মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ওয়ানডে ফরম্যাটে ভারতের বিপক্ষে প্রথম জয়ের দেখা পেয়েছে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল। স্বল্প রানের পূঁজি নিয়েও ইতিহাস গড়া এ জয়ে বোলিং বৈচিত্র্যকে কৃতিত্ব দিয়েছেন দলের অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি। তিনি বলেন, “আমাদের বোলিং দুর্দান্ত হয়েছে, সাথে ফিল্ডিংও।”
ওয়ানডে ফরম্যাটে আজকের ম্যাচের আগে ভারতের বিপক্ষে আরও পাঁচবার মুখোমুখি হয়েছিল বাংলাদেশের মেয়েরা। তবে সবগুলোতেই হারের স্বাদ পেয়েছে। ঘরের মাঠে টি-টোয়েন্টি সিরিজ হারলেও সিরিজের প্রথম ওয়ানডে ম্যাচেই দারুণ জয় তুলে নিয়েছে জ্যোতিরা।
বৃষ্টির কারণে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের প্রথমটি ৪৪ ওভারে নামিয়ে আনা হয়। প্রথমে ব্যাট করে ১৫২ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। জবাবে বৃষ্টি আইনে ৪৪ ওভারে ১৫৪ রানের টার্গেট পায় ভারত।
ভারতের শক্তিশালী ব্যাটিং লাইন আপের ১৫৪ রান সহজ থাকলেও বল হাতে জ্বলে উঠে বাংলাদেশের বোলাররা। মারুফা আক্তার শিকার করেছেন ক্যারিয়ার সেরা ৪ উইকেট। এছাড়া রাবেয়া খান নিয়েছেন ৩টি।
নিজের সংগ্রহ নিয়ে ম্যাচের পর অধিনায়ক জ্যোতি বলেন, “আমরা ভেবেছিলাম ৩০ রান কম হয়েছে। মিডল অর্ডার এবং লোয়ার অর্ডারের ব্যাটিং সহায়ক হয়েছে। তবে আমরা ভারতকে ১২০ রানের মধ্যে আউট করতে চেয়েছিলাম। আমাদের বোলিং দুর্দান্ত হয়েছে, সাথে ফিল্ডিংও; আমরা গর্বিত।”
বোলিংয়ে নিজেদের পরিকল্পনা নিয়ে তিনি বলেন, “আমাদের পরিকল্পনা ছিল, দ্রুত উইকেট শিকার করা। আমরা শুধু আমাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে চেয়েছিলাম। আমি খুব খুশি, আমাদের কাছে সব ধরনের বোলার আছে। মারুফা খুব মেধাবী ও তরুণ। সে আমার কাজ সহজ করে দেয়। সে খুব বেশি চিন্তা করে না এবং পরিকল্পনা অনুযায়ী বোলিং করে।”
মিরপুরের মাঠে স্পিনাররা ভালো করলেও ভারতকে শুরুতে চাপে রাখেন পেসার মারুফা আক্তারই। ২৯ রানে ৪ উইকেট নিয়ে ক্যারিয়ার সেরা বোলিং করে ম্যাচ সেরা হন তিনি।
ম্যাচ সেরা পুরস্কার নেওয়ার সময় মারুফা বলেন, “প্রথমত, এ কন্ডিশনে আমাদের ব্যাটাররা ভালো করেছে। আমার লক্ষ্য ছিল ভালো লেন্থে বল করে প্রতিপক্ষকে চাপে রাখা। যেন দলের উপকারে আসে এমন কিছু করতে পারি।”
তিনি আরও বলেন, “যেহেতু নতুন বলে শুরুতে ভালো করেছি, এ জন্য পুরোনো বলে ভালো করে শেষ করার দায়িত্ব আমার উপর ছিল। দলের সব সিনিয়ররা আমাকে সমর্থন যোগায় এবং ভালোবাসে, হয়তো সে জনই আজ ভালো করেছি আমি।”
অন্যদিকে বোলিংয়ে অতিরিক্ত ২০ রান দেওয়ার জন্য হতাশ ভারতের অধিনায়ক হারমানপ্রীত কৌর। এটিই খেলার চিত্র পাল্টে দিয়েছে বলে মনে করেন তিনি।
ম্যাচ শেষে হরমানপ্রীত বলেন, “আমরা অন্তত ২০ রান অতিরিক্ত দিয়েছি। আমরা অনেক ঢিলেঢালা বল করেছি এবং জায়গামত বোলিং করতে পারিনি। ব্যাটিং বিভাগেও কেউ দায়িত্ব নিতে পারেনি।”
ইনিংসের মাঝ ওভারে ৩০ রানে ৩ উইকেট নিয়ে ভারতের কাজকে কঠিন করে তুলেন লেগস্পিনার রাবেয়া খান। লেগ স্পিনের বিপক্ষে ভারতীয় নারী দলের দুর্বলতাগুলো ফুটে উঠে। কিন্তু লেগ স্পিনের বিপক্ষে ব্যাটারদের দুর্বলতা অস্বীকার করে কৌর জানান, স্কোরবোর্ডকে সচল রাখতে পারেননি তারা।
তিনি বলেন, “না, লেগ স্পিনারদের বিপক্ষে আমরা দুর্বল নই। কিন্তু তারা সত্যিই ভালো করেছে। আমাদের স্ট্রাইক রোটেটে মনোযোগী হতে হবে। আমরা ওয়ানডেতে ভালো করেছি।”