মেলবোর্নে বক্সিং ডে’টেস্টে নিউজিল্যান্ডকে ২৪৭ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়েছে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া। এ জয়ে এক টেস্ট বাকি রেখেই তিন ম্যাচের সিরিজ জয়ও নিশ্চিত করলো অসিরা। পার্থে প্রথম টেস্ট ২৯৬ রানে জিতেছিল অস্ট্রেলিয়া।
প্রথম ইনিংস থেকে পাওয়া ৩১৯ রানের লিডকে সাথে নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে খেলতে নেমে ৪ উইকেটে ১৩৭ রান নিয়ে তৃতীয় দিন শেষে করেছিল অস্ট্রেলিয়া। ফলে ৬ উইকেট হাতে নিয়ে ৪৫৬ রানের বড় লিডে ছিল অসিরা।
চতুর্থ দিন প্রথম সেশনে ৫ উইকেটে ১৬৮ রানে দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করে অস্ট্রেলিয়া। ম্যাচ জয়ের জন্য নিউজিল্যান্ডকে ৪৮৮ রানের বড় টার্গেট দেয় অসিরা। ১৫ রান নিয়ে দিন শুরু করেছিলেন ম্যাথু ওয়েড। তার সঙ্গী প্রথম ইনিংসের সেঞ্চুরিয়ান ট্রাভিস হেডের সংগ্রহ ছিল ১২ রান।
ব্যক্তিগত ২৮ রানে হেড আউট হলে ইনিংস ঘোষণা করে দেন অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক পাইন। এ সময় ৩০ রানে অপরাজিত ছিলেন ওয়েড। নিউজিল্যান্ডের নিল ওয়াগনার ৫০ রানে ৩টি উইকেট নেন।
জয়ের জন্য ৪৮৮ রানের লক্ষ্যে ব্যাট হাতে নেমে অস্ট্রেলিয়ার পেসার জেমস প্যাটিনসনের তোপের মুখে পড়ে নিউজিল্যান্ডের টপ-অর্ডার। ৩৫ রানের মধ্যে ৩ উইকেট হারিয়ে শুরুতেই চাপে পড়ে কিউইরা। টম লাথাম ৮, অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন শূন্য ও রস টেইলর ২ রান করে প্যাটিনসনের শিকার হন।
এরপর শুরুর ধাক্কা সামাল দেওয়া চেষ্টা করেন আরেক ওপেনার টম ব্লান্ডেল। তাদের সাথে লড়াইয়ে ছিলেন হেনরি নিকোলস ও উইকেটরক্ষক বিজে ওয়াটলিং। চতুর্থ উইকেটে নিকোলসকে নিয়ে জুটিতে ৫৪ ও পঞ্চম উইকেটে ওয়াটলিং’এর সাথে ৭২ রান যোগ করেন ব্লান্ডেল। নিকোলসকে ৩৩ ও ওয়াটলিং’কে ২২ রানে থামিয়ে দিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে জয়ের পথে রাখেন অস্ট্রেলিয়ার স্পিনার নাথান লিঁও।
ক্রিজে গিয়ে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম। তাকে ৯ রানে থামিয়ে দেন লিঁও। ১৭২ রানে ষষ্ঠ উইকেট পতনের পর মিচেল স্যান্টনারের সাথে আবারও বড় জুটি গড়ার চেষ্টা করেন ব্লান্ডেল। আর এ জুটিতেই তিন ম্যাচের টেস্ট ক্যারিয়ারে দ্বিতীয় সেঞ্চুরি তুলে নেন তিনি। নিউজিল্যান্ডের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে মেলবোর্নে প্রথম সেঞ্চুরি করেন ব্লান্ডেল।
ব্লান্ডেলের সেঞ্চুরির পর এ জুটিতে ভাঙন ধরান লিঁও। ২৭ রান করা স্যান্টনারকে বিদায় দেন তিনি। সপ্তম উইকেটে স্যান্টনার-ব্লান্ডেলের ৪০ রানের জুটিতে দলের স্কোর দু’শ অতিক্রম করে। এরপর টিম সাউদি ২ রানে রান আউট হলে জয়ের খুব কাছে পৌছে যায় অস্ট্রেলিয়া।
তারপরও অস্ট্রেলিয়ার জয়ের পথে বাঁধা হয়ে থাকেন ব্লান্ডেল। এক প্রান্ত আগলে ম্যাচটি পঞ্চম দিনে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন তিনি। দশম ব্যাটসম্যান ওয়াগনার সাপোর্টে ছিলেন ব্লান্ডেলের। কিন্তু ৭১তম ওভারের শেষ বলে অকেশনাল লেগ-স্পিনার মার্নাস লাবুশেনের বলে ব্লান্ডেল আউট হলে শেষ হয় নিউজিল্যান্ড ইনিংস। কারণ, প্রথম ইনিংসে ব্যাটিংয়ের সময় ডান-হাতে চিড় ধরায় এবার আর ব্যাট হাতে নামতে পারেননি ট্রেন্ট বোল্ট। ফলে ২৪০ রানে অলআউট হয় নিউজিল্যান্ড।
১৫টি চারের সহায়তায় ২১০ বলে ১২১ রান করেন ব্লান্ডেল। ওয়াগনার ৬ রানে অপরাজিত থাকেন। অস্ট্রেলিয়ার লিঁও ৪টি ও প্যাটিনসন ৩টি উইকেট নেন। প্রথম ইনিংসে ১১৪ রান করায় ম্যাচ সেরা হয়েছেন হেড।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
অস্ট্রেলিয়া : ৪৬৭ ও ১৬৮/৫, ৫৪.২ ওভার (ওয়ার্নার ৩৮, বার্নস ৩৫, ওয়াগনার ৩/৫০)
নিউজিল্যান্ড : ১৪৮ ও ২৪০, ৭১ ওভার (ব্লান্ডেল ১২১, নিকোলস ৩৩, লিঁও ৪/৮১)।
ফল : নিউজিল্যান্ড ২৪৭ রানে জয়ী
ম্যাচ সেরা : ট্রাভিস হেড (অস্ট্রেলিয়া)।
সিরিজ : তিন ম্যাচের সিরিজে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল অস্ট্রেলিয়া।