ওপেনার জনি বেয়ারস্টোর বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ জিতে নিল সফরকারী ইংল্যান্ড।
বেয়ারস্টোর ৬০ বলে ১০৪ রানের সুবাদে ক্রাইস্টচার্চে সিরিজের পঞ্চম ও শেষ ওয়ানডেতে কিউইদের ৭ উইকেটে হারায় ইংলিশরা। ফলে পাঁচ ম্যাচ সিরিজ ৩-২ ব্যবধানে জিতে নেয় ইয়োইন মরগানের দল। এ নিয়ে টানা ষষ্ঠ ওয়ানডে সিরিজ জিতলো ইংল্যান্ড।
সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচের দিন সকালে বড় ধরনের ধাক্কা খায় নিউজিল্যান্ড। আগের ম্যাচে ১৮১ রানের মহাকাব্যিক ইনিংস খেলা রস টেইলর ইনজুরির কারণে একাদশে সুযোগ পাননি। তাই টেইলরকে ছাড়া খেলতে নামে নিউজিল্যান্ড। ইনিংসের তৃতীয় বলেই মারকুটে ওপেনার কলিন মুনরোকে হারায় স্বাগতিকরা। ইংল্যান্ডের পেসার ক্রিস ওকসের বলে আউট হয়ে শূন্য হাতে ফিরেন মুনরো।
শুরুর ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার আগেই দলীয় ২৬ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারায় নিউজিল্যান্ড। আরেক পেসার মার্ক উডের শিকার হয়ে ১৪ রানে থামেন অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন। এরপর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে নিউজিল্যান্ড। ফলে ৯৩ রানের মধ্যে ষষ্ঠ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় কিউইরা। আউট হওয়া অন্য চার ব্যাটসম্যান হলেন- মার্টিন গাপটিল ৪৭, উইকেটরক্ষক টম লাথাম ১০, টেইলরের পরিবর্তে একাদশে সুযোগ পাওয়া মার্ক চাপম্যান শূন্য ও কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম ৬ রান করেন।
সপ্তম উইকেটে জুটি বেধে ইংল্যান্ডের বোলারদের বিপক্ষে প্রতিরোধ গড়ে তুলেন হেনরি নিকোলস ও অলরাউন্ডার মিচেল স্যান্টনার। এতে নিকোলস-স্যান্টনারের দৃঢ়তায় দল পায় ৮৪ রান। ফলে সম্মানজনক স্কোর পাবার সুযোগ পায় নিউজিল্যান্ড। নিকোলস ও স্যান্টনার দু’জনই স্বাদ নেন হাফ-সেঞ্চুরির।
সেঞ্চরি উদযাপন করছেন ইংল্যান্ডের ওপেনার ব্যাটসম্যান ওপেনার বেয়ারস্টো
নিকোলস ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ হাফ-সেঞ্চুরি তুলে ৫৫ রানে থামেন। দলীয় ২১৩ রানে অষ্টম ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হন স্যান্টনার। ওয়ানডে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় হাফ-সেঞ্চুরি তুলে ৪টি চার ও ২টি ছক্কায় ৭১ বলে ৬৭ রান করেন তিনি। তার বিদায়ের ১০ রান পরই স্কোরবোর্ডে ২২৩ রান জমা করে অলআউট হয় নিউজিল্যান্ড। ইংল্যান্ডের পক্ষে ৩টি করে উইকেট নেন ওকস ও আদিল রশিদ।
জয়ের জন্য ২২৪ রানের লক্ষ্যে দুর্দান্ত শুরু করে ইংল্যান্ড। ১২২ বল মোকাবেলায় ১৫৫ রান যোগ করে ইংলিশদের উড়ন্ত সূচনা এনে দেন দুই ওপেনার বেয়ারস্টো ও অ্যালেক্স হেলস। এরমধ্যে ১০৪ রানই ছিলো বেয়ারস্টোর। মাত্র ৫৮ বলে সেঞ্চুরির স্বাদ নেন তিনি। ইংল্যান্ডের পক্ষে তৃতীয় দ্রুততম সেঞ্চুরি এটি। শেষ পর্যন্ত ৯টি চার ও ৬টি ছক্কায় ৬০ বলে ১০৬ রান করেন আগের ম্যাচে ১৩৮ রান করা বেয়ারস্টো।
ম্যাচের সেরা বেয়ারস্টোর বিদায়ের পর আরও দু’উইকেট হারায় ইংল্যান্ড। কিন্তু তাতে কোন ক্ষতি হয়নি তাদের। ১০৪ বল হাতে রেখে জয়ের বন্দরে ঠিকই পৌঁছে যায় ইংলিশরা। হেলস ৬১, অধিনায়ক ইয়োইন মরগান ৮ রান করে আউট হলেও জো রুট ২৩ ও বেন স্টোকস ২৮ রান করে অপরাজিত থাকেন। সিরিজ সেরা হয়েছেন ইংল্যান্ডের ওকস।
ওয়ানডে সিরিজ শেষে এবার দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলবে নিউজিল্যান্ড ও ইংল্যান্ড। অকল্যান্ডে আগামী ২২ মার্চ থেকে শুরু হবে সিরিজের প্রথম টেস্ট। ক্রাইস্টচার্চে দ্বিতীয় টেস্ট শুরু হবে আগামী ৩০ মার্চ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
নিউজিল্যান্ড : ২২৩/১০, ৪৯.৫ ওভার (স্যান্টনার ৬৭, নিকোলস ৫৫, ওকস ৩/৩২)।
ইংল্যান্ড : ২২৯/৩, ৩২.৪ ওভার (বেয়ারস্টো ১০৪, হেলস ৬১, স্যান্টনার ১/৪৪)।
ফল : ইংল্যান্ড ৭ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচ সেরা : জনি বেয়ারস্টো (ইংল্যান্ড)।
সিরিজ সেরা : ক্রিস ওকস (ইংল্যান্ড)।
সিরিজ : পাঁচ ম্যাচের সিরিজ ৩-২ ব্যবধানে জিতলো ইংল্যান্ড।