বিকেএসপির বিপক্ষে নাটকীয় জয়ে ওয়ালটন ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের সুপার সিক্সে উঠেছে মোহামেডান।
ফতুল্লায় বৃহস্পতিবার প্রথম পর্বের শেষ রাউন্ডে মোহামেডান জিতেছে ১ উইকেটে। বিকেএসপির ৭ উইকেটে করা ২৪৯ রান মোহামেডান পেরিয়ে যায় এক বল বাকি থাকতে।
জয়ের জন্য শেষ ওভারে ১ উইকেট হাতে নিয়ে মোহামেডানের দরকার ছিল ৯ রান। পেসার সুমন খানের প্রথম দুই বল থেকে আসে দুই রান। তৃতীয় বলে চার হাঁকান কাজী অনিক। পরের বলে নেন এক রান। ২ বলে চাই ২। পঞ্চম বলে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে রুদ্ধশ্বাস জয় নিশ্চিত করেন সাকলাইন সজীব। অনিক ১৩ ও সাকলাইন ৫ রানে অপরাজিত ছিলেন।
লক্ষ্য তাড়ায় এর আগে মোহামেডানের শুরুটা হয়েছিল দারুণ। ৭৭ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়েন লিটন দাস ও ইরফান শুক্কুর। ইরফান ৫৬ বলে চারটি চারে ৪১ রান করে ফিরলে ভাঙে এ জুটি। ইরফান না পারলেও লিটন তুলে নেন ফিফটি। এরপর অবশ্য ইনিংস বড় করতে পারেননি ডানহাতি ব্যাটসম্যান। ৫৭ বলে ৬ চারে করেন ৫৩ রান।
তৃতীয় উইকেটে ৪৭ রানের জুটিতে দলকে এগিয়ে নেন অভিষেক মিত্র ও রকিবুল হাসান। আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান রকিবুল এদিনও শুরুটা করেছিলেন দারুণ। তবে ইনিংস বড় করতে পারেননি এবার। ৩৭ বলে ২টি করে চার ও ছক্কায় করেন ৩৫ রান।
এরপর দ্রুতই মোহাম্মদ আশরাফুল ও নাদীফ চৌধুরীর উইকেট হারায় মোহামেডান। হাসান মুরাদের তিন বলের মধ্যে ফেরা এই দুই ব্যাটসম্যানের কেউই দুই অঙ্কে যেতে পারেননি। তখন ১৭২ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে চাপে মোহামেডান।
এক প্রান্ত আগলে রাখা অভিষেক রজত ভাটিয়াকে সঙ্গে নিয়ে দলের স্কোর দুইশ পার করেন। কিন্তু পরপর দুই ওভারে এই দুজনের বিদায়ে আবার বিপদে পড়ে মোহামেডান। ৬৯ বলে ২ চার ও ৩ ছক্কায় ৬৫ রান করেন অভিষেক।
৪৯তম ওভারে রাহাতুল ফেরদৌস যখন নবম ব্যাটসম্যান হিসেবে রান আউটে কাটা পড়লেন, তখনো জয় থেকে ৯ রান দূরে মোহামেডান। শেষ ওভারে স্নায়ুর চাপ সামলে দলকে সুপার সিক্সের টিকিট এনে দেন অনিক ও সাকলাইন।
বিকেএসপির হয়ে মুরাদ ৩০ রানে নেন সর্বোচ্চ ৪ উইকেট। ২টি করে উইকেট নেন নওশাদ ইকবাল ও তানজিম হাসান।
এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানদের দৃঢ়তায় আড়াইশ ছোঁয়া পুঁজি পেয়েছিল বিকেএসপি। সর্বোচ্চ ৬০ রান আসে তিনে নামা আমিনুল ইসলামের ব্যাট থেকে। ৯২ বলে ৫ চারে ইনিংসটি সাজান তিনি।
এ ছাড়া শামীম হোসেন ৭৩ বলে ২টি করে চার ও ছক্কায় ৪৯, আকবর আলী ৪১ বলে ৩৮, পারভেজ হোসেন ইমন ৩৩ বলে ৩৮ রান করে দলের সংগ্রহে অবদান রাখেন। ওপেনার ফাহাদ আহমেদ করেন ৪৩ রান।
৩৭ রানে ৩ উইকেট নিয়ে মোহামেডানের সেরা বোলার রাহাতুল। রজত ২টি এবং অনিক ও সাকলাইন নেন একটি করে উইকেট। ব্যাট হাতে দারুণ ইনিংসের জন্য ম্যাচসেরা হয়েছেন অভিষেক।
১১ ম্যাচে ছয় জয় ও পাঁচ হারে পঞ্চম স্থানে আছে শেষ দল হিসেবে সুপার সিক্সে ওঠা মোহামেডান। তাদের আগে সুপার সিক্স নিশ্চিত করে আবাহনী, লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ, প্রাইম দোলেশ্বর, প্রাইম ব্যাংক ও শেখ জামাল।
১১ ম্যাচে ৮ হার ও ৩ জয়ে ১২ দলের মধ্যে ১১তম স্থানে আছে নবাগত বিকেএসপি। তিন দলের রেলিগেশন লিগে তাদের সঙ্গী উত্তরা ও ব্রাদার্স ইউনিয়ন। এই পর্বের সেরা দল টিকে থাকবে প্রিমিয়ার লিগে, অন্য দুই দল নেমে যাবে প্রথম বিভাগে।