বিশ্বকাপে নিজেদের ষষ্ঠ ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ভালো ফল করতে হলে তিন বিভাগেই (ব্যাটিং, বোলিং ও ফিল্ডিং) ভালো করতে হবে বলে জানালেন টাইগার অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। একই সঙ্গে আত্মবিশ্বাস ছাড়া ভাগ্যের সহায়তা দরকার বলেও মনে করছেন তিনি।
ইংল্যেন্ডের চলমান বিশ্বকাপের ২৬তম ম্যাচে বৃহস্পতিবার (২০ জুন) অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে মাঠে নামবে বাংলাদেশ। চ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে মাঠে নামার আগে বুধবার সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন মাশরাফি।
বাংলাদেশের অধিনায়ক বলেন, ‘দু’টি ভিন্ন ম্যাচ। এক ম্যাচ খেলার পর অন্য দলকে নিয়ে ভাবতে হচ্ছে। সবার সাথে সবার খেলতে হচ্ছে। ভিন্ন কন্ডিশন, তাই প্রত্যক ম্যাচে নতুনভাবে শুরু করতে হচ্ছে। কালকের (বৃহস্পতিবার) ম্যাচটা আলাদাভাবে গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের ভালো খেলতে হবে। এ জন্য আত্মবিশ্বাসটা অনেক জরুরি। সেই সাথে ভাগ্যও। আমি সব সময় ভাগ্যের কথা বলে থাকি। তবে মাঠে গিয়ে আমাদের সেরা খেলাটা খেলতে পারব।’
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দুর্দান্ত এক জয়ের স্বাদ নিয়েছে বাংলাদেশ। সাকিবের ১২৪ ও লিটন দাসের ৯৪ রানের ওপর ভর করে ৩২২ রানের টাগেট অতিক্রম করে জয় তুলেছে টাইগাররা। ঐ জয়ে আত্মবিশ্বাসী বাংলাদেশ। তবে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে নতুন ম্যাচে ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে যা হয়েছে তা কাজে দেবে না বলে জানান মাশরাফি।
বলেন, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে যা হয়েছে তা এ মাঠে উপকারে আসবে না। অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপে সবসময়ই ফেভারিট দল। বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়া ভিন্ন কিছু করে থাকে। আমার কাছে মনে হয় অন্যতম সেরা দলের সাথে কাল (বৃহস্পতিবার) খেলা। এখানে সেরা খেলা ছাড়া আর কোন অপশনই নাই। ওয়েস্ট ইন্ডিজের চাইতে তাদের বোলিংয়ে অনেক বেশি বৈচিত্র্য আছে। তাদের ব্যাটিংও অনেক ভালো। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ব্যাটিংয়ে যে অবস্থায় ছিল, সেখানে অস্ট্রেলিয়া থাকলে সাড়ে ৩শ’ রান করবে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ যে পরিস্থিতি তৈরি করতে পেরেছে, তা অস্ট্রেলিয়াকে করতে দিলে ভিন্ন ধরনের ফল হবে। তাদের অনেক বৈচিত্র্য আছে, তারা অনেক বেশি প্রফেশনাল দল।’
সাকিবের প্রশংসা করেন মাশরাফি বলেন, ‘সাকিব যা করছে, তা দুর্দান্ত। সাকিব সবসময়, দলের জন্য এমন অবদান রেখেই এসেছে। এটি বড় মঞ্চ, এ জন্য তা সবার চোখে বেশি করে পড়ছে। তিন নম্বরে এসে সে যেভাবে খেলছে, পাঁচ-এ বসে তা করা সম্ভব হয় না। পাঁচে নেমে বড় ইনিংসও খেলাও যায় না। দলের জন্য ও তার জন্য এটি খুবই ভালো। তিন নম্বরে নেমে সে এই ধরনের ইনিংস খেলছে। আমরা বা ও নিজেও হয়তো চিন্তা করেনি, সব কিছু এভাবে এত ভালোভাবে চলতে থাকবে। আমি তার জন্য দোয়া করছি, এভাবে যেন ওর ইনিংসগুলো চলতে থাকে।’
২০০৫ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথম ও শেষ জয় বাংলাদেশের। ১৪ বছর কেটে গেছে অসিদের বিপক্ষে জয় নেই অসিদের। ফলে বিশ্বকাপের এ ম্যাচ নিয়ে অনেক বেশি চিন্তত মাশরাফি।
টাইগার অধিনায়ক বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়ার সাথে আমাদের অনেক বড় গ্যাপ হয়ে গেছে, আমরা জয় পাচ্ছি না। অস্ট্রেলিয়ার সাথে আমাদের খেলারও সুযোগ হয়নি, এটা সত্যি কথা। অস্ট্রেলিয়ার সাথে পরে যে খেলাগুলো আমরা খেলেছি, তখন তাদের সাথে বড় ধরনের পার্থক্য ছিল। তারপরও তাদের সাথে খুব বেশি খেলার সুযোগ পাইনি। তারপরও কালকের (বৃহস্পতিবার) ম্যাচ নিয়েই আমাদের বেশি ফোকাস করা উচিত।’
তিনি আরও বলেম, ‘আমাদেরকে অনেক ভালো ক্রিকেট খেলতে হবে ওদের (অস্ট্রলিয়া) সাথে, অন্যথায়...। অস্ট্রেলিয়ার সাথে আমাদের বেশ ফারাক, ওই জায়গাগুলোতে মানসিক এবং শারীরিকভাবে পরিশ্রম করে কাভার করা যায়। এসব জিনিসগুলো ম্যাচ জিতিয়ে দেয়। সো আমার কাছে যেটা মনে হয়, তিন বিভাগেই (ব্যাটিং, বোলিং ও ফিল্ডিং) আমাদেরকে এগিয়ে থাকতে হবে।’
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে একমাত্র জয়ের নায়ক মোহাম্মদ আশরাফুল। ১০০ রানের ইনিংস খেলেছিলেন তিনি।আশরাফুলকেও স্মরণ করলেন ম্যাশ। বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে আশরাফুল যা করেছিল, সেটি অবশ্য খুবই ভালো ছিল। আমাদের পুরো দলের জন্য ঐ সময় দারুণ এক মুর্হূত ছিল। ঐ স্মৃতি এখনো আমাদের মনে আছে।’