খেলার থেকে জোফ্রা আর্চারকে মাঠের বাইরে বসে দেখা অনেক বেশি ভয়াবহ। এমনই মন্তব্য মার্নাস লাবুশানের।
লর্ডস টেস্টের পঞ্চম দিন স্টিভ স্মিথের ‘কনকাশন সাবস্টিটিউট’ হিসেবে টিমে জায়গা পেয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ার মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান। তিনিই ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্ট বাঁচালেন, ৫৯ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলে। আর্চার রোববারের লর্ডসেও ভয়ঙ্কর ছিলেন। তিনটি উইকেট নিয়েছেন। পাশাপাশি তাঁর তীক্ষ্ণ বাউন্সারে বিপর্যস্ত হয়েছেন অজি ব্যাটসম্যানরা।
লাবুশানে বলেছেন, ‘আর্চারকে খেলার থেকে মাঠের বাইরে বসে ওর বোলিং দেখা অনেক বেশি ভয়াবহ। নার্ভাস লাগে। ওর বাউন্সার যখন স্মিথের মাথায় লেগেছিল, তখন আমারই শরীর খারাপ লাগছিল। ওই রকম পরিস্থিতিতে অসহায় লাগে। কিন্তু কেউ যখন ক্রিজে থাকে, ওই রকম বিষাক্ত বলের সঙ্গে লড়াই চালায়, তখন পুরো ব্যাপারটাই অন্য রকম লাগে। অন্তত মাঠের বাইরের মতো ভয়ানক মনে হয় না।’
আর্চারের একটা বাউন্সার আছড়ে পড়েছিল লাবুশানের হেলমেটে। ২৫ বছরের ব্যাটসম্যান তারপরও আর্চারকে ভয় পাননি। বরং উঠে দাঁড়িয়ে নিজের খেলাটাই খেলে গিয়েছেন। লাবুশানে বলেছেন, ‘এক ঝলক গরম হাওয়া অনুভব করেছিলাম হেলমেটের গ্রিলে। কিন্তু তার পর উঠে দাঁড়িয়ে ঠান্ডা মাথায় আবার ব্যাটিং করেছিলাম। নিজের ফোকাস আবার ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেছিলাম। যাতে বল দেখতে অসুবিধা না হয়। আমার কিন্তু ওর বল শেষ পর্যন্ত দেখতে অসুবিধা হয়নি।’
ইংল্যান্ডের পেস বোলিংয়ে আলাদা মাত্রা এনে দিয়েছেন আর্চার, সেটা মেনে নিচ্ছেন লাবুশানে। ‘কঠিন মুহূর্তগুলোতে আর্চার দারুণ বোলিং করছিল। ওর বলের লেংথটা দারুণ। প্রতি মুহূর্তে আমাদের ব্যাটসম্যানদের পরীক্ষা নিচ্ছিল। বিশেষ করে লর্ডসে আপ-ডাউন পিচে আর্চারের বোলিং খেলা বেশ চাপের। তবে আমরা অজিরা কিন্তু ওর চ্যালেঞ্জটা ভালো সামলেছি।’
স্মিথকে পরীক্ষার পর পঞ্চম দিন সকালে হঠাৎই লাবুশানেকে খেলানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। চতুর্থ দিন পর্যন্ত তিনি জানতেন না, লর্ডসে শেষ বেলায় টেস্ট বাঁচাতে হবে লাবুশানেকে। তাঁর কথায়, ‘এই রকম ঘটনা যখন ঘটে, তখন বিরাট কিছু ভাবার সুযোগ থাকে না। সব মনোবল জড়ো করে শুধু নেমে পড়তে হয়।’
একই সঙ্গে লাবুশানে বলেছেন, ‘রোববার সকালে আমাদের নেট প্র্যাক্টিস চলছিল। নেটে স্টার্কদের বিরুদ্ধে আমি ব্যাটিং করছিলাম। ক্যাপ্টেন টিম পেইন আমার দিকে এগিয়ে আসে তখন বলেছিল, তুমি টিমে খেলছো। তখনও নেটে ব্যাটিং শেষ হয়নি আমার। আরও কয়েকটা বল খেলতে খেলতে নিজেকে বলেছিলাম, আরও বেশি করো।’ সঙ্গে তাঁর সংযোজন, ‘লর্ডসে খেলার সুযোগ পাওয়া সব সময় দারুণ অনুভূতি। তার উপর এই রকম অবিশ্বাস্য ভাবে।’
যা পারফর্ম করেছেন লর্ডস টেস্টে, তাতে তৃতীয় টেস্টের দরজা লাবুশানের জন্য খুলে যেতেই পারে। যা পরিস্থিতি, তাতে স্মিথের তৃতীয় টেস্টে খেলার সম্ভাবনা খুব কম। লাবুশানে অবশ্য বলেছেন, ‘আমি সব সময় একটাই কথা মাথায় রাখি, নিজেকে খেলার জন্য তৈরি রাখো। কখন যে সুযোগ এসে যাবে, কে জানে!’