দানবীয় ইনিংস খেললেন সৌম্য সরকার। যাতে ৫০ ওভারের ক্রিকেটে বাংলাদেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে করলেন তিনি ডাবল সেঞ্চুরি। তার রেকর্ড গড়া ইনিংসেই ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের (ডিপিএল) শিরোপা জিতেছে আবাহনী। মঙ্গলবার শেখ জামালকে ৯ উইকেটে হারিয়ে শিরোপা ধরে রেখেছে ঢাকার ঐতিহ্যবাহী ক্লাবটি।
চ্যাম্পিয়ন হিসেবে এবারের প্রিমিয়ার লিগ শুরু করেছিল আবাহনী। তবে প্রথম পর্বে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের দাপটে শিরোপার আশা ফিকে হয়ে আসে তাদের। তবে সুপার লিগের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে নিজেদের কাছেই শ্রেষ্ঠত্ব রেখে দিলো আবাহনী।
মঙ্গলবার বিকেএসপিতে সুপার লিগের শেষ রাউন্ডে শেখ জামালকে উড়িয়ে তারা নিশ্চিত করেছে শিরোপা। তানভীর হায়দারের হার না মানা ১৩২ রানের ইনিংসে ভর দিয়ে শেখ জামাল নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে করে ৩১৭ রান। কঠিন এই লক্ষ্যও মাত্র ১ উইকেট হারিয়ে ১৭ বল আগেই আবাহনী পেরিয়ে গেছে সৌম্যর হার না মানা ডাবল সেঞ্চুরিতে।
সুপার লিগের শেষ রাউন্ড শেষে ১৬ খেলায় আবাহনীর পয়েন্ট ২৬ (+০.৮৬৬)। সমান খেলায় রূপগঞ্জের পয়েন্টও ২৬ (+০.৫১৭)। তবে নেট রানরেটে এগিয়ে থাকায় শিরোপা জেতার উল্লাসে মাতে আবাহনী। তাই প্রাইম ব্যাংকের বিপক্ষে ৮৮ রানে জিতলেও হতাশায় ডুুবেছে রূপগঞ্জ। দিনের অন্য খেলায় মোহাম্মদ আশরাফুল (৭৬) রান পেলেও জিততে পারেনি তার দল মোহামেডান। প্রাইম দোলেশ্বরের বিপক্ষে হেরেছে তারা মাত্র ৩ রানে।
নিঃসন্দেহে আবাহনীর জয়ের নায়ক সৌম্য। লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে বাংলাদেশের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি পূরণ করে তিনি খেলেছেন হার না মানা ২০৮ রানের ইনিংস। ১৫৩ বলে ১৪ চার ও ১৬ ছক্কায় সাজানো ইনিংসে নতুন করে লিখেছেন বেশ কয়েকটি রেকর্ড। তার ওপেনিং সঙ্গী জহুরুল ইসলামও পেয়েছেন সেঞ্চুরি। ১২৮ বলে ৭ চার ও ৩ ছক্কায় তিনি ১০০ রান করে আউট হওয়ার আগে সৌম্যর সঙ্গে গড়ে যান লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে যে কোনও উইকেটে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রানের (৩১২) জুটি।
জহুরুল আউট হলেও ডাবল সেঞ্চুরি করে আবাহনীর জয় নিশ্চিত করে মাঠ ছাড়েন সৌম্য। তার ডাবলের জন্য নতুন ব্যাটসম্যান সাব্বির রহমান ৭ বল খেললেও খোলেননি রানের খাতা।
অথচ শেখ জামালের এমন শোচনীয় হারের কথা ঘুণাক্ষরেও চিন্তা করার কথা নয় নিজেদের ব্যাটিং ইনিংসের পর। টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা বাজে হলেও মিডল অর্ডারে তানভীর হায়দারের ব্যাটে বড় সংগ্রহ দাঁড় করায় তারা। ছয় নম্বরে নেমে লিস্ট ‘এ’ ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি পূরণ করে তিনি অপরাজিত থাকেন ১৩২ রানে।
১১৫ বলের ইনিংসে ১০ বাউন্ডারির সঙ্গে মেরেছেন ৬ ছক্কা। লোয়ার অর্ডারে যোগ্য সঙ্গ পেয়েছেন তিনি ইলিয়াস সানি (৪৫) ও মেহরাব হোসেনের (৪৪) কাছ থেকে।
শেষ পর্যন্ত তারা ৩১৭ রানের বড় স্কোর গড়লেও সৌম্যর ইতিহাস গড়ার দিনে কোনও কিছুই কাজে আসেনি। ম্যাচসেরার পুরস্কার জেতা এই ওপেনারের দানবীয় ইনিংসের আগে বল হাতে আবাহনীর নেতৃত্ব দিয়েছিলেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। বিশ্বকাপের উদ্দেশে আয়ারল্যান্ড যাত্রার আগে ১০ ওভারে ৫৬ রান দিয়ে এই পেসারের শিকার ৪ উইকেট।