ক্রিকেটে ম্যাচ ফিক্সিং নতুন কোন ঘটনা নয়। তবে পাকিস্তানি খেলোয়াড়দের বিপক্ষেই ম্যাচ ফিক্সিংয়ের অভিযোগটা বেশি। ক্রিকেট মাঠে পারফরমেন্সের দিক থেকে পাকিস্তান যেমন আনপ্রেডিক্টেবল দল। তেমনি ফিক্সিংয়েও পাকিস্তানি খেলোয়াড়দের দ্বারা সব সম্ভব। এবার সতীর্থদের বিপক্ষে এমনই এক বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন দেশটির সাবেক পেসার শোয়েব আখতার।
ইংল্যান্ড সফরে ২০১১ সালে ম্যাচ ফিক্সিংয়ের অভিযোগে আইসিসি পাকিস্তানের তিন খেলোয়াড় তৎকালীন উদীমান পেসার মোহাম্মদ আমির, মোহাম্মদ আসিফ এবং তৎকালীন অধিনায়ক ও ওপেনিং ব্যাটসম্যান সালমান বাটকে পাঁচ বছরের জন্য ক্রিকেটে নিষিদ্ধ করে।
পাকিস্তানের একটি টেলিভিশনের এক টক শো-তে এবার সাবেক সতীর্থদের ম্যাচ ফিক্সিংয়ে জড়িয়ে পড়ার প্রসঙ্গে নিজের যন্ত্রণা ব্যক্ত করলেন শোয়েব আখতার। ‘রিওয়াইন্ড উইথ সামিনা পীরজাদা’ নামের টক শোতে তিনি বলেন, সেই সময় তাকে শুধু বিপক্ষ দলের সঙ্গেই খেলতে হচ্ছিল না। খেলতে হচ্ছিল নিজের সতীর্থদের বিরুদ্ধেও!
তিনি বলেন, পাকিস্তানের সঙ্গে কোন কোন প্রতারণা করব না বলে আমি সব সময় স্থির ছিলাম। কোনও ম্যাচ ফিক্সিং নয়। কিন্তু আমি ম্যাচ ফিক্সারদের দ্বারা আবর্তিত ছিলাম। আমাকে ২২ জনের বিরুদ্ধে খেলতে হচ্ছিল। প্রতিপক্ষের ১১, আমাদের দলের ১০ জন। কে জানে কে ম্যাচ ফিক্সার। তখনও অনেক ম্যাচ গড়াপেটা হয়েছে। মোহাম্মদ আসিফ আমাকে বলেছিলেন, কোন ম্যাচ কীভাবে গড়াপেটা করেছে ওরা।
গত জুনে ইংল্যান্ড বিশ্বকাপে পাকিস্তানের হয়ে খেলা আমির ও আসিফের ম্যাচ ফিক্সিংয়ে জড়িয়ে পড়া সম্পর্কে জানার পরে তিনি কতটা দুঃখ পেয়েছিলেন ও কতটা রেগে গিয়েছিলেন সেটাও জানান শোয়েব।
রাওয়ালপিন্ডি এক্সপ্রেস খ্যাত শোয়েব বলেন, আমি আমির ও আসিফকে বোঝার চেষ্টা করেছিলাম। প্রতিভার কী অপচয়! আমি যখন এ বিষয়ে জানতে পারি, আমি আক্ষেপে দেওয়ালে ঘুষি মেরেছিলাম। পাকিস্তানের দুই শীর্ষ স্থানীয় বোলার, স্মার্ট, বুদ্ধিমান ও নিখুঁত ফাস্ট বোলার, তারা কীভাবে নষ্ট হয়ে গেল! কিছু টাকার জন্য নিজেদের বেচে দিল ওরা!
ম্যাচ ফিক্সিং কেলেঙ্কারি থেকে নিজেকে সামলে আমির ফিরতে পারলেও আশিফ ও সলমন বাট আর ফিরতে পারেননি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে।
২০১৯ বিশ্বকাপে আমির অংশ নিয়েছিলেন। বাঁহাতি পেসার এরপর বিশ্বকে চমকে দেন মাত্র ২৭ বছর বয়সে টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়ে। গত ২৬ জুলাই টেস্ট ক্রিকেটকে বিদায় জানিয়ে আমির জানান, তিনি সাদা বলের ক্রিকেটে ফোকাস করতে চান।