সংযুক্ত আরব আমিরাতে সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিত এশিয়া কাপের উদ্বোধনী ম্যাচে চোট পেয়ে ছিটকে গিয়েছিলেন টাইগার ওপেনার তামিম ইকবাল। এরপর থেকে মাঠের বাইরেই রয়েছেন তিনি।
এদিকে ইনজুরির কারণে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে চলতি সিরিজে খেলতে পারছেন না তামিম। তবে আগামী ২২ নভেম্বর শুরু হতে যাওয়া ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজকে লক্ষ্য করে প্রস্তুতি নিচ্ছেন এ ড্যাশিং ওপেনার। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে চট্টগ্রাম টেস্টের মাধ্যমে ফিরতে পারেন তামিম ইকবাল। মিরপুরে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে এমন আভাসই দিলেন তিনি।
প্রস্তুতি কেমন চলছে। এখন ইনজুরির কী অবস্থা?
এখন পর্যন্ত তেমন গুরুতর সমস্যা হয়নি। মানে অনেক বেশি ব্যথা অনুভব করিনি। তবে ব্যথা কিছুটা আছে, কিছু বিশেষ শট খেলতে গেলে ব্যথা আছে। সেটি অবশ্য থাকবেই কারণ হাতে দুর্বলতা আছে। যতো বেশি আমি স্ট্রেংথের কাজ করতে থাকব এবং যখন পুরোপুরি এই স্ট্রেংথটা এসে যাবে তখন দুর্বলতাটাও কেটে যাবে। তবে ইতিবাচক ব্যাপার হলো ব্যাটিং না করার মতো কোনো ব্যথা আমি অনুভব করছি না।
এখন ম্যাচ খেলার মতো অবস্থায় আছেন কি?
এই মুহূর্তে না। আজকে সম্ভবত তৃতীয় দিন আমি ব্যাটিং করেছি। তবে এখনো পুরো নেট সেশন করিনি। স্পিন খেলা, ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলা, সাথে যখন আপনি ১৩০-১৪০ গতিতে বল খেলবেন সেখানে আসলে অনেক পার্থক্য রয়েছে। আমি জানি না সেখানে আমার হাত কীভাবে রিঅ্যাক্ট করে। তবে এখন পর্যন্ত বিষয়গুলো অনেক ইতিবাচকই লাগছে। আশা করি আগামী তিন দিনের মধ্যে আমি পুরো নেট সেশন করব এবং তখন আরো ভালো বুঝতে পারব যে আমার অবস্থা কোন পর্যায়ে আছে।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টে খেলার সম্ভাবনা কতটুকু?
অনেক কম, অনেক অনেক কম। আমার কাছে মনে হয় আমি পারব। কিন্তু আমি তৈরি নই। আর আমার মনে হয় না ফিজিও আমাকে কোনোভাবে এই ব্যাপারে অনুমতি দিবেন। কারণ মাত্র তিন দিন হয়েছে আমি ব্যাটিং শুরু করেছি। তাও এটিকে সেমি ব্যাটিং বলতে পারি যেটি আমি করছি এখন। সুতরাং যতদিন আমি পুরোপুরিভাবে নেট সেশন শুরু না করব এটি দলের জন্য ভালো হবে না। আমার পক্ষ থেকেও ফিট হিসাবে দাবি করা সম্ভব হবে না টেস্টের জন্য।
সিলেট টেস্ট নিয়ে কিছু বলবেন?
আমার কাছে মনে হয় আমাদের উচিৎ ছিল প্রথম ইনিংসে ভালো ব্যাটিং করা। এতে কোনো সন্দেহ নেই। আমি ওই ড্রেসিংরুমে ছিলাম। সেখানে আমি ১২ বছর ধরে আছি। আমি থাকা অবস্থাতেও এমন পরিস্থিতি অনেক ফেস করেছি। সত্যি কথা বলতে কি আমি এখন বাইরে বসে আলোচনা করব, আমার মতে এটি ভালো হবে না।
হ্যাঁ, আমি হয়তোবা অনেক কিছু দেখেছি, অনেক কিছু ভিন্ন মনে হয়েছে অথবা আমার কাছে মনে হয়েছে যে এখানে আমরা ভালো করতে পারতাম, এখানে খারাপ করতে পারতাম। তবে মন্তব্য করা কিংবা আলোচনা করাটা ঠিক হবে না ১৫ জনের দলটিকে নিয়ে। কারণ আমি এবং সাকিব দলে নেই। তবে আমরা থাকার সময়েও অনেক খারাপ পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছিলাম। তবে আমি বাইরের কেউ না, আমিও দলেরই অংশ। সুতরাং আমার ক্ষেত্রে মন্তব্য করাটা ভালো দেখায় না।
ঢাকাতে ফিরে আসার সম্ভাবনা কতটুকু?
শতভাগ, আমি পুরো শতভাগ নিশ্চিত যে মিরপুরে তারা ফিরে আসবে। সেই ১৫ জনসহ আমি নিজেও নিশ্চিত যে আমরা আমাদের সেরাটাই খেলব। আর দ্বিতীয়ত আমরা এই দলের থেকেও অনেক ভালো দল। এখানে অনেক আলোচনা হচ্ছে, ধরেন আমরা ওয়ানডের মতো টেস্ট সেভাবে খেলতে পারছি না। এটি আসলে একটি ফ্যাক্ট, আর এটি সত্যি। আর আমাকেও এটি স্বীকার করতে হবে। আমার কাছে মনে হয় না আমাদের কোনো টিম মেম্বার এটি কোনো সময় বলেছে যে আমরা অনেক শক্তিশালী টেস্ট দল হয়ে উঠছি।
তবে আমার কাছ থেকে এটাও কেউ নিয়ে যেতে পারবে না যে আমরা ভালো টেস্ট খেলা শুরু করেছি। আমরা এরই মধ্যে বিশ্বের সেরা দুটি টেস্ট দলকে হারিয়েছি। খালি হারানো বলে কথা না। যেভাবে আমরা খেলেছি সেটাও দেখতে হবে। হ্যাঁ, সম্প্রতি ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজটি ভালো যায়নি একেবারেই। তবে আমরা টেস্ট ক্রিকেটে উন্নতি করছি। তবে যতটুকু করা দরকার ছিল এতদিনে এসে এবং যতটুকু গ্রাফটি উপরে ওঠা দরকার ছিল ততটা ওঠেনি। কিন্তু এটা যদি কেউ বলে যে আমরা কিছুই না, কোনো কিছুই করছি না তাহলে আমি কখনোই মানব না।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজে খেলা নিয়ে কী ভাবছেন?
ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি প্রথম টেস্টে খেলার জন্য আমি ফিট থাকব।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে মূল সিরিজ শুরুর আগে দুই দিনের প্রস্তুতি ম্যাচ খেলতে চাইবেন কী?
এটি নির্ভর করে কিছু বিষয়ের ওপর। সাধারণত আপনি দেখবেন যেকোনো ক্রিকেটার ইনজুরি থেকে এসে টেস্ট সিরিজের আগে একটি ম্যাচ খেলতে চায়। সত্যি কথা বলতে কি আমি দ্বিতীয় টেস্ট (জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে) খেলতে সর্বদাই চাই। আজ থেকে তিন-চার সপ্তাহ আগেও আমি এটাই আমার লক্ষ্য ছিল।
আমি চাচ্ছিলাম একটি ম্যাচ খেলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজে যেতে। আমরা সবাই জানি যে, ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজ বেশ কঠিন হবে। তবে প্রস্তুতি ম্যাচের বিষয়টি এমনভাবে আসে যে একজন আমি নিজে প্রস্তুতি ম্যাচের প্রতি বেশি আস্থা রাখি না। আমি বিশ্বাস করি আমার প্রস্তুতির বিষয়ে যেটি আমি নিয়ে থাকি। এখনই আমাকে ছিটকে দেয়া ঠিক হবে না।
আপনি কখনোই জানেন না যে আমি ১৬ তারিখে কি অবস্থায় থাকব। ওই সময়ে যদি আমার কাছে মনে হয় যে, ম্যাচটি খেলা আমার দরকার আমি অবশ্যই খেলব। আর যদি আমার কাছে মনে হয় যে আমাকে অনেক দূর যেতে হবে এবং আমি সঠিক অবস্থায় নেই তাহলে সম্ভবত আমি খেলব না। এটি পুরোপুরি নির্ভর করছে যে আমি ১৬-১৭ তারিখ কী অবস্থায় থাকব তার ওপর।