দেশের লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটের রেকর্ড বইয়ের পাতা তছতছ করে দিলেন সৌম্য সরকার। এই ফরম্যাটের ক্রিকেটে এতদিন ১৯০ রানের ইনিংস নিয়ে শীর্ষে ছিলেন রকিবুল হাসান। তাকে ছাপিয়ে এখন কেবলই সৌম্যর গর্জন। লাল সবুজের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে ২০০ রানের মাইলফলক স্পর্শ করলেন এই ড্যাশিং আবাহনী ওপেনার।
২০০ রানের অনন্য রেকর্ডের দিনে এই টাইগার রেকর্ড গড়লেন ছক্কারও। ভেঙেছেন নিজের রেকর্ড। এক ইনিংসে ১১টি ছক্কায় বিগত দিনগুলোতে তার নামের পাশে ছিল স্রেফ মাশরাফি বিন মুত্তর্জা ও সাইফ হাসানের নাম। ক্ষুরধার ব্যাটে শেখ জামাল বোলারদের ওপর স্টিম রোলার চালিয়ে ১৫ ছক্কায় নিজেকে এবং মাশরাফি ও সাইফকেও টপকে এখন তিনিই সেরা।
ডাবল সেঞ্চুরির ইনিংসটি সৌম্য সাজিয়েছেন ১৪ চার ও ১৫টি ছয়ে। ১৪৯ বল খেলে তিনি ডাবল সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন। সে সময় স্ট্রাইক রেট ছিল ১৩৪.২২। ইমতিয়াজকে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে সৌম্য ডাবল পূর্ণ করেন।
ক্যারিয়ারে এর আগেও একবার ডাবল সেঞ্চুরি হাকিয়েছিলেন এই রেকর্ড ম্যান। সেটা ২০১২ সালের কথা। কুয়ালালামপুরে অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপে কাতারের বিপক্ষে ১৪৭ বলে খেলেছিলেন ২০৯ রানের চোখ ধাঁধানো ইনিংস। যেখানে চারের মার ছিল ২৭টি। আর ছয় ৮টি।
মাত্র একদিন আগের কথা, এই বিকেএসপিতেই লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের বিপক্ষে ৭৯ বলে ১০৬ রানের বিস্ফোরক ইনিংস খেলে আরেকবার নিজের জাত চিনিয়েছিলেন মারকুটে সৌম্য সরকার। অথচ তার আগের ১১ ম্যাচে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের চলতি মৌসুমে তার নামের পাশে সর্বোচ্চ ছিল ৪৩ রান। যেন শেকলে আটকা পড়েছিল তার ব্যাট। তাতে অনেকেই তার বিশ্বকাপ দলে ডাক পাওয়ার যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন।
সমালোচকদের সেই প্রশ্নের প্রথম জবাবটা গত রোববার তিনি দিয়েছিলেন দাপুটে ব্যাটে। আজও সেই দাপট অব্যাহত থাকলো। গত রোববার ব্যাট হাতে যে শেকল ভাঙার গান তিনি তুলেছিলেন আজও তা অনুরণিত হল। ৭৮ বলে তুলে নেন টানা দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। এবার প্রতিপক্ষ অবশ্য শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব।
মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) বিকেএসপিতে শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে দলটির দেয়া ৩১৮ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিং নেমে জহুরুল ইসলাম অমির সঙ্গে অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়ে তুলে নেন ডাবল সেঞ্চুরি। অমিও পেয়েছেন সেঞ্চুরি, ১২৭ বলে সাতটি চার আর তিনটি ছক্কায় তিন অঙ্কের ঘরে পৌঁছেন তিনি। পরের বলেই বিদায় নেন। ৯ উইকেটে শেখ জামালকে হারিয়েছে আবাহনী। ৩১৮ রানের টার্গেটে ব্যাটিংয়ে নেমে ৪৭.১ ওভারে জয়ের বন্দরে পৌঁছে আবাহনী। সৌম্য অপরাজিত থাকেন ১৫৩ বলে ২০৮ রানে, সেখানে ছিল ১৬টি ছক্কা আর ১৪টি চারের মার। ছক্কা হাঁকিয়েই দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন সৌম্য।