দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর প্রথমবারের মতো মন্ত্রী হচ্ছেন নাজমুল হাসান পাপন। মন্ত্রী সভার সদস্য হিসেবে নাম ঘোষণার পর থেকে নতুন আলোচনা, তাহলে কি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতির পদ ছাড়ছেন তিনি, নাকি মন্ত্রীত্বের পাশাপাশি দেশের ক্রিকেটের সর্বোচ্চ পদেও দায়িত্ব পালন করবেন।
বিভিন্ন সময় অসুস্থ থাকায় চিকিৎসকের পরামর্শ মতে, ক্রিকেট থেকে দূরে থাকার কথা জানিয়েছিলেন নাজমুল হাসান পাপন। তবে দেশের ক্রিকেটকে ভালোবাসায় দূরে সরতে পারেননি তিনি। তবে এবার মন্ত্রী হওয়ায় বিসিবি ছাড়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
বিষয়টি এখনো চূড়ান্ত না হলেও আলোচনায় যুক্ত হয়েছে সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা ও বর্তমান অধিনায়ক সাবিক আল হাসানের নাম। মাশরাফি দ্বিতীয় বারের মতো এবং সাকিব প্রথম বারের মতো সংসদ সদস্যও নির্বাচিত হয়েছেন।
অনেকের মতে পাপন দায়িত্ব ছেড়ে দিলে বিসিবির সভাপতি হিসেবে মাশরাফি আসলে ভালো হবে। দেশের ক্রিকেট আরও এগিয়ে যাবে। এর আগে সাকিব নিজেও মন্ত্রীর চেয়ে বিসিবির সভাপতির হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। তবে চাইলেন কি মাশরাফি কিংবা সাকিব বিসিবির সভাপতি হতে পারবেন? কি আছে বিসিবির বিধিতে?
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড-এর প্রধান নির্বাহী (সিইও) নিজামউদ্দিন সুজন জানিয়েছেন, এখন আর আগের মতো চাইলেই যে কাউকে বিসিবির সভাপতি হিসেবে নিয়োগ সম্ভব নয়। বিসিবির সভাপতি হতে হলে তাকে অবশ্যই নির্বাচিত সদস্য হতে হবে।
নিজামউদ্দিন সুজন বলেন, “এখন বোর্ডের যে গঠনতন্ত্র আছে, এখানে ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি হতে হলে একজন নির্বাচিত সভাপতি হতে হবে। যেই বিসিবির সভাপতি হোক, বিসিবির গঠনতন্ত্র অনুসারে তাকে প্রথমে কাউান্সলর হতে হবে এবং পরবর্তীতে ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক হতে হবে। পরিচালনা বোর্ডের সদস্যরা তখন সভাপতি নির্বাচন করবেন। বিসিবির গঠনতন্ত্র আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) সাথে সম্পৃক্ত।”
“আমাদের (বিসিবির) আগে একটা প্রক্রিয়া ছিল যে, সরকার থেকে একজন প্রতিনিধি ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি হবেন, সেই বিষয়টা এখন গঠনতন্ত্রে নেই। এই বিষয়টা এখন আর প্রযোজ্য নয়। এখন নির্বাচনী প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সভাপতি হতে হবে, যদি সেই পদটি খালি হয়।”
বিসিবি সিইও-এর কথা এটা পরিস্কার যে, আপাতত চাইলেও মাশরাফি কিংবা সাকিবকে সভাপতি পদে নিয়োগ দেওয়া সম্ভব না। দেশের ক্রিকেটের সর্বোচ্চ পদে বসতে হলে মাশরাফি বা সাকিবকে প্রথমে বোর্ড পরিচালক পদে নির্বাচন করে পাস করতে হবে। এরপর বাকি পরিচালকদের মধ্য থেকে সকলের সম্মতীতে বোর্ড সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হতে হবে।
সর্বশেষ ২০২১ সালে টানা চতুর্থ মেয়াদে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নেন নাজমুল হাসান পাপন। যার মেয়াদ শেষ হবে ২০২৫ সালের অক্টোবরে। এর আগে নাজমুল হাসান বোর্ড সভাপতির পদ ছাড়লে নির্বাচিত পরিচালকদের মধ্য থেকেই কাউকে বেছে নিতে হবে।
তবে এ সময়ের মধ্যে মাশরাফ বা সাকিবের কোনভাবেই বোর্ড সভাপতির হওয়ার সম্ভাবনা নেই। বিসিবির সভাপতির পদে বসতে হলে তাদেরকে ২০২৫ সালের অক্টোবর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। শুধু তাই নয়, কাউন্সিলর হয়ে নির্বাচনও করতে হবে সাবেক অধিনায়কদের।