২০১৯ সালের অক্টোবরে নিজেদের ন্যায্য দাবিতে আন্দোলন করেছিলেন বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। সাকিব আল হাসানের নেতৃত্বে টাইগারদের ওই আন্দোলনে ১১ দফা দাবি জানানো হয়েছিল। তার মধ্যে অন্যতম ছিল বিসিবির কেন্দ্রীয় চুক্তিতে অন্তত ৩০ জন ক্রিকেটারকে রাখা।
সাকিব-তামিমদের আন্দোলনে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) ওই সময় ক্রিকেটারদের সেই দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিলেও এবার কেন্দ্রীয় চুক্তিতে তা মানা হয়নি। ২০২০ সালের কেন্দ্রীয় চুক্তিতে মোট ১৭ জন ক্রিকেটারকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
রোবার (৮ মার্চ) প্রথম পর্যায়ে ১৬ জনকে চুক্তিবদ্ধ করে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দেয় বিসিবি। পরে সোমবার (৯ মার্চ) চুক্তিতে সৌম্য সরকারের নাম যুক্ত করা হয়। এছাড়া চুক্তিবদ্ধ ১৭ টাইগারদের মধ্যে কে কোন ক্যাটাগরির অন্তর্ভুক্ত তাও জানানো হয়নি।
২০১৯ সালের কেন্দ্রীয় চুক্তিতে থাকা ১৮ জনের মধ্যে মাশরাফি-সাকিবসহ সাতজন বাদ পড়েছেন। মাশরাফি এর আগে নিজেই বোর্ডের কাছে অনুরোধ করেছিলেন যেন তাকে বাদ দিয়ে নতুন খেলোয়াড়দের সুযোগ দেওয়া হয়। এছাড়া সাকিব আল হাসান আইসিসির নিষেধাজ্ঞায় থাকায় ক্রিকেট থেকে দূরে রয়েছেন।
মাশরাফি-সাকিব ছাড়া বাদ পড়া বাকি পাঁচজন হলেন- ইমরুল কায়েস, আবু হায়দার রনি, সৈয়দ খালেদ হাসান, রুবেল হোসেন ও সাদ্দাম ইসলাম।
সাকিবদের ১১ দফা দাবি
১. ক্রিকেটার্স অ্যাসোসিয়েশন (কোয়াবের) বর্তমান কমিটিকে অবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে। ক্রিকেটারদের সরাসরি ভোটে ঠিক করা হবে নতুন সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক।
২. ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের দলবদলের নিয়ম আগের মতো করতে হবে। যে যার পছন্দমতো দলে যাবে।
৩. এ বছর না হোক, তবে পরের বছর থেকে আগের মতো (ফ্র্যাঞ্চাইজি পদ্ধতিতে) বিপিএল আয়োজন করতে হবে। স্থানীয় ক্রিকেটারদের পারিশ্রমিক বাড়াতে হবে।
৪. প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ম্যাচ ফি ১ লাখ করতে হবে। চুক্তিভুক্ত প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটারদের বেতন ৫০% বাড়াতে হবে। ১২ মাস কোচ-ফিজিও দিতে হবে, প্রতি বিভাগে অনুশীলনের ব্যবস্থা করতে হবে।
৫. আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে যে বল দিয়ে খেলা হয়, ঘরোয়া লিগে সেই বল ব্যবহার করতে হবে। দৈনিক ভাতা ১৫০০ টাকায় কিছু হয় না, তা বাড়াতে হবে। এক ভেন্যু থেকে আরেক ভেন্যুতে যাওয়ার জন্য যাতায়াত ভাড়া মাত্র ২৫০০ টাকা। তা বাড়াতে হবে অথবা প্লেন ভাড়া দিতে হবে। হোটেল ভালো হতে হবে, জিম ও সুইমিংপুল সুবিধা থাকতে হবে।
৬. জাতীয় দলে চুক্তিভুক্ত ক্রিকেটারের সংখ্যা অন্তত ৩০ করতে হবে ও বেতন বাড়াতে হবে।
৭. দেশি সব স্টাফদের বেতন বাড়াতে হবে। কোচ থেকে শুরু করে গ্রাউন্ড স্টাফ, আম্পায়ার- সবার বেতন বাড়াতে হবে।
৮. জাতীয় লিগের পর আগে একটি ওয়ানডে লিগ হতো, সেটি ফিরিয়ে আনতে হবে। বিপিএলের আগে আরেকটি টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট দিতে হবে।
৯. ঘরোয়া ক্যালেন্ডার চূড়ান্ত হতে হবে।
১০. ডিপিএলের (ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ) পাওনা টাকা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে দিতে হবে।
১১. বিদেশে ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ দুটির বেশি খেলা যাবে না, এমন নিয়ম তুলে দিতে হবে। সুযোগ থাকলে সবাই খেলবে।
** এছাড়া ঘরোয়া ক্রিকেটে অনিয়ম, দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে। প্রথম বিভাগ, দ্বিতীয় বিভাগ, তৃতীয় বিভাগে ইচ্ছে করেই কোনো দলকে জেতানো বা হারানো হয়। এসব বন্ধ করতে হবে।