দলের সহ-অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে সোমবার রাতে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে ইংল্যান্ড বিশ্বকাপে উড়ন্ত সূচনা করেছে বাংলাদেশ। ব্যাট হাতে ৭৫ রান ছাড়াও বল হাতে ১ উইকেট নিয়ে দলের জয়ে প্রধান ভূমিকা রাখেন সাকিব। বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্য দিনটি স্মরণীয় বলে মনে করেন তিনি।
ম্যাচ শেষে মিক্সড জোনে উপস্থিত হয়ে সাকিব বলেন, ‘বাংলাদেশ দলের জন্য অবশ্যই স্মরণীয় দিন। বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে কঠিন প্রতিপক্ষের বিপক্ষে জয় তুলে নেয়া, আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিলো। তাই সেদিক থেকে অবশ্যই স্মরণীয়।’
টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচ হলেও, আত্মবিশ্বাসে টগবগ ছিলো বাংলাদেশ। যা ভালো পারফরমেন্স করতে অনেক বেশি সুবিধা করেছে বলে মনে করেন সাকিব। তিনি বলেন, ‘এমন জয়ে খুবই ভালো লাগেছে। আসলে আমাদের ভেতরে বিশ্বাসটা ছিলো। বিশ্বাসটা দেখানোর দরকার ছিলো, যেটার জন্য সবাই বেশ উদগ্রীব ছিলো। আমরা ভাগ্যবান। সেই সাথে সবাই খুবই আত্মবিশ্বাসী ছিলো, যা আমাদের পরিকল্পনাগুলো ভালোভাবে কাজে লাগাতে সহায়ক হয়েছে।’
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করে উড়ন্ত সূচনা করে বাংলাদেশ। ৫০ বলে ৬০ রানের সূচনা এনে দেন দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও সৌম্য সরকার। তবে ৭৫ রানের মধ্যে বিদায় নেন তারা। এরপর দলের হাল ধরেন সাকিব ও মুশফিকুর রহিম। তৃতীয় উইকেটে ১৪১ বলে ১৪২ রান যোগ করেন তারা। যার মাধ্যমে বিশ্বকাপের আসরে যেকোন উইকেট জুটিতে বাংলাদেশের পক্ষে নয়া রেকর্ডও গড়েন সাকিব-মুশফিক। ভেঙ্গে যায় মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ও মুশফিকের আগের রেকর্ড । ২০১৫ সালের বিশ্বকাপে অ্যাডিলেডে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে পঞ্চম উইকেটে ১৪৩ বলে ১৪১ রান করেছিলেন মাহমুদুল্লাহ-মুশফিক। ম্যাচে বাংলাদেশ ১৫ রানে জয় পেয়েছিলো।
আজকের ম্যাচে মুশফিকের সাথে জুটিটি গুরুত্বপূর্ণ ছিলো বলে মনে করেন সাকিব। তিনি বলেন, ‘নিজের কথা যদি চিন্তা করি, তবে অবশ্যই দিনটা ভালো আমার জন্য। দলের জন্য ভালো কিছু করতে পেরেছি। ব্যক্তিগত কিছু অর্জন ছিলো। মুশফিক ভাইর সাথে ভালো জুটি গড়েছি। আমার কাছে মনে হয়, ব্যাটিং-এর ভীতটা গড়ার জন্য এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিলো। শুরুটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিলো। যেটা আমরা ভালোভাবে করতে পেরেছি।’
টুর্নামেন্টের বাকী ম্যাচগুলোতেও ভালো করার ইঙ্গিত দিয়ে রাখলেন সাকিব। তিনি বলেন, ‘সামনে আরও ভালো করার চেষ্টা থাকবে। যেহেতু এটা মাত্র শুরু হলো আমাদের। আরও আটটা ম্যাচ আছে। আরও কঠিন পরিস্থিতি সামলাতে হবে। এ ম্যাচের পর প্রতিপক্ষ আমাদের সঙ্গে আরও সতর্ক হয়ে খেলবে। আমাদের আরও ভালোভাবে প্রস্তুতি নিতে হবে। আরও ভালোভাবে পরিকল্পনা কাজে লাগাতে হবে। আমাদের চেষ্টাতো থাকবেই আরও ভালো করার। সবাই আমাদের নিয়ে সতর্ক থাকবে, সেটি আমাদের জন্য একদিক দিয়ে ভালো।’
২০০৭ সালে প্রথম বিশ্বকাপে খেলতে নামেন সাকিব। এরপর ২০১১, ২০১৫ ও এবারের আসরে বাংলাদেশের গুরত্বপূর্ণ খেলোয়াড় তিনি। প্রথম তিন বিশ্বকাপের প্রথম তিন ম্যাচেই ব্যাট হাতে হাফ-সেঞ্চুরি করেছিলেন সাকিব। সর্বশেষ ম্যাচেও এর ব্যতিক্রম হয়নি। এর পেছনে রহস্যটা কি? এমন প্রশ্নের জবাবে সাকিব বলেন, ‘তা জানি না রহস্য কি। তবে অন্যান্য বিশ্বকাপের মত এবারের শেষটা ওরকম করতে চাই না। আরও ভালো করার চেষ্টা থাকবে। তবে শুরুটা ভালো হলে সুবিধাটা বেশি থাকে। তারপরও আটটা ম্যাচ আছে, এখানে অনেক কিছু করার সুযোগ আছে দলের জন্য।’
বিশ্বকাপের শুরুটা ভালো হওয়ায় দল মানসিকভাবে চাঙ্গা থাকবে বলে মনে করেন সাকিব। তিনি বলেন, ‘আমাদের শুরুটা ভালো হলো। মনে করি, সবাই খুবই ভালো অবস্থায় আছে, বিশেষ করে মানসিকভাবে। এভাবে যেতে পারলে আমাদের অনেক দূর যাওয়া সম্ভব।’