শখের বসে অনেকে খাঁচায় পাখি পোষেন। মজা করে পাখি পোষে হয়তো আনন্দ পাওয়া গেলেও পাখির মনে অবস্থা ক’জন বোঝে। অন্য কেউ না বুঝলেও এ কষ্টটা হয়তো একটু হলেও টের পেয়েছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক মোহাম্মদ আশরাফুল। তিনি খাঁচায় বন্দি বা কারাগারে বন্দিও ছিলেন না। খোলা আকাশের নিচে থেকে এ এক অদৃশ্য খাঁচায় বন্দি ছিলেন তিনি। তবে আজ (১৩ আগস্ট, সোমবার) থেকে তিনি মুক্ত।
এ দিনটির অপেক্ষায় ছিলেন মোহাম্মদ আশরাফুল। আজ ১৩ আগস্ট শেষ হচ্ছে তার পাঁচ বছরের নিষেধাজ্ঞা। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরতে আর কোনো বাধা রইলো না। আবারও হয়তো জাতীয় দলে এবং বিপিএলে খেলতে দেখা যাবে তাকে।
মোহাম্মদ আশরাফুল এখন লন্ডনে। ফিটনেস নিয়ে কাজ করছেন সেখানে। প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তার লক্ষ্য ২০১৯ বিশ্বকাপে খেলা। আশরাফুলের বয়স এখন ৩৪। তবে কি আশরাফুলের ইচ্ছা পূরণ হবে? প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু অবশ্য মনে করেন, বয়স কোনো বাধা নয়। ফিটনেসই গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি বলেন, আশরাফুল অনেকদিন ধরে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নেই। আগে ঘরোয়া ক্রিকেটে সব ফরম্যাটে তাকে খেলতে হবে। তার ফিটনেস আন্তর্জাতিক পর্যায়ের জন্য যথাযথ কিনা, সেটা আগে দেখতে হবে। তাকে কোন ফরম্যাটে আমরা দেখতে চাই, সেটাই আগে ভাববার বিষয়। তাকে নিয়ে আমরা এখনও তেমন কোনো চিন্তা করছি না। সামনে ঘরোয়া মৌসুমে দেখব। এরপর চিন্তা করব।
ইংল্যান্ড থেকে এক ভিডিও বার্তায় আশরাফুল জানান জাতীয় দলে হয়ে খেলার আশা তিনি ছাড়েননি। বলেন, সর্বশেষ পাঁচ বছর কখনই মনে হয়নি যে আমি ফিরতে পারব না। কখনই বিশ্বাসের ঘাটতি হয়নি। সবসময় বিশ্বাস ছিল ফিরব। গত মৌসুমে ঢাকা লিগে পাঁচটি সেঞ্চুরি করেছিলাম। এবার প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট দিয়ে ঘরোয়া ক্রিকেট শুরু করব। যদি ভালো করতে পারি, তাহলে আবার বাংলাদেশ দলের হয়ে খেলার যে স্বপ্ন রয়েছে সেটা পূরণ হবে। জাতীয় দলে ফিরতে পারলে সেটাই হবে আমার সবচেয়ে বড় পাওয়া।
২০১৩ সালে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) ম্যাচ পাতানো ও স্পট-ফিক্সিংয়ের সঙ্গে জড়িত থাকায় তিনি নিষিদ্ধ হয়েছিলেন পাঁচ বছর। ২০১৬ সালের ১৩ আগস্ট ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলার ছাড়পত্র পান আশরাফুল। ফিক্সিংয়ের দায়ে ২০১৪ সালে বিপিএলের দুর্নীতি দমন ট্রাইব্যুনাল আশরাফুলকে আট বছর নিষিদ্ধ করার পাশাপাশি ১০ লাখ টাকা জরিমানা করেছিল। পরে শৃঙ্খলা কমিটি নিষেধাজ্ঞা কমিয়ে আনে পাঁচ বছরে। শাস্তি শুরু হয় ২০১৩ সালের ১৩ আগস্ট।
গত মৌসুমে ঢাকা প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগে পাঁচটি সেঞ্চুরি করেছিলেন আশরাফুল। ঘরোয়া ক্রিকেটে এই কৃতিত্ব নেই আর কারোর। গত মৌসুমে আশরাফুলের পাঁচ সেঞ্চুরির পর অনেকেই তার জাতীয় দলে ফেরার ব্যাপারে আশাবাদী হয়েছেন।