করোনাভাইরাসের কারণে স্থবির বিশ্ব ক্রীড়াঙ্গন। তাই তো ঘরে বসে অবসর সময় কাটাচ্ছেন সকল খেলোয়াড়েরা। কেউ কেউ লাইভে এসে ভক্তদের সঙ্গে সময় কাটাচ্ছেন। শনিবার রাত ১০টায় ইনস্টাগ্রামে প্রায় ১ ঘণ্টা লাইভে ভক্তদের সঙ্গে আড্ডা দিয়েছেন দুই টাইগার তারকা অধিনায়ক তামিম ইকবাল ও উইকেট-রক্ষক ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিম।
আর সেখানে আড্ডার এক ফাঁকে তামিম ইকবালের কাছে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ব্যান্ডেজ প্যাঁচানো এক হাতে ব্যাট করার বীরত্বগাথা গল্প জানতে চান মুশফিক। তার পরই মুশফিককে সেই বীরত্বগাথা গল্প শোনান তামিম।
এশিয়া কাপের ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে লাকমালের বলে হাতে চোট পেয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছিল তামিমকে। তারপর সেখান থেকে হাসপাতাল ঘুরে আবারও ব্যান্ডেজ প্যাঁচানো এক হাতে ব্যাট করতে নামেন তামিম। মাঠে লঙ্কান বোলারদের বিরুদ্ধে লড়ছিলেন মুশফিক তাই তো ড্রেসিং রুমের ঘটনা কিছুই জানতে পারেননি তিনি। তাই তো ইনস্টাগ্রাম লাইভে এসে তামিমের কাছে সে গল্প শুনতে চান মুশফিক।
সেদিনের গল্প বলতে গিয়ে তামিম বলেন, আমি হাসপাতাল যাচ্ছিলাম আর মোবাইলে স্কোর দেখছিলাম। আমাদের দুই-তিনটা উইকেট খুব তাড়াতাড়ি পড়ে গেল। তোর আর মিঠুনের একটা দারুণ জুটি হলো। ডাক্তারের কাছে যাওয়ার আগে এ পরিস্থিতি ছিল।
আমি যখন আবার ফেরত আসছিলাম তখন আবার একটা ধ্বস নামলো আমাদের ব্যাটিংয়ে। আবারো হুট করে দুই-তিনটা উইকেট পড়ে গেল। ব্যাটসম্যানরা সবাই আউট। ড্রেসিংরুমে ঢুকে দেখি তুই ব্যাটিংয়ে। আর দলের স্কোর কোনোমতে এগিয়ে যাচ্ছে।'
হাসপাতাল থেকে হাতে ব্যান্ডেজ পেঁচিয়ে যখন ড্রেসিং রুমে ফিরলাম ঠিক তখনই মাশরাফি বিন মুর্ত্তজা তামিমকে বলেছিলেন, 'ব্যাটিংয়ে যা!’ অধিনায়কের এমন কথা শুনে চোখ কপালে তামিমের। 'সে সময় কথা বলতে বলতে মাশরাফি ভাই আবারও আমাকে বললেন যা ব্যাটিং কর। আমি শুরুতে ফাজলামো হিসেবে নিয়েছিলাম।'
তামিম তখনও বিষয়টা নিয়ে সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছিলেন। তবে অবশেষে সিদ্ধান্ত নিলেন ব্যাটিংয়ে নামবেন। 'নামবো নাকি নামবো না- এটা নিয়ে আলোচনা করতে করতে দেখি তুই (মুশফিক) মারা শুরু করেছিস। একশ’র কাছাকাছি হয়ে গেছে তোর স্কোর। তখন আলোচনা গুরুতর হয়ে গেল।
আলোচনা করে সিদ্ধান্তে আসলাম, যদি মুশফিক স্ট্রাইকে থাকে এবং ওভার বাকি থাকে, তাহলে ওভাবেই আমি ব্যাটিংয়ে যাবো। আমাকে ডাক্তার বলেছিল, ওটা নিয়ে দৌড়ানো যাবে না। কারণ মাত্রই হাত ভেঙেছিল। রিপ্লেসমেন্টের ব্যাপার আছে। দুর্ভাগ্যবশত চার বা পাঁচ নম্বর (পাঁচ নম্বর) বলে মুস্তাফিজ আউট হয়ে গেল।’
তিনি আরও বলেন, আমাদের সবার জীবনে এমন একটা সময় আসে, যখন পাগলামি ভর করে। হয়তো বা তুই নিজেও জানিস না যে, তুই কী করতে যাচ্ছিস। ওই পাঁচ সেকেন্ড আমার ওটাই হয়েছিল। আমি ব্যাট নিয়ে হাঁটা শুরু করেছিলাম। আমাদের কোচ স্টিভ রোডস পেছন থেকে দৌড়ে এসেছিল।
আমাকে থামিয়ে বলে, ‘তুমি কী করতে যাচ্ছো? আমি বললাম, ‘আমি যাই।’ ও আমায় আবার বলল, ‘এটা তো পরিকল্পনা ছিলো না।’ আমি বললাম, ‘আমি ম্যানেজ করতে পারবো।’ তখন ও আমাকে আমার দায়িত্বে যেতে বললো।
কিছুটা ব্যাকফুটে গিয়ে সুরাঙ্গা লাকমালের বলটি ঠেকালেন। তামিমের ওই এক বল খেলার কারণে, পরের ১৬ বলে মুশফিকুর রহিম তুলেছেন ৩২ রান। আর তাতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে লড়াকু সংগ্রহ দাঁড় করায় বাংলাদেশ। যার কারণে ম্যাচটি জিতে যায় বাংলাদেশ।
[sportsmail24.com এর ওয়েবসাইট এখন sportsmail.com.bd ঠিকানাতেও ব্রাউজ করে পড়তে পারবেন। এছাড়া অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোনে স্পোর্টসমেইল২৪.কমের অ্যাপস থেকেও খেলাধুলার সকল নিউজ পড়তে পারবেন। ইনস্ট্রল করুন স্পোর্টসমেইল২৪.কমের অ্যাপস ]