এ্যাশেজ সিরিজের পঞ্চম ও শেষ টেস্টে সিডনিতে চতুর্থ দিন শেষে রানের পাহাড়ে চাপা পড়েছে সফরকারী ইংল্যান্ড। প্রথম ইনিংসে ৭ ইউকেটে ৬৪৯ রানের বিশাল স্কোর গড়ে ৩০৩ রানে এগিয়ে ইনিংস ঘোষণা করে অস্ট্রেলিয়া। এরপর দিন শেষে ৯৩ রানে ইংল্যান্ডের ৪ উইকেট তুলে নিয়ে এই টেস্টেও জয়ের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে স্বাগতিকরা।
অধিনায়ক জো রুটের আঙ্গুলের ইনজুরিতে ইংল্যান্ডের দুঃশ্চিন্তার পাল্টাটা আরো ভারী হয়েছে। সোমবার শেষ দিনে ইতোমধ্যেই ৩-০’তে সিরিজ পরাজিত ইংলিশরা ম্যাচ বাঁচানোর জন্যই মাঠে নামবে বলে আত্মবিশ্বাসী মনোভাব পোষণ করেছেন রুট। চতুর্থ দিনশেষে রুট ৪২ ও জনি বেয়ারস্টো ১৭ রানে অপরাজিত আছেন।
ইনিংসের তৃতীয় ওভারেই ওপেনার মার্ক স্টোনম্যানকে শূন্য রানে এলবিডব্লিউ’র ফাঁদে ফেলেন মিশেল স্টার্ক। যদিও রিভিউ আবেদন করেও তাতে সফল হয়নি ইংল্যান্ড। পরের বলেই জোস হ্যাজেলউডের বলে ৫ রানে স্লিপে শন মার্শের হাতে জীবন ফিরে পান এ্যালিস্টার কুক। কিন্তু এই সুযোগকে কাজে লাগাতে পারেনি মেলবোর্নে ডাবল সেঞ্চুরি করে ম্যাচ বাঁচানো কুক। অফ-স্পিনার ন্যাথান লিঁওর প্রথম বলেই বোল্ড হয়ে ১০ রানে ফিরে যান অভিজ্ঞ এই ওপেনার। সিরিজে ৪৭ গড়ে ৩৪৭ রান করে ষষ্ঠ ব্যাটসম্যান হিসেবে কুক টেস্টে ১২ হাজার রান সংগ্রহ করেছেন। ১৫ রানে জেমস ভিনসে লিঁওর বলে কট বিহাইন্ডের আবেদনে রিভিউতে বেঁচে যান। কিন্তু তিন রান পরেই প্যাট কামিন্সের বলে স্লিপে স্টিভ স্মিথের হাতে জমা পড়েন। প্রথম ইনিংসে ৬২ রান করা ডেভিড মালানও নিজেকে প্রমাণে ব্যর্থ হয়েছেন। ৫ রানে লিঁওর বলে এলবিডব্লিউ’র ফাঁদে পড়ে বিদায় নেন মালান।
এর আগে দুই ভাই শন ও মিশেল মার্শ অনন্য এক রেকর্ড গড়ে অস্ট্রেলিয়ার রানের খাতা সমৃদ্ধ করেছেন। ভাইয়ের তৃতীয় জুটি হিসেবে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে একই টেস্টে সেঞ্চুরি করেছেন শন ও মিশেল। এর আগে দুই ভাই একসাথে জুটি বেঁধে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে সেঞ্চুরি করেছিলেন গ্রেগ ও ইয়ান চ্যাপেল এবং স্টিভ ও মার্ক ওয়াহ। অবশ্য সব মিলিয়ে টেস্ট ক্রিকেটে অষ্টমবারের মত এই ঘটনা ঘটলো।
অস্ট্রেলিয়ান হয়ে প্রথম দুই ভাইয়ের জুটি হিসেবে চ্যাপেল ভাতৃদ্বয় ওভালে ১৯৭২ সালে ও ওয়াহ ভাতৃদ্বয় ২০০১ সালে একই ভেন্যুতে একই ইনিংসে সেঞ্চুরি করেছিলেন। যদিও মিশেল মার্শ সেঞ্চুরি করার পরের বলেই টম কারানের বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরের পথে ফেরার আগে ১৪১ বলে ১৫টি বাউন্ডারি ও দুটি ওভার বাউন্ডারির সহায়তায় ১০১ রান সংগ্রহ করেছেন। পার্থে তৃতীয় টেস্টেও তিনি ১৮১ রানের ইনিংস উপহার দিয়েছিলেন। শনিবার উসমান খাজার ১৭১ রানের পরে তিনি ছিলেন অস্ট্রেলিয়ার প্রথম ইনিংসে তৃতীয় সেঞ্চুরিয়ান। বিরতির পরে কভার থেকে স্টোনম্যানের সরাসরি থ্রোতে শন মার্শেও ইনিংস থামে ১৫৬ রানে। ৪০৩ মিনিট ক্রিজে থেকে ২৯১ রানের মোকাবেলায় তিনি সিরিজের দ্বিতীয় ও ২৮ টেস্টে ষষ্ঠ সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন। চা বিরতির ঠিক আগে স্মিথ ইনিংস ঘোষণার সময় টিম পেইন ৩৮ ও প্যাট কামিন্স ২৪ রানে অপরাজিত ছিলেন।
সিডনির প্রচন্ড গরমে ৪২ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রায় দারুন ইকনোমিতে বোলিং করে অভিজ্ঞ পেসার জেমস এ্যান্ডারসন ৩৪ ওভারে ৫৬ রানে নিয়েছেন এক উইকেট। স্পিনার মঈন আলী ও অভিষিক্ত ম্যাসন ক্রেন একত্রে ৩৬৩ রান দিয়ে দখল করেছেন ৩ উইকেট।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
ইংল্যান্ড প্রথম ইনিংস ৩৪৬ (রুট ৮৩, মালান ৬২: কামিন্স ৪-৮০)
অস্ট্রেলিয়া প্রথম ইনিংস (আগেরদিন ৪৭৯-৪) ৭ উইকেটে ৬৪৯ ইনিংস ঘোষনা (খাজা ১৭১, শন মার্শ ১৫৬, মিশেল মার্শ ১০১, ওয়ার্নার ৫৬ : আলী ২-১৭০, এন্ডারসন ১-৫৬)
ইংল্যান্ড দ্বিতীয় ইনিংস ৪ উইকেটে ৯৩ (রুট ৪২*, বেয়ারস্টো ১৭*: লিঁও ২-৩১, কামিন্স ১-১২, স্টার্ক ১-১৭)