নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে মসজিদে সন্তাসী হামলায় মর্মাহত পুরো ক্রিকেট বিশ্ব। সেই তালিকায় রয়েছেন ভারতের অধিনায়ক বিরাট কোহলি, পাকিস্তানের দলনেতা সরফরাজ আহমেদ ও সাবেক পেসার শোয়েব আক্তার, শহীদ আফ্রিদি, ইমরান খানও।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটারে কোহলি লিখেছেন, ‘শকিং অ্যান্ড ট্রাজিক। ক্রাইস্টচার্চের এই নৃশংস ঘটনায় যারা হতাহত হয়েছে, সবার প্রতি আমার অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে গভীর সমবেদনা। আমার চিন্তা-চেতনা জুড়ে রয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। ভালো থাকুন।’
পাকিস্তানের অধিনায়ক সরফরাজ টুইট করে লিখেছেন, ‘নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে মসজিদে হামলার খবর শুনে দুঃখ পেলাম। আমার দোয়া এবং প্রার্থনা এই হামলায় নিহত এবং তাদের পরিবারের প্রতি। আল্লাহকে ধন্যবাদ যে, বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে রক্ষা করেছেন।’
শোয়েব আখতার লিখেছেন, ‘ক্রাইস্টচার্চ মসজিদের মধ্যে হামলার ঘটনা দেখে আমি হতভম্ভ। এখন আমরা প্রার্থনার জায়গাগুলোতেও নিরাপদ নেই।’
বাংলাদেশ ওয়ানডে ও টেস্ট দলের নিয়মিত অধিনায়ক সাকিব আল হাসানও এ ঘটনায় মর্মাহত হয়েছেন। ইনজুরি না থাকলে টেস্ট সিরিজ খেলতে তিনিও আজ নিউজিল্যান্ড সফরে থাকতেন।
টুইটারে তিনি লিখেন, ‘নিউজিল্যান্ডের এই ঘটনা নিয়ে আমার কিছুই বলার নেই। আমি আল্লাহ'র কাছে শুকরিয়া জানাই যে আমার সতীর্থরা, আমার ভাইয়েরা রক্ষা পেয়েছে।’
হামলার সংবাদ পেয়ে তামিম ইকবালকে ফোন করে কথা বলেছেন পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটার শহীদ আফ্রিদি। ফোন দিয়ে সার্বিক অবস্থান খোঁজ নিয়েছেন তিনি।
ক্রাইস্টচার্চের ঘটনাকে ভয়াবহ উল্লেখ করে এক টুইট বার্তায় আফ্রিদি বলেন, নিউজিল্যান্ডকে অনেক নিরাপদ ও শান্তিপূর্ণ দেশ ভাবেন। সেখানকার মানুষও বন্ধুত্বপূর্ণ। তামিমের সাথে কথা হলো, বাংলাদেশ ক্রিকেট দল ও স্টাফরা নিরাপদে আছেন, এটা স্বস্তিদায়ক। বিশ্বের উচিৎ ঘৃণার বিরুদ্ধে এক হওয়া, সন্ত্রাসীদের কোনো ধর্ম নেই।
পাকিস্তানের ক্রিকেট দলের বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক ও বর্তমানে দেশটির প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান এ হামলার পেছনে মুসলিম বিদ্বেষী মনোভাবকে দায়ী করেছেন।
টুইটারে তিনি লিখেন, ‘নাইন ইলেভেনের পর যেকোন মুসলমানের দ্বারা সংঘটিত সন্ত্রাসী ঘটনার জন্য ইসলাম এবং ১৩০ কোটি মুসলিমদের সমষ্টিগতভাবে দায়ী করা হচ্ছে। মুসলিমদের রাজনৈতিক সংগ্রামকে দানবীয় রূপ দিতে ইচ্ছাকৃতভাবে এটা করা হচ্ছে।
শুক্রবার নিউজিল্যান্ডের স্থানীয় সময় দুপুর ১টা ৪০ মিনিটের দিকে ক্রাইস্টচার্চের দুটি মসজিদে সন্ত্রাসী হামলা চালায় এক বন্দুকধারী। হামলায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ৪৯ জন নিহত হয়েছেন। বন্দুকধারী সন্ত্রাসী যে মসজিদে হামলা চালিয়েছে সেই মসজিদে জুমার নামাজ পড়তে যাচ্ছিলেন তামিম ইকবালসহ প্রায় ১৫-১৬ জনের বাংলাদেশ ক্রিকেট দলে একটি দল।
তবে অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছেন তারা। মসজিদ থেকে মাত্র ৫০ গজ দূরে থাকতে হামলা চালায় অস্ট্রেলিয়ার ওই সন্ত্রাসী। হামলার ঘটনা বুঝতে পেরে টাইগারদের বহনকারী বাসের মধ্যেই তারা প্রথমে শুয়ে পড়েন এবয় পরে পরিস্থিতি বুঝে দ্রুত টিম হোটেলে চলে যান।
নিজ চোখে ভয়ঙ্কর এ জঙ্গি হামলা দেখার পর টাইগার ওপেনার তামিম ইকবাল তার অফিসিয়াল টুইটারে লিখেন, ‘আমরা বন্দুকধারীদের হামলা থেকে সুরক্ষিত আছি। এটি একটি ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা। এবং সবাই আমাদের জন্য দোয়া করবেন।’
ওই ঘটনায় সিরিজের শেষ ও তৃতীয় টেস্ট ম্যাচ বাতিল করা হয়েছে। এমনকি শনিবারই (১৬ মার্চ) বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের ১৫ সদস্যসহ মোট ১৯ জনকে দেশে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পক্ষ থেকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।