বাংলাদেশের ক্রিকেটে স্বল্প সময়ে দ্যুতি ছড়িয়েছেন এমন ক্রিকেটারদের মধ্যে অন্যতম মোস্তাফিজ রহমান। তার বোলিং তোপে হতভম্ব হয়েছে বিশ্বের বাঘা বাঘা ব্যাটসম্যান। বিশ্বজুড়ে খ্যাতি পেয়েছেন 'দ্য ফিজ' নামে। পেয়েছে কাটার মাস্টার খেতাবও। আজ (৬ সেপ্টেম্বর) মোস্তাফিজের জন্মদিন। ১৯৯৫ সালের এই দিনে সাতক্ষীরায় জন্মেছিলেন বাংলাদেশ ক্রিকেটের এই বোলিং বিস্ময়।
জন্মদিনে মুস্তাফিজকে প্রশ্ন করা হয় বিশেষ এই দিনে আপনার নিজের কী ইচ্ছে এবং ভক্তদের উদ্দেশ্যে কী বলবেন? তিনি যে উত্তর দিলেন তা প্রত্যাশিতই ছিলো। বরাবরের মতো অনুচ্চাভিলাসী। ‘তেমন কোন ইচ্ছা নেই, কিছুই চাওয়ারও নেই। গত বছরটা যেমন গিয়েছে, সামনের বছরগুলোও তেমন গেলেই খুশি।
আর ভক্তদের উদ্দেশ্যে বলবো, আপনাদের ভালবাসা নিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে চাই। আপনারা দোয়া করবেন যেন সুস্থ থাকতে পারি এবং দেশের হয়ে আরো ভালো খেলা উপহার দিতে পারি।’
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে মোস্তাফিজের অভিষেক হয়েছিলো যুবরাজের মতো। তার অভিষেক টি-টোয়েন্টি ম্যাচটি যেন আজও চোখে ভাসে। দিনটি ছিল ২০১৫ সালের ২৪ এপ্রিল। মিরপুরে সফরকারী পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের একমাত্র টি টোয়েন্টিতে নিজের প্রথম শিকারে পরিণত করেছিলেন ক্রিকেট বিশ্বের ত্রাস বুমবুম শহিদ আফ্রিদীকে। এখানেই থামেননি। ফিরিয়েছিলেন আরেক বিধ্বংসি ব্যাটসম্যান শোয়েব মালিককেও। এবং তার অভাবনীয় এমন বোলিংয়ে দিন শেষে ম্যাচটি নিজেদের করে নিল লাল সবুজের দল।
ফিজের ওয়ানডে অভিষেক ছিলো আরও মহিমান্বিত। ওই বছরেরই ১৮ জুন, ভেন্যুও ওই মিরপুরের শের ই বাংলা। কাটার ভেলকিতে সফরকারী ভারতের ৫ ব্যাটসম্যানকে ক্রিজছাড়া করলেন। তাও যে সে কেউ নন; রোহিত শর্মা, আজিঙ্কা রাহানে ও সুরেশ রেইনার মতো টর্নেডো ব্যাটসম্যানদের। তাতে করে কাজও হলো বিস্তর। শক্তিশালী ভারতের বিপক্ষে ৭৯ রানের জয়ের বর্নিল রঙে রাঙা হলো পুরো দেশ।
অভিষেকের পর পুরো সময়টা এমন উড়ন্তই কাটছিলো এই বাঁহাতি পেসারের। ক্রিকেট বিশ্বে এমন ব্যাটসম্যান খুব কমই খুঁজে পাওয়া যাবে যারা তার ভয়ে থরথর ছিলেন না। কিন্তু, হঠাৎই যেন সেই উড়ন্ত ছন্দের পতন। ক্যারিয়ারের এক বছর না পেরুতেই ইনজুরি পেয়ে বসলো তাকে। যার শুরুটা হয়েছিলো ২০১৬ সালে আইপিএল খেলেতে গিয়ে। কিন্তু তখন মাথাচাড়া দিয়ে না উঠলেও উঠলো ওইবছরের জুলাইয়ে ইংল্যান্ডে কাউন্টি খেলতে গিয়ে। কাঁধে ব্যথা পেয়ে প্রথমবারের মতো বড় ধরনের ইনজুরিতে পড়েন এই কাটার স্পেশালিস্ট। অস্ত্রোপচার হওয়ায় চার মাসেরও বেশি সময় তাকে থাকতে হয়েছে মাঠের বাইরে। ফলে ক্যারিয়ারের প্রথম বিপিএলে তার মাঠে নামা হয়নি। ডায়নামাইটসের ডাগ আউটেই তার সময় কেটেছে। এরপর আরও তিনবার ইনজুরিতে আক্রান্ত হয়েছেন। কিন্তু দমে যাননি। বরং এখনও তার বোলিং তোপ অব্যাহত আছে এবং আগামিতেও থাকবে। শুভ জন্মদিন মোস্তাফিজ!