বেতন-ভাতাসহ সাকিবদের ১৩ দফা (১১+২) দাবি মেনে নিতে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) আশ্বাসে ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়েছে। তিনদিন কার্যত অচলাবস্থায় কেটেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট। শঙ্কা তৈরি হয়েছিল বড় কোন অশুভ ঘটনার। যদিও সেটি আর হয়নি। অল্পতেই কেটে গেছে বাংলাদেশ ক্রিকেটের কালো মেঘ।
ভারতের সিরিজ খেলাকে সামনে রেখে টাইগারদের এমন ধর্মঘটের পেছনে প্রথমে ‘ষড়যন্ত্র’ রয়েছে বলে উল্লেখ করেছিলেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। এবার তিনি বললেন, ধর্মঘটের পেছনে ভারত সিরিজ ‘বানচালের’ তথ্য ছিল। যদিও আপাতত সেটি কেটে গেছে।
দেশের শীর্ষস্থানীয় সংবাদ মাধ্যম প্রথম আলোর এক সাক্ষাৎকারে পাপন এ তথ্য জানিয়েছেন। সেখানে ক্রিকেটারদের দাবি মেনে নেওয়াও ভুল সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেছেন।
পাপন বলেন, বোর্ড পরিচালক লোকমান হোসেন ভূঁইয়ার গ্রেপ্তার হওয়ার ঘটনা বুঝতে না-বুঝতেই আচমকা খেলোয়াড়দের ধর্মঘট। আমার এখনো বিশ্বাস হচ্ছে না। আমি প্রতিদিনই ওদের (খেলোয়াড়দের) সঙ্গে কথা বলি। আগে থেকে কিছু না জানিয়ে খেলা বন্ধ, এটা কোনো দিন হতে পারে। আমি মনে করি ওদের দাবি পূরণ করে আমি একটা অন্যায় কাজ করেছি। কোনোভাবেই উচিত হয়নি মানা।
তিনি বলেন, আমাদের বলা উচিত ছিল, যতক্ষণ পর্যন্ত তোমরা ধর্মঘট প্রত্যাহার না করবে আর বোর্ডে আবেদন না করবে, আমরা তোমাদের সঙ্গে বসব না। আইসিসির বিভিন্ন দেশের সঙ্গে কথা বলে আমি বুঝেছি, এটাই করা উচিত ছিল। কিন্তু আপনারা (সংবাদমাধ্যম) আমাদের এমন অবস্থায় ফেলে দিলেন যে আর কিছুই করার ছিল না।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ভারত সফরের এখনো আপনারা কিছুই দেখেননি। দেখেন না কী হয়! আমি যখন বলেছি, এটার মধ্যে একটা ষড়যন্ত্র আছে...। আপনারা আমাকে এত বছর ধরে চেনেন, কখনো ভুল বা মিথ্যা বলেছি? এ রকম কথা যদি আমি বলে থাকি, নিশ্চয়ই এটার মধ্যে কিছু একটা আছে। আমার কাছে তথ্য ছিল যে ভারত সিরিজ বানচাল হবে।
বিসিবি সভাপতি আরও বলেন, খেলোয়াড়দের দাবি-দাওয়া মেনে নেওয়ায় প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটাররা খুশি হয়েছে জানি। কারণ, খেলা হবে, ওরা তো খেলতে চায়। কিন্তু এটা কি ওখানে যারা ছিল, সবাই চায়?
খেলোয়াড়রা মাঠে ফিরলেও ভারত সফর নিয়ে এখনো শঙ্কা রয়েছে বলেন মন্তব্য করেন পাপন। বলেন, এখন সফরে যাওয়ার আগমুহূর্তে যদি শুনি আর কেউ যাবে না, তাহলে কেমন লাগবে? আমার তো ধারণা বদ্ধমূল যাবে না এবং এমন এক সময় বলবে, যখন আমাদের কিছু করার থাকবে না।
গ্রামীণফোনের সঙ্গে সাকিবের চুক্তি নিয়ে তিনি বলেন, খেলোয়াড়দের আমরা বলেছিলাম ওরা কোনো টেলকোর সঙ্গে চুক্তি করতে পারবে না। যেন সামনের বছর টেলকোগুলো টিম স্পনসরের দরপত্রে অংশগ্রহণ করে। তবু জেনেশুনে কি সাকিব এ বেআইনি কাজটা করতে পারে? আমি কি যা খুশি তা-ই করতে দেব ওদের!
তিনি বলেন, সময়টাও দেখুন। জানুয়ারিতে আমি নতুন স্পনসরের দরপত্রে টেলকোকে আর পাব না। বা এলেও ওরা কম টাকা দিতে চাইবে। এভাবে যে আমাদের ফাঁদে ফেললো, এতে ক্ষতিটা কার? এতে শুধু একজন খেলোয়াড় লাভবান হলো, কিন্তু আমার ক্রিকেট দলের কী হবে?