দেশে ফেরার পরও বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের মুখে ছিল ভয়ের ছাপ। দেশে ফিরে মাহমুদউল্লাহ জানালেন সারা রাত তারা কেউ ঘুমাতে পারেননি। সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের বিমান শনিবার রাত ১০টা ৪২ মিনিটে এসে ঢাকায় পৌঁছায়।
মাহমুদউল্লাহ বিমান বন্দরে বলেছেন, ‘এ ঘটনা একেবারেই অপ্রত্যাশিত। এমন ভয়ঙ্কর ঘটনা কারোরই কাম্য নয়। আমরা খুব ভাগ্যবান। এমন ঘটনার পরও আমাদের কিছু হয়নি।’
তিনি আরও বলেছেন, ‘কাল (শুক্রবার) সারা রাত আমরা কেউ ঘুমাতে পারিনি। আমাদের শুধু মনে হচ্ছিল, একটু এদিক-ওদিক হলে কী ভীষণ ঘটনাই না ঘটতো!’
তৃতীয় টেস্ট বাতিল করে গোটা দলকে ফিরিয়ে আনায় বিসিবিকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ। তিনি বলেছেন, ‘বিসিবিকে এবং পাপন ভাইকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আমাদের দ্রুত দেশে ফিরিয়ে এনেছেন তারা। দেশবাসীর কাছে আমরা দোয়া চাই। আমরা যেন মানসিক ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে পারি সেই দোয়াই চাই তাদের কাছে।’
পরে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন অপেক্ষমাণ সাংবাদিকদের জানান ক্রিকেটাররা সবাই মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন। তিনি বলেন, ‘একটু আগে মাহমুদউল্লাহ বলেছে তারা ঘুমাতে পারেনি সারারাত। ওদের জন্য এটা ২২ ঘণ্টার ভ্রমণ। এতো লম্বা ভ্রমণে তারা সবাই ক্লান্ত। মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে অনেকেই। এখন ওদের সাথে কথা বলারও কিছু নেই।’
বিসিবি সভাপতি আরো বলেন, ‘আমরা সবাই ওদেরকে বলেছি, যাও বাসায় যাও। সবকিছু বাদ দিয়ে, ঠাণ্ডা মাথায়, নিজেদের মতো করে, যা ভালো লাগে সেভাবে কাটাও। সবকিছু ঠাণ্ডা হলে তারপর আমাদের সাথে যোগাযোগ করো। খেলাধুলা নিয়ে এই মুহূর্তে কোনো চিন্তা ভাবনা করবে না। পরিবারের সাথে সময় কাটাবে।’
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার ক্রাইস্টচার্চে হামলার স্থান থেকে ৫০ গজ দূরে ছিলো তামিম-মুশফিকদের বাস। তৃতীয় টেস্টের ভেন্যু হ্যাগলি ওভাল মাঠের খুব কাছে আল নূর মসজিদে শুক্রবার স্থানীয় সময় বেলা দেড়টার দিকে সন্ত্রাসী হামলা হয়। অনুশীলন শেষে ওই মসজিদে জুমার নামাজ পড়তে গিয়েছিলেন দলের কয়েকজন।
সেখানে তারা একটু আগে মসজিদে ঢুকলেই ঘটে যেতে পারতো স্মরণকালের নৃশংসতম ঘটনা। সংবাদ সম্মেলনের জন্য মসজিদে যেতে দেরি হওয়াতেই মূলত বেঁচে গেছেন মুশফিক-তামিমরা। মসজিদে প্রবেশের মুহূর্তে স্থানীয় এক নারী বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের সতর্ক করেন গোলাগুলির কথা জানিয়ে। আতঙ্কিত খেলোয়াড়েরা তখন দৌড়ে হ্যাগলি ওভালে ফেরত আসেন। ওখান থেকে বাংলাদেশ দলকে বিশেষ নিরাপত্তায় নভোটেল হোটেলে নিয়ে যাওয়া হয়।