বর্তমান সময়ে যে কোন ফর্মেটের চেয়ে টি-২০ ক্রিকেটের প্রতিই তরুণ খেলোয়াড়দের আকর্ষণ অনেক বেশি। তাই টি-২০’র পরিবর্তে লংগার ভার্সনের প্রতি তরুণ ক্রিকেটারদের আকৃষ্ট করতে টেস্টের ম্যাচ ফি বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন শ্রীলংকার কিংবদন্তী ক্রিকেট তারকা কুমার সাঙ্গাকারা।
টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে পঞ্চম সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারী সাঙ্গাকারা গত বছর প্রথম শ্রেনীর ক্রিকেট থেকে অবসর গ্রহণ করছেন। তবে এখনো বিশ্বব্যাপী ফ্রাঞ্চাইজি ভিত্তিক টি-২০ ক্রিকেটে খেলে যাচ্ছেন তিনি। চলতি সপ্তাহে হংকংয়ে টি-২০ বিøজেও অংশ নিয়েছেন সাঙ্গাকারা।
টি-২০ ক্রিকেটের মাধ্যমে খেলাটি বিশ্বব্যাপী প্রসার পাওয়ায় এর বাজার বাড়ার প্রশংসা করে ৪০ বছর বয়সি এই ক্রিকেটার একই সঙ্গে শংকা প্রকাশ করে বলেন, টেস্ট ক্রিকেটে পরিবর্তন না আনলে তরুণ খেলোয়াড় এবং সমর্থকদের কাছে সেটির জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়তে পারে।
বুধবার বার্তা সংস্থা এএফপি’কে দেয়া সাক্ষাৎকারে সাঙ্গাকারা বলেন, ‘ক্রিকেটকে পরিচিতি করার আদর্শ মঞ্চ হতে পারে টি-২০। এ নিয়ে আপনি যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনে কথা বলতে পারেন। তবে এর নেতিবাচক দিকও রয়েছে। বিপুল সংখ্যক তরুণ ক্রিকেটার আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার চেয়ে টি-২০ ক্রিকেটের প্রতি ঝুঁকছে। এর নেপথ্যে কাজ করছে মোটা অংকের অর্থ। বিশেষ করে টেস্ট ক্রিকেটের ম্যাচ ফির বিষয়টিও এখানে বিবেচিত। টি-২০ খেলার তুলনায় টেস্টের ম্যাচ ফির পরিমান অনেক কম। শীর্ষ দেশগুলোর টেস্ট ম্যাচে মোটামুটি কিছু অর্থ পাওয়া যায়। তবে সেটি সবগুলো টেস্ট প্লেয়িং দেশে নয়।
বর্তমানে আন্তর্জাতিক ম্যাচের ফির অংকেও দেশ ভেদে পার্থক্য আনা হয়েছে। তথা কথিত ‘বিগ থ্রি’ ভারত, ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার খেলোয়াড়রা অন্য দেশের খেলোয়াড়দের তুলনায় বেশি অর্থ পেয়ে থাকেন।
গত বছর ইএসপিএনের এক জরিপে দেখা গেছে অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথ ২০১৭ সালে আয় করেছেন ১৪ লাখ ৬৯ হাজার মার্কিন ডলার। অপরদিকে জিম্বাবুয়ের অধিনায়ক গ্রায়েম ক্রেমার আয় করেছেন মাত্র ৮৬ হাজার মার্কিন ডলার।
বিশ্বব্যাপী টি-২০ ক্রিকেট দ্রুত প্রসার পাচ্ছে। অস্ট্রেলিয়ার বিগ ব্যাশ লীগ ও ভারতের আইপিএল দীর্ঘ সময় ধরে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এদের তুলনায় অনেক কম সময় নিচ্ছে বাংলাদেশের বিপিএল, হংকং ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে আয়োজিত টুর্নামেন্ট।
গরীব দেশগুলোর ক্রিকেটাররা বেশিরভাগই নিজ দেশের হয়ে টেস্ট খেলে যে পরিমান অর্থ আয় করে তার চেয়ে অনেক বেশি অর্থ আয় করে টি-২০ ম্যাচ খেলে। গত মাসে এমসিসি ও আইসিসির বার্ষিক সভায় বেতন কাঠামোয় সংস্কারের আহবান জানানো হয়েছে।
সাঙ্গাকারা বলেন, ‘আমাদের বুঝতে হবে টেস্ট ম্যাচ খেলোয়াড়দের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ,একই সঙ্গে দর্শকদের কাছেও । এই খেলাটির পরিসর বৃদ্ধিও চেয়েও সেটিকে টিকিয়ে রাখাটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আমার মতে এখনো আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অনেক বেশি শক্তিশালী। ওয়ানডে ও টি-২০ ক্রিকেটের তুলনায় সেখানে বেশি সম্মানজনক অবস্থানে রয়েছে টেস্ট।’