বোলিং আক্রমনে উপমহাদেশের উইকেটে স্পিনারদের দাপট দেখা গেলেও ইংল্যান্ডের কন্ডিশনে পেসাররাই দাপট দেখিয়ে থাকেন। সুইং ও বাউন্সে ভরা উইকেটে তারাই সর্বেসর্বা। আগুনের হঙ্কা ছড়ানো বোলিংয়ে ব্যাটসম্যানদের ওপর যত্রতত্রই প্রভাব বিস্তার করে থাকেন।
পক্ষান্তরে ইংলিশ কন্ডিশনে স্পিনারদের কাজ একটিই; লেংথে বল ফেলে, ঘূর্ণি যাদু চালিয়ে প্রতিপক্ষের রানের লাগাম টেনে ধরা। যাতে করে ব্যাটসম্যানরা চাপে থাকেন। সেই চাপ বাড়তে বাড়তে এমন পর্যায়ে গিয়ে দাঁড়ায় যা সামলাতে না পেরে ব্যাটসম্যানরা উইকেট উপহার দিয়ে থাকেন। কৌশলটি একেবারে ঠোঁটস্থ টাগার অফস্পিনিং অলরাউন্ডার মেহেদি হাসান মিরাজের। ৩০ মে থেকে ইংল্যান্ড ও ওয়েলসে অনুষ্ঠেয় আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপে ঠিক এভাবেই দলের জন্য অবদান রাখতে চান।
‘আমার কাছে মনে হয় স্পিনারদের রানটা চেক দেয়া খুব জরুরি। কারণ ওইসব দেশে কিন্তু সেখানে স্পিনাররা বেশী সাহায্য পাবে না। উইকেট না বের করতে পারলেও হিসেবি বোলিং করতে হবে। ওভার প্রতি পাঁচ সাড়ে পাঁচ করে রান দিলে আমার কাছে মনে হয় অনেক ভালো বোলিং ফিগার। এর মধ্যে ২/১ টা উইকেট নিতে পারলে তো অনেক ভালো। এটাই যে পেসারদের সাহায্য করা রান কম দেওয়া স্পিনারদের মূল ভূমিকা থাকবে বিশ্বকাপে।’
ইংল্যান্ডের কন্ডিশন মিরাজের জন্য এবারই প্রথম নয়। ২০১৭ সালে আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে দলের হয়ে লড়েছিলেন। সেখানে খুব কাছ থেকেই দেখেছেন পেস বান্ধব এই কন্ডিশনে কী করে দলকে সাহায্য করতে হয়।
‘ইংল্যান্ডে আমরা চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলেছি, যেখানে দলের সঙ্গে আমিও ছিলাম। যদিও একটা ম্যাচ খেলার সুযোগ হয়েছিল। উইকেট খুব কাছ থেকেই দেখেছি, অনেক ভালো উইকেট থাকে। আমি যদি চেষ্টা করি ভালো জায়গায় বোলিং করার তাহলে ব্যাটসম্যান অনেক সময় ভুল করে বসতে পারেন। ওইখানে তেমন স্পিন থাকবে না, সুন্দর ভাবে বল ব্যাটে আসে। পরিকল্পনা অনুযায়ী বোলিং করতে হবে সেটা নিয়েই এখন থেকে কাজ করবো।’
রোববার (৩১ মার্চ) মিরপুর ক্রিকেট একাডেমি মাঠে তিনি একথা বলেন।
বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সিংহভাগ ক্রিকেটারদের অনুরুপ মিরাজের বিশ্বকাপ প্রস্তুতিটাও কিছুটা দেরিতে শুরু হয়েছে। নিউজিল্যান্ড সফর থেকে ফিরেই বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন। সপ্তাহ দুয়েকের ছুটি শেষে এরপর যোগ দিয়েছেন নিজ ক্লাব আবাহনীতে। একটি ম্যাচ খেলেছেন মাত্র।
লিগ চলায় বিশ্বকাপ সামনে রেখে তাদের অনুশীলন ক্যাম্প এখনো শুরু হয়নি। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) দেওয়া তথ্যমতে ক্যাম্প শুরু হতে হতে এপ্রিলের ২০ তারিখ। সেই অবধি ডিপিএলকেই বিশ্বকাপের প্রস্তুতির মূল মঞ্চ হিসেবে দেখছেন এই ২৫ বছর বয়সী তরুণ ক্রিকেটার।
‘সামনে আমাদের আয়ারল্যান্ড সিরিজ আছে এরপর আমরা বিশ্বকাপ খেলতে যাবো। আমার কাছে মনে হয় আমরা প্রিমিয়ার লিগ চলাকালীন যে এক মাস সময় পাবো এই সময়ের মধ্যেই নিজেদেরকে গুছিয়ে নিতে হবে। কারণ, আমাদের হাতে ওইরকম সময় নেই। ওইরকম সময় পাবোও না, প্রিমিয়ার লিগের ফাঁকে ফাঁকে যতটুক প্রস্তুতি নেওয়া সম্ভব ততটুকই নিবো।’