খুলনা টাইগার্সের বিপক্ষে দারুণ এক জয় তুলে নিলো তামিম ইকবালের ফরচুন বরিশাল। ১৮৮ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ডেভিড মালানের ফিফটিতে ৫ উইকেটে জয় তুলে নেয় বরিশাল।
এ জয়ে ১০ ম্যাচে ৮ জয়ে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষে থাকা রংপুর রাইডার্সকে ধরে ফেললো বরিশাল। সমান ১০ পয়েন্ট হলেও রানরেটে পিছিয়ে থাকায় দ্বিতীয় স্থানেই রয়েছে বরিশাল।
তাদের রান রেট ১.০৭০ এবং বরিশালের ১.০৩৩। ১০ ম্যাচ শেষে ৮ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের পঞ্চমস্থানে আছে খুলনা।
বরিশালের বিপক্ষে এ হারে প্লে অফের দৌড়ে শঙ্কায় পড়লো খুলনা টাইগার্স। নিজেদের খেলা ১০ ম্যাচে চার জয়ে ৮ পয়েন্ট নিয়ে পঞ্চম স্থানে রয়েছে খুলনা।
ব্যাট রতে নেমে দুই ওপেনার মেহেদি হাসান মিরাজ ও মোহাম্মদ নাইমের দৃঢ়তায় ৩৩ বলে ৪৭ রানের সূচনা পায় খুলনা। পাওয়ার প্লের শেষ ওভারের তৃতীয় বলে মিরাজকে বোল্ড করে খুলনার উদ্বোধনী জুটি ভাঙ্গেন পেসার এবাদত হোসেন। ১টি চার ও ৩টি ছক্কায় ১৮ বলে ২৯ রান করেন খুলনার অধিনায়ক মিরাজ।
দ্বিতীয় উইকেটে বরিশালের বোলারদের উপর চড়াও হন নাইম ও অ্যালেক্স রস। দু’জনে ২০ বলে ৫২ রানের জুটি গড়েন। নবম ওভারের চতুর্থ বলে ছক্কা মেরে টি-টোয়েন্টিতে ১৫তম হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন নাইম।
এবারের বিপিএলে ২৬ বলে তৃতীয় হাফ-সেঞ্চুরি পাওয়ার পরের ডেলিভারিতে ফাহিম আশরাফের শিকার হন নাইম। ২৭ বলে ৫টি বাউন্ডারি ও ৩টি ওভার বাউন্ডারিতে ৫১ রান করেন নাইম। দলীয় ৯৯ রানে নাইম ফেরার পর বেশিক্ষণ ক্রিজে টিকতে পারেননি রস। ১৫ বলে ২০ রান করে স্পিনার মোহাম্মদ নবির শিকার হন ।
চতুর্থ উইকেটে ২১ বলে ৩৩ রানের জুটিতে খুলনার বড় সংগ্রহের ভিত গড়েন আফিফ ও উইলিয়াম বোসিস্তো। ২টি করে চার-ছক্কায় আফিফ ২৭ বলে ৩২ রানে আউটের পর স্লগ ওভারে ব্যাট হাতে ঝড় তুলেন উইকেটরক্ষক মাহিদুল ইসলাম।
২টি চার ও ৩টি ছক্কায় ১২ বলে মাহিদুলের অনবদ্য ২৭ রানের সুবাদে ২০ ওভারে ৫ উইকেটে ১৮৭ রানের বড় সংগ্রহ পায় খুলনা। ১৬ বলে ২টি চারে ২০ রানে অপরাজিত ছিলেন বোসিস্তো।
ফাহিম ২টি, জেমস ফুলার-নবি ও এবাদত ১টি করে উইকেট নেন।
১৮৮ রানের টার্গেটে ইনিংস শুরু করে দ্বিতীয় ওভারেই ধাক্কা খায় বরিশাল। খুলনার পেসার আবু হায়দারের বলে এলবিডব্লিউ হবার আগে ১টি করে চার-ছক্কায় ৭ বলে ১১ রান করেন তাওহিদ হৃদয়।
দলীয় ১১ রানে হৃদয় ফেরার পর খুলনার বোলারদের উপর আধিপত্য বিস্তার করে খেলেছেন অধিনায়ক তামিম ইকবাল ও ডেভিড মালান। পাওয়ার প্লেতে এই জুটি ৫৬ রান সংগ্রহ করেছে । ১১তম ওভারে দলের রান ১শতে পৌঁছে দিয়ে সাজঘরে ফিরেন তামিম।
১টি চার ও ২টি ছক্কায় ২৫ বলে ২৭ রান করে পেসার সালমান ইরশাদের শিকার হন তামিম। মালানের সাথে দ্বিতীয় উইকেটে ৫৬ বলে ৯১ রান যোগ করেন তামিম। এই জুুটিতে ২৯ বলে টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের ৬৬তম অর্ধশতক করেন মালান।
হাফ-সেঞ্চুরির ইনিংস বড় করার চেষ্টা করে ৬৩ রানে থামেন মালান। আফিফের শিকার হবার আগে ৮টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৩৭ বলে ৬৩ রান করেন তিনি।
১৩তম ওভারে দলীয় ১২১ রানে মালান ফেরার পর বরিশালের রানের গতি ধরে রাখেন দুই অভিজ্ঞ ব্যাটার মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। এতে ১৬তম ওভার শেষে বরিশালের রান গিয়ে দাঁড়ায় ৩ উইকেটে ১৫১ রান। শেষ ৪ ওভারে ৩৭ রান দরকার ছিল বরিশালের।
কিন্তু ১৭তম ওভারের তৃতীয় ও চতুর্থ বলে আউট হন মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহ। ১টি চার ও ২টি ছক্কায় ১৩ বলে ২৪ রানে রান আউট হন মাহমুদুল্লাহ। ২টি ছক্কায় ১৭ বলে ২৪ রান করেন মুশফিক।
পরপর দুই বলে দলের সেরা দুই ব্যাটার বিদায় নিলে জয়ের জন্য ২১ বলে ৩৬ রান দরকার ছিল বরিশালের। ষষ্ঠ উইকেটে ১৬ বলে অবিচ্ছিন্ন ৩৬ রান যোগ করে ৫ বল বাকি থাকতে বরিশালের জয় নিশ্চিত করেন দুই বিদেশী রিক্রুট ফাহিম ও নবি।
৬ বলে ১টি চার ও ২টি ছক্কায় ফাহিম ১৮ এবং নবি ১টি ছক্কায় ১০ বলে ১৫ রানে অপরাজিত থাকেন। আবু হায়দার ২টি, সালমান ও আফিফ ১টি করে উইকেট নিয়েছেন। ম্যাচ সেরা হয়েছেন মালান।