তাসকিনের রেকর্ড বোলিংয়ে ঢাকাকে হারিয়ে রাজশাহীর প্রথম জয়

স্পোর্টসমেইল২৪ স্পোর্টসমেইল২৪ প্রকাশিত: ০৮:৩৫ পিএম, ০২ জানুয়ারি ২০২৫
তাসকিনের রেকর্ড বোলিংয়ে ঢাকাকে হারিয়ে রাজশাহীর প্রথম জয়

পেসার তাসকিন আহমেদের রেকর্ড বোলিংয়ে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) ক্রিকেটের ১১তম আসরে প্রথম জয়ের দেখা পেল দুর্বার রাজশাহী। টুর্নামেন্টের পঞ্চম ও নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে ঢাকা ক্যাপিটালসকে ৭ উইকেটে হারিয়ে দিয়েছে রাজশাহী।

এ ম্যাচে বিপিএলের ইতিহাসে প্রথম বোলার হিসেবে ৭ উইকেট নিয়ে রেকর্ড গড়েন তাসকিন। ৪ ওভারে ১৯ রানে ৭ উইকেট নিয়ে ম্যাচ সেরা হন তাসকিন।

নিজেদের প্রথম ম্যাচে ফরচুন বরিশালের কাছে ৪ উইকেটে হেরেছিল রাজশাহী। আর রংপুর রাইডার্সের কাছে ৪০ রানে হেরে বিপিএল শুরু করেছিলো ঢাকা।

মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দিনের প্রথম ম্যাচে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই দুর্বার রাজশাহীর পেসার তাসকিনের তোপের মুখে পড়ে ঢাকা ক্যাপিটালস।

তাসকিনের দারুণ এক ডেলিভারিতে ঢাকার উইকেটরক্ষক লিটন দাসকে শূন্যতে স্লিপে ক্যাচ তুলে দেন। আরেক ওপেনার তানজিদ ৯ রানে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন।

দলীয় ১৪ রানে ২ ওপেনারের বিদায়ের পর পাওয়ার প্লের সুবিধা কাজে লাগাতে রাজশাহীর বোলারদের উপর চড়াও হন ঢাকার দুই ব্যাটার স্টিফেন এসকিনাজি ও শাহাদাত হোসেন। দু’জনের মারমুখী ব্যাটিংয়ে পাওয়ার প্লেতে ২ উইকেটে ৫৬ রান পায় ঢাকা।

পাওয়ার প্লে শেষ হবার পরও ঢাকার রানের চাকা সচল রাখে এসকিনাজি ও শাহাদাত। তাদের দারুণ জুটিতে ১১ ওভারে ৯০ রানের পৌঁছে যায় ঢাকা। ঐ ওভারের শেষ বলে এসকিনাজিকে বোল্ড করে রাজশাহীকে ব্রেক-থ্রু এনে দেন স্পিনার হাসান মুরাদ।

তৃতীয় উইকেটে ৪৭ বলে ৭৯ রানের জুটি গড়েন এসকিনাজি ও শাহাদাত। ৬টি চার ও ২টি ছক্কায় ২৯ বলে ৪৬ রান করেন এসকিনাজি।

এরপর ক্রিজে এসেই ব্যাট হাতে ঝড় তুলেন ঢাকার অধিনায়ক থিসারা পেরেরা। দু’বার ক্যাচ দিয়ে জীবন পেয়ে ১টি চার ও ২টি ছক্কায় ৯ বলে ২১ রান করেন পেরেরা।

দলীয় ১২৯ রানে পেরেরা ফেরার পর ৪০ বলে টি-টোয়েন্টিতে দ্বিতীয় হাফ-সেঞ্চুরি করেন শাহাদাত। হাফ-সেঞ্চুরি পাবার পরের বলে তাসকিনের তৃতীয় শিকার হন শাহাদাত। ৪১ বলে ৭টি চারে নিজের ইনিংস সাজান শাহাদাত।

লগ ওভারে মারমুখী ব্যাটিংয়ে ঢাকার বড় সংগ্রহের পথ তৈরি করেন শুভাম রানজানে ও আলাউদ্দিন বাবু। সপ্তম উইকেটে তাদের ১৫ বলে ঝড়ো ৩৩ রানের সুবাদে ১৯ ওভার শেষে ৬ উইকেটে ১৭২ রান পায় ঢাকা।

শেষ ওভারে বোলিং আক্রমণে আসেন প্রথম ৩ ওভারে ১৭ রানে ৪ উইকেট নেওয়া তাসকিন। শেষ ওভারে মাত্র ২ রান দিয়ে ৩ উইকেট তুলে নেন তাসকিন। ফলে ইনিংস শেষে তাসকিনের বোলিং ফিগার দাঁড়ায় ৪ ওভারে ১৯ রানে ৭ উইকেট।

বিপিএলের ইতিহাসে প্রথম বোলার হিসেবে ইনিংসে ৭ উইকেট নেয়ার রেকর্ড গড়লেন তাসকিন। ১৭৩ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে এটি তাসকিনের সেরা বোলিং ফিগার।

শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৭৪ রানের সংগ্রহ পায় ঢাকা। রানজানে ১২ বলে ৩টি চার ও ১টি ছক্কায় ২৪ ও বাবু ৯ বলে ১টি করে চার-ছক্কায় ১৩ রান করেন।

১৭৫ রানের টার্গেটে প্রথম ওভারের তৃতীয় ও চতুর্থ বলে ১টি করে চার-ছক্কা মেরে আউট হন দুর্বার রাজশাহী ওপেনার মোহাম্মদ হারিস। ৫ বলে ১২ রান করে পেসার মুস্তাফিজুর রহমানের শিকার হন তিনি।

উইকেট সেট হতে গিয়ে ৮ বল খেলেও রানের খাতা খুলতে পারেননি রাজশাহীর আরেক ওপেনার জিশান আলম। ৩১ রানের ২ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে রাজশাহীর। দলকে লড়াইয়ে ফেরাতে তৃতীয় উইকেটে জুটি গড়ার চেষ্টায় সফল হয়েছেন অধিনায়ক এনামুল হক ও ইয়াসির আলি। ৩৩ বলে ৪২ রানের জুটি গড়েন তারা।

১টি চার ও ২টি ছক্কায় ২০ বলে ২২ রান করা ইয়াসিরকে শিকার করে ঢাকাকে ব্রেক-থ্রু এনে দেন আলাউদ্দিন বাবু। দলীয় ৭৩ রানে ইয়াসির আউটের পর রাজশাহীর জয়ের পথ তৈরি করেন এনামুল ও রায়ান বার্ল।

দু’জনের জুটিতে ১৬ ওভারে ১৪৪ রানে পৌঁছে যায় রাজশাহী। ছক্কা মেরে ৩৫ বলে টি-টোয়েন্টিতে ১৭তম হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন এনামুল।

শেষ পর্যন্ত ১৯তম ওভারের প্রথম বলে ছক্কা মেরে রাজশাহীর জয় নিশ্চিত করেন এনামুল। ৯টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৪৬ বলে ৭৩ রানে অপরাজিত থাকেন এনামুল। বার্ল ৩৩ বলে ৫টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৫৫ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলেন। মোস্তাফিজ-মুকিদুল ও বাবু ১টি করে উইকেট নেন।


বিষয়ঃ

শেয়ার করুন :