রিকেট খেলবেন এটাই আশা।
প্রভিভাবান কিংবা সামর্থ্য আছে এ অজুহাতে আর কতদিন দলে খেলে যাবেন লিটন দাস? প্রশ্ন শুধু আমার নয়, এ প্রশ্ন সকল ক্রিকেট সমর্থকদের। আবারও ঘরোয়া ক্রিকেটে রানের ফুলঝুড়ি ফুটিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের জন্য পরিণত হয়ে ফিরবেন লিটন দাস। এটাই সবার আশা, পরিণত ক্রিকেট খেলেই এগিয়ে যাবেন লিটন কুমার দাস।
স্পোর্টসমেইল২৪/পিপিআর
[sportsmail24.com এখন sportsmail.com.bd ঠিকানাতেও। খেলাধুলার ভিডিও-ছবি এবং সর্বশেষ সংবাদ পড়তে ব্রাউজ করুন যেকোন ঠিকানায়। এছাড়া অ্যান্ড্রয়েড মোবাইলে ইনস্ট্রল করে নিতে আমাদের অ্যাপস ]