বিশ্বকাপের মতো বড় মঞ্চে স্পিনাররা যাতে কাঙিক্ষত উইকেট পেতে বা সফল হতে পারে সে লক্ষ্যেই উন্নতির জন্য বৈচিত্র্য নিয়ে কাজ করেছেন বাংলাদেশের স্পিন কোচ রঙ্গনা হেরাথ। টাইগারদের এ কোচ জানালেন, বৈচিত্র্য এবং কৌশল নিয়ে কাজ করেছেন। যদি পিচ থেকে সহায়তা না পাওয়া যায় তাহলে এগুলো কাজে লাগাতে হবে।
সাধারণত ঘরের মাঠে সিরিজে সব সময়ই নিজেদের পছন্দের উইকেট পেয়ে থাকেন বাংলাদেশের স্পিনাররা। কিন্তু বিশ্বকাপে বোলারদের চেয়ে ব্যাটারদের জন্য সুবিধাজনক উইকেট তৈরি করে থাকে আয়োজকরা।
আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজকে সামনে রেখে মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুশীলন ঘাম ঝড়াচ্ছে বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। মঙ্গলবার (৩০ মে) সেখানে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন হেরাথ।
তিনি বলেন, “আমি সব সময় মনে করি স্পিনারদের জন্য যখন কন্ডিশন কঠিন হয়ে যায় তখন চ্যালেঞ্জিং হয়ে পড়ে। বিশ্বকাপে যাওয়ার আগে আমরা প্রস্তুত হচ্ছি। এটি প্রস্তুতির অংশ। আমরা বৈচিত্র্য এবং কৌশল নিয়ে কাজ করেছি। আপনি যদি পিচ থেকে সহায়তা না পান তাহলে আমাদের এগুলো কাজে লাগাতে হবে।”
হেরাথ বলেন, “অ্যাঙ্গেল তৈরি করা, ওভার দ্য উইকেটে-রাউন্ড দ্য উইকেট বোলিং করা, পেস বোলিংয়ে বৈচিত্র্যের মতো অনেক ধরনের বৈচিত্র্যময় বোলিং রয়েছে। ক্রস সীম, ক্যারাম বল নাম হয়। আমরা সেগুলো নিয়ে কাজ করছি। আমাদের এগুলো প্রায়ই করতে হবে।”
ঘরোয়া ক্রিকেটে স্পিনাররা এসব বৈচিত্র্যগুলো ব্যবহার করবে এবং দক্ষতা বাড়াবে, এমনটাই দেখতে চান হেরাথ। বলেন, “দলের ছেলেরা শিখতে আগ্রহী। আমি খুব খুশি। ক্লাব বা দলে ফিরলে নিজেদের কাজগুলো চালিয়ে যাবে তারা।”
বাংলাদেশের স্পিন সম্পদ দেখে উচ্ছ্বসিত শ্রীলঙ্কার সাবেক স্পিনার হেরাথ। তবে পাইপলাইনে লেগ স্পিনারদের ঘাটতির কারণে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে টিকে থাকতে দক্ষতা বাড়াতে তাদের সাহায্য করতে চান তিনি।
দেরিতে হলেও বাংলাদেশ বেশ কিছু লেগ স্পিনার পেয়েছে। তবে কেউই নিজেদের জায়গা পাকাপোক্ত করতে পারেনি। এখন রিশাদ হোসেনকে নিয়ে চেষ্টা করছে টাইগাররা। হেরাথের মতে, ভালো অস্ত্র হতে পারেন রিসাদ।
হেরাথ বলেন, “আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে শেষ ম্যাচ খেলেছে রিশাদ। আরেকজন বাঁ-হাতি স্পিনার এবং বিপ্লব আছে। এ মুহূর্তে আমাদের স্পিন সম্পদ আছে। আমরা তাদের সেরাটা খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি। সুযোগ পেলে তারা আরও আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠবে।”
একই সাথে হেরাথ চান, নাজমুল হোসেন শান্ত ও তাওহিদ হৃদয়দের মতো ব্যাটাররা নিয়মিত কিছু ওভার বোলিং করুক, যাতে বোলিংয়ে বিকল্প তৈরি হয়।
তিনি বলেন, “যদি শান্তর মতো ব্যাটাররা কিছু ওভার বল করতে পারে, তাহলে বোলিং দলের জন্য বিকল্প তৈরি হবে। যখন বোলিংয়ে আরও বিকল্প থাকে, তখন আপনার সঠিক কম্বিনেশন থাকে। আমি সব সময় হৃদয়, শান্তকে বোলিংয়ে দেখতে পছন্দ করি।”
যদিও বাংলাদেশ সব সময় স্পিন নির্ভর দল, তথাপি বিগত বেশ কিছু দিন যাবত দেশের পেস বোলিং ইউনিটের উত্থানটা চোখে পড়ার মতো ছিল। হেরাথ বলেন, “যখন আপনার সঠিক বোলিং ইউনিট থাকে তখন আপনার কাছে পেসার ও স্পিনাররা থাকে। এটিই একটি সঠিক বোলিং ইউনিট। এটি নিয়েই আমাদের কাজ করতে হবে। আমরা সেরা বোলিং ইউনিট পেতে চেষ্টা করছি।”
তবে পেসারদের উত্থানে স্পিনারদের কাজ সহজ হবে -এমনটা মনে করেন না হেরাথ। বলেন, “এটি সহজ কাজ বা অন্য কিছু নয়। এসব কিছুই দলের। যদি কেউ ভালো করে, আমাদের সব কিছুর প্রশংসা করা দরকার। যদি কেউ ভালো না করে, তাহলে আমাদের খুঁজে বের করতে হবে কোথায় উন্নতি করতে হবে। আমরা একটি দল হিসেবে উন্নতি করার চেষ্টা করছি।”
প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহকে নিয়েও কথা বলেছেন হেরাথ। হাথুরুর অধীনে শ্রীলঙ্কার হয়ে খেলা হেরাথ বলেন, “তিনি (হাথুরু) একজন যোদ্ধা। তবে বাংলাদেশের মিডিয়ায় প্রায়ই ট্যাগ করে তার নামে ‘কঠোর প্রধান শিক্ষক’ শব্দটি ব্যবহার করা হয়। কিন্তু এটি আদর্শ বিশেষণ নয়।”
হেরাথ আরও বলেন, “আমি জানি না কিভাবে এ বিষয়গুলো বিবেচনা করা হয় (কঠোর প্রধান শিক্ষক)। আপনি যখন কঠোর পরিশ্রম করেন এবং আপনার লক্ষ্য যখন থাকে প্রতিযোগিতামূলক হয়ে ওঠা, আমি মনে করি না সে কঠোর। সব সময় একজন যোদ্ধা হিসেবে আছে সে। আমি এমন মনোভাব পছন্দ করি।”