বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক সাকিব আল হাসানকে সব ধরনের ক্রিকেট থেকে দুই বছরের জন্য নিষিদ্ধ করেছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি)। তবে বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটির দুর্নীতি বিরোধী তিনটি অভিযোগের বিষয়ে ভুল স্বীকার করায় এক বছর পর মাঠে ফিরতে পারবেন সাকিব।
আইসিসির দুর্নীতি বিষয়ক শুনানিতে বাংলাদেশ দলের টেস্ট ও টি-২০ অধিনায়ক সবগুলো অভিযোগ স্বীকার করেছেন ও দেওয়া শাস্তি মেনে নিয়েছেন। এ নিষেধাজ্ঞার সময় আইসিসির শর্তসমূহ মেনে চললে ২০২০ সালের ২৯ অক্টোবর আবার মাঠে ফিরতে পারবেন সাকিব।
২০১০ ও ২০১৩ সালেও সাকিবকে ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব দিয়েছিল বাজিকররা। তবে সঙ্গে সঙ্গেই তিনি বিষয়টি আইসিসিকে অবগত করেছিলেন। যে কারণে তার ওপর সে সময় কোন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়নি আইসিসি। তবে ২০১৮ সালে বাংলাদেশ, জিম্বাবুয়ে ও শ্রীলঙ্কার অংশগ্রএণ অনুষ্ঠিত ত্রিদেশীয় সিরিজে সাকিবকে দুইবার ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব দিয়েছিল বাজিকররা।
একই বছর আইপিএলে অংশগ্রহণ করার সময়ও আরেকবার ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব পান সাকিব। কিন্তু এ বিষয়ে তিনি আইসিসিকে অবহিত করেননি। এ কারণেই আইসিসির দুর্নীতি বিরোধী ইউনিট (আকসু) সাকিবের বিরুদ্ধে এ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করলো।ঃ
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আকসু জানায়, আইসিসির নিয়ম অনুযায়ী ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য তাদেরকে জানানোর নিয়ম রয়েছে। যেটি সাকিব জানাননি। তবে সাকিব কেন এ বিষয়ে আইসিসিকে জানাননি সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছুই উল্লেখ করা হয়নি।
এদিকে সাকিব আইসিসির উত্থাপিত অভিযোগ মেনে নিয়েছেন। তিনি বলেন,‘ প্রিয় এ খেলা থেকে নিষিদ্ধ হয়ে আমি খুবই দুঃখিত। তবে ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব তাৎক্ষাণিকভাবে না জানানোর কারণে এ শাস্তি আমি সম্পূর্ণভাবে মেনে নিয়েছি। দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য আইসিসি ও আকসু খেলোয়াড়দের ওপরই সম্পূর্ণভাবে নির্ভর করে। আর আমি আমার দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে পারিনি।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্বের অধিকাংশ খেলোয়াড় ও সমর্থকদের মত আমিও চাই ক্রিকেট দুর্নীতিমুক্ত থাকুক। আমি আইসিসি ও আকসুর এ বিষয়ে শিক্ষামূলক কার্যক্রমের সমর্থনে কাজ করতে চাই, যাতে তরুণ খেলোয়াড়রা আমার মত এমন ভুল না করে।’
বর্তমানে ওয়ানডে ক্রিকেটের অল রাউন্ডার র্যাংকিংয়ের এক নম্বর অবস্থানে রয়েছেন সাকিব। এছাড়া টি-২০ ক্রিকেটের ২য় ও টেস্ট র্যাংকিংয়ের তৃতীয় অবস্থানে রযেছেন বাংলাদেশের এ অল রাউন্ডার।
সাকিব বাংলাদেশের হয়ে সব ফরম্যাটের ক্রিকেটেরও সর্বাধিক উইকেট শিকারী ও দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক।
আইসিসির জেনারেল ম্যানেজার অ্যালেক্স মার্শাল বলেছেন, ‘সাকিব আল হাসান খুবই অভিজ্ঞ একজন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার। তিনি দুর্নীতিবিরোধী বেশ কিছু প্রশিক্ষণ কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেছেন। তিনি জানেন বিধিতে কী কী নিষেধ রয়েছে। তার উচিৎ ছিল সবগুলো ফিক্সিং প্রস্তাব সম্পর্কে অবহিত করা। তবে তিনি তদন্তকারীদের পুরোপুরি সহযোগিতা করেছেন এবং নিজের ভুলগুলো মেনে নিয়েছেন।’
BREAKING: Bangladesh captain and world No.1 ODI all-rounder Shakib Al Hasan has been banned for two years (one of those suspended), for failing to report corrupt approaches on numerous occasions.https://t.co/depJ2VHSne
— ICC (@ICC) October 29, 2019