পাকিস্তানের জয়রথ থামিয়ে দিল নিউজিল্যান্ড। তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের প্রথমটিতে পাকিস্তানকে ৪৭ রানে হারিয়ে এগিয়ে গেল কিউইরা। এ নিয়ে পাকিস্তানের বিপক্ষে টানা ১২ ওয়ানডে জিতল নিউজিল্যান্ড। মানে জয়ের ডজন পূর্ণ হল!
টি-টোয়েন্টি সিরিজে পাকিস্তানের কাছে হোয়াইটওয়াশ হলেও ওয়ানডে সিরিজে দুর্দান্তভাবে ফিরে এসেছে নিউজিল্যান্ড। ট্রেন্ট বোল্টের দুর্দান্ত হ্যাট্রিকের সুবাদে জয় দিয়ে ওয়ানডে সিরিজ শুরু করল কিউইরা।
আবুধাবিতে বুধবার আগে ব্যাট করতে নেমে ৯ উইকেটে ২৬৬ রান করেছিল নিউজিল্যান্ড। জবাবে ১৬ বল বাকি থাকতে ২১৯ রানে অলআউট হয়ে যায় পাকিস্তান।
টস জিতে ব্যাট করতে নেমে নিউজিল্যান্ডের শুরুটা অবশ্য ভাল হয়নি। ৩৬ রানের মধ্যেই ফেরেন দুই ওপেনার জর্জ ওয়ার্কার (১) ও কলিন মানরো (২৯)। দুজনই পাকিস্তানি পেসার শাহিন শাহ আফ্রিদির শিকার।
তিনে নামা অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসনও (২৭) বেশিদূর যেতে পারেননি। ৭৮ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর নিউজিল্যান্ডকে পথ দেখায় চতুর্থ উইকেটে রস টেলর ও টম ল্যাথামের ১৩০ রানের জুটি।
তখন তিনশ রানের স্বপ্নও দেখছিল নিউজিল্যান্ড। কিন্তু টেলর-ল্যাথাম জুটি ভাঙার পরই হঠাৎ এলোমেলো হয়ে যায় কিউইরা।
শাদাব খান চার বলের মধ্যে তুলে নেন ল্যাথাম, হেনরি নিকোলস ও কলিন ডি গ্র্যান্ডহোমের উইকেট। ল্যাথাম ৬৪ বলে ৫ চারে করেন ৬৮ রান। পরের দুজন রানের খাতা খুলতে পারেননি।
পরের ওভারে ইমাদ ওয়াসিমের বলে ফেরেন টেলরও। ১১২ বলে ৫ চারে তিনি করে ৮০ রান। ২ রানের মধ্যে ৪ উইকেট হারিয়ে তিনশর স্বপ্নও শেষ হয়ে যায় সফরকারীদের।
অষ্টম উইকেটে টিম সাউদি ও ইশ সোধির ৪২ রানের জুটিতে শেষ পর্যন্ত আড়াইশ ছাড়ায় নিউজিল্যান্ডের সংগ্রহ। সাউদি ২০ ও সোধি করেন ২৪ রান।
পাকিস্তানের হয়ে শাহিন আফ্রিদি ও শাদাব দুজনই নিয়েছেন ৪টি করে উইকেট, আফ্রিদি ৮ ওভারে দিয়েছেন ৪৬ রান, শাদাব ১০ ওভারে ৩৮।
লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতেই বড় ধাক্কা খায় পাকিস্তান। তিন দিন আগে আরব আমিরাতে পৌঁছে সিরিজে প্রথমবার খেলতে নামা বোল্ট ইনিংসের তৃতীয় ও নিজের দ্বিতীয় ওভারে পরপর তিন বলে ফেরান ফখর জামান, বাবর আজম ও মোহাম্মদ হাফিজকে।
ড্যানি মরিসন ও শেন বন্ডের পর নিউজিল্যান্ডের তৃতীয় বোলার হিসেবে ওয়ানডেতে হ্যাটট্রিকের কীর্তি গড়লেন বোল্ট। সব মিলিয়ে ওয়ানডে ইতিহাসের ৪৭তম হ্যাটট্রিক এটি।
চতুর্থ উইকেটে ৬৩ রানের জুটিতে প্রতিরোধ গড়েছিলেন ইমাম উল হক ও শোয়েব মালিক। এরপরই জোড়া ধাক্কা। পরপর দুই ওভারে ফেরেন ইমাম (৩৪) ও মালিক (৩০)।
খানিক বাদে শাদাবও (৭) ফিরে গেলে পাকিস্তানের স্কোর হয়ে যায় ৬ উইকেটে ৮৫! এরপরই ম্যাচে নিজেদের সেরা জুটিটা পায় পাকিস্তান।
সপ্তম উইকেটে ১৩০ রান যোগ করে পাকিস্তানের আশা বাঁচিয়ে রেখেছিলেন সরফরাজ আহমেদ ও ইমাদ ওয়াসিম। কিন্তু এ জুটি ভাঙার পরই ম্যাচ থেকে একরকম ছিটকে পড়ে তারা।
পাকিস্তান শেষ তিন উইকেট হারিয়েছে স্কোর ২১৯ রেখে। ৬৯ বলে ৬৪ রান করেন সরফরাজ, ৭২ বলে ৫০ রান ইমাদের।
বোল্ট পরে আর কোনো উইকেট পাননি। ৫৪ রানে তার শিকার শুরুর ৩ উইকেট। ৩৬ রানে ৩ উইকেট পেয়েছেন লোকি ফার্গুসন। ডি গ্রান্ডহোম নিয়েছেন ২ উইকেট। ম্যাচসেরা হয়েছেন বোল্ট।