শচীন টেন্ডুলকার বিশ্বকাপ না জিতেই অবসরে যাবেন, এ কি হয়? ২০১১ বিশ্বকাপ ছিল শচীনের শেষ বিশ্বকাপ। এর আগে ২০০৭ বিশ্বকাপের পরও অবসর নিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ভাইয়ের পরামর্শে আবারও স্বপ্ন দেখেন ঘরের মাঠ ওয়াংখেড়েতে বিশ্বকাপ জেতার। সতীর্থরাও শচীনকে বিশ্বকাপ উপহার দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
খেলার শুরুতেই বোলিং-ফিল্ডিংয়ে দারুণ আগ্রাসী মনোভাব দেখান ভারতের ফিল্ডাররা। যুবরাজ-রায়নারা ছিলেন দুর্দান্ত, তাদের পাশ দিয়ে যেতে বলেরও যেন সাহস হয়নি! তবে ২৭৫ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে মাত্র ৩১ রানে শচীন-শেবাগ আউট হলে ভারতের ২৮ বছর পর বিশ্বকাপ জেতার স্বপ্ন কিছুটা মলিন হয়ে যায়। কিন্তু গম্ভীর আবারও স্বপ্ন দেখান, সেই স্বপ্ন শেষে সত্যি করেন অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি।
সাধারণত ৫ নম্বরে ব্যাট করতে নামেন যুবরাজ, আর ৬ নম্বরে ধোনি। কিন্তু এ দিন ভারত ১১৪ রানে ৩ উইকেট হারালে অসাধারণ ফর্মে থাকা যুবরাজের জায়গায় ব্যাট হাতে মাঠে নেমে যান ধোনি। যদি ধোনি ম্যাচ জিতিয়ে না মাঠ ছাড়তেন তাহলে হয়তো অনেক প্রশ্নেরই সম্মুখীন হতে হতো তাকে। তবু অনেকের হয়তো ধোনির আগে ব্যাটিংয়ে নামার কারণ জানতে ইচ্ছে হয়। এবার তা'ই জানালেন ২০১১ বিশ্বকাপজয়ী দলের সদস্য সুরেশ রায়না।
২০১১ সালের ২ এপ্রিলে বিশ্বকাপ জিতেছিল ভারত। তাই এ বছরের ২ এপ্রিলে বিশ্বকাপ জয়ের আনন্দে মাতোয়ারা হয় ভারত। আর সেই আনন্দময় মুহূর্ত স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে পিটিআইকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে যুবরাজের জায়গায় ধোনির ব্যাটিংয়ে নামার কারণও জানান সুরেশ রায়না।
ধোনিকে দেখেই নাকি তিনি বিশ্বকাপ জয়ের আভাস পাচ্ছিলেন। বলেন, ‘ধোনিকে দেখেই মনে করেছিলাম সে আমাদের বিশ্বকাপ জিতাবে। ফর্মে থাকা যুবরাজের আগে ধোনির ব্যাটিংয়ে যাওয়া একটা বড় সিদ্ধান্ত ছিল। ধোনি গ্যারি কার্স্টেনকে (ভারতের তৎকালীন কোচ) বলেছিল, সে মুরালিধরণকে ভালো খেলতে পারবে, এ জন্য সে ব্যাটিংয়ে গিয়েছিল। আমার এখনো সবকিছু স্পষ্টভাবে মনে আছে।’
যুবরাজ বামহাতি ব্যাটসম্যান হওয়ায় ডান হাতি মুরালিধরণের বলে কিছুটা ভুগতে পারেন। আর ওই সময় ক্রিজে ছিলেন গৌতম গম্ভীর, যিনিও আবার বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। বামহাতি-ডানহাতি কম্বিনেশনটাও গুরুত্ত্বপূর্ণ ছিল। ধোনি ডানহাতি হওয়ায় তাই আত্মবিশ্বাসের সাথে নামেন যুবরাজের জায়গায়।
ধোনির ওই সিদ্ধান্তের ফলস্বরূপ ৬ উইকেটে ফাইনাল জিতে নেয় ভারত, ১০ বল হাতে রেখে। ধোনি অপরাজিত থাকেন ৯১ রানে। মুরালিধরণ থাকেন উইকেট শূন্য। শচীনের একটা বিশ্বকাপ প্রাপ্যই ছিল। আর ধোনিও শেষ পর্যন্ত তাকে বিশ্বকাপ দিয়েই বিদায় দেন।
রিফাত বিন জামাল, অতিথি লেখক।